শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: ভুল বোঝাবুঝি কারণে বান্দরবান সীমান্তে বিজিবির সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষীদের গোলাগুলি হয়েছিল এবং তার অবসান ঘটেছে বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তার পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীও রোববার বলেছেন, প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এগিয়ে যাবে।
গত বুধবার রাতে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিপির গুলিতে এক বিজিবি সদস্য নিহত হওয়ার পর নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে উত্তেজনা চলছিল। এনিয়ে ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে দুদফা তলবের পর শনিবার মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ নিহত নায়েক মিজানুর রহমানের লাশ ফেরত দেয়ার পর উত্তেজনার আপাত প্রশমন ঘটে। রোববার কক্সবাজার হাসপাতালে মিজানের ময়নাতদন্ত হয়। সোমবার লাশ তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারে পাঠানো হবে বলে বিজিবি জানিয়েছে।
সীমান্তে গোলাগুলির ব্ষিয়ে রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আসাদুজ্জামান বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে বলে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। গত বুধবার রাতে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বিজিবি সদস্যরা টহল দেয়ার সময় ওপার থেকে গুলিবর্ষণ হয়।এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন বিজিবির নায়েক মিজান। শুক্রবার দুই বাহিনীর মধ্যে দ্বিতীয়দফা গোলাগুলির পর শনিবার বিকালে মিজানের লাশ ফেরত আসে। গোলাগুলিতে ওই পক্ষের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ধারণা করছি, তারা (মিয়ানমার) ভাবছে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানাইজেশন আমাদের দেশের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকায় অবস্থান করে তাদের ওপর হামলা চালায়। এই ভুল বোঝাবুঝি থেকে এ গোলাগুলির ঘটনা। বিজিবি সদস্য নিহতের প্রতিবাদ জানানো এবং ক্ষতিপূরণ চাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফ্লাগ মিটিযেং আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেছি। সামনের মিটিংয়েও এ বিষয়ে কথা বলব। উত্তেজনার মধ্যে মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় সেনা মোতায়েন করে। প্রতিমন্ত্রী আশা করছেন, সীমান্ত থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করবে প্রতিবেশী দেশটি।
বিজিবি ও কোস্টগার্ড সতর্ক অবস্থায় রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ওই সব এলাকায় বসবাসকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এই বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী রূপসী বাংলা হোটেলে রেডক্রস দিবসের অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে ঢাকার পক্ষ থেকে সব কিছুই করা হবে।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর মতো তিনিও বলেন, সীমান্তে উত্তেজনার অবসান ঘটেছে এবং এখন কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে যাবে। নিরাপত্তা বিষয়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে একটি সংলাপ অনুষ্ঠানের উদ্যোগ আগেই ছিল বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে নির্ধারিত সব কর্মসূচি যথাসময়েই হবে। তিনি জানান, আগামী ৯ জুন মিয়ানমারে পূর্বনির্ধারিত সফরে যাচ্ছেন বিজিবি প্রধান মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ। এছাড়া ১৮ জুন ঢাকায় দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আলোচনাও হবে। মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক বহুমাত্রিক পর্যায়ে নিতে ঢাকার পক্ষ থেকে উদ্যোগ রয়েছে বলেও মাহমুদ আলী জানান।