সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৭:৫০

বিনিয়োগ বাড়াতে ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের পরামর্শ

বিনিয়োগ বাড়াতে ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের পরামর্শ

শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে শুধু কর ছাড় যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। বিনিয়োগ বাড়াতে রাজস্ব উদ্যোগের পাশাপাশি অবকাঠামো সমস্যা, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও প্রশাসনিক দুর্বলতা দূর করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের আলোচনায় এই পরামর্শ দেন মির্জ্জা আজিজ।

বেশকিছু ক্ষেত্রে আমদানি ও সম্পূরক শুল্ক কমানো বা বাড়ানো উল্লেখযোগ্য। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেট কী প্রবৃদ্ধি ও বিনিয়োগকে ত্বরান্বিত করবে শীর্ষক এই আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সভাপতি এম এ তসলিম, বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক জায়েদ বখত, সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী, বাংলাদেশ উইমেন চেম্বারের সভাপতি সেলিমা আহমাদ এবং ইফাদ গ্রুপের পরিচালক সাফিন আহমেদ বক্তব্য রাখেন।

মির্জ্জা আজিজ বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে বেশ কিছু ক্ষেত্রে কর ছাড় দেয়া হয়েছে। এগুলো অবশ্যই বিনিয়োগের জন্য ইতিবাচক। কিন্তু এই রাজস্ব পদক্ষেপ ছাড়া আরো কিছু বিষয় রয়েছে। বিশেষ করে অবকাঠামো সমস্যা, রাজনৈতিক সমস্যা ও প্রশাসনিক দুর্বলতা দূর করার বিষয়ে সুস্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। কিন্তু এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করা না গেলে বিনিয়োগ গতি পাবে না। সবকিছুর ঊর্ধ্বে রাজনৈতিক পরিবেশ’ এই মন্তব্য করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকলে বাজেটে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অর্জন হবে না।

মির্জ্জা আজিজ ৭ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেয়া নতুন বাজেটকে উচ্চাভিলাষী মনে করলেও জায়দে বখত ও এম এ তসলিম তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। বাজেটের আকার নিয়ে মির্জ্জা আজিজ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের অন্যান্য বাজেটের সঙ্গে তুলনা করলে প্রস্তাবিত বাজেট অবশ্যই উচ্চাভিলাষী। এটা নিশ্চিত করে বলা যেতে পারে বাজেটে যে অর্থায়ন প্রস্তাব করা হয়েছে, তা অর্জন হবে না। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির যে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে, তা বাস্তবায়নের মত প্রশাসনিক দক্ষতাও সরকারের নেই। বাজেটে ব্যয়ের যে লক্ষ্য ধরা হয়েছে তা ঠিক রাখতে সরকারের ব্যাংক ঋণ বেড়ে তা মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে তুলবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা।

জায়েদ বখত বলেন, ২০১৪-১৫ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে তা প্রাক্কলিত জিডিপির ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। একটি উন্নয়নশীল দেশের সরকারি ব্যয় ১৮ থেকে ১৯ শতাংশ উচ্চাভিলাষী নয়। তবে এই বাজেট বাস্তবায়নই সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ। কারণ ৭ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির জন্য যে বিনিয়োগ দরকার সহায়ক রাজনৈতিক পরিবেশ ছাড়া তা সম্ভব নয়। এজন্য বর্তমানে যে রাজনৈতিক পরিবেশ আছে, তা বজায় রাখার পাশাপাশি অনিশ্চয়তা দূর করতে হবে।

এম এ তসলিম বলেন, সরকার ইতোপূর্বে যে সব বাজেট দিয়েছে, সেখানে যে সব প্রতিশ্রুতি ছিল, তা বাস্তবায়ন হয়নি। গত ৫ বছরে দুর্নীতি বন্ধে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আর্থিক খাতে একের পর এক কেলেঙ্কারি ঘটছে। হলমার্ক-ডেসটিনিসহ বিভিন্ন এমএলএম কোম্পানিসহ একদল লোক সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিনা পুঁজিতে ব্যবসা করছে। এরকম অবস্থায় প্রকৃত ব্যবসায়ীরা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবেন না। নতুন বাজেটকে উচ্চাভিলাষী মনে না করলেও প্রশাসনিক দক্ষতার অভাবকে বাস্তবায়নের পথে অন্তরায় মনে করছেন অধ্যাপক তসলিম।

বাজেট বাস্তবায়ন হবে না আকারের কারণে নয়, প্রশাসনের দক্ষতার অভাবের জন্য। সরকারের বিনিয়োগ কার্যক্রম যারা পরিচালনা করে, তারা দক্ষ নয়। আবার দুর্নীতিও হয়। সে কারণেই কাঙ্ক্ষিত বাস্তবায়ন হয় না। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট কর কমানোর প্রস্তাব যৌক্তিক হয়নি বলে মত দিয়েছেন ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী। ইফাদ গ্রুপের পরিচালক সাফিন আহমেদও প্রশাসনিক অদক্ষতার বিষয়টি তুলে বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন।

সেলিমা আহমাদ বলেন, ২০১২ সালে সরকার নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে ১০০ কোটি টাকার বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু প্রশাসনিক দক্ষতার অভাবে তার ব্যয় হয়েছে সামান্য। সভায় ইআরএফ সভাপতি সুলতান মাহমুদ স্বাগত বক্তব্য দেন। সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সমাপনী বক্তব্য রাখেন।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025