বুধবার সকালে দিনের আলোয় সবার নজরে আসে ইউক্রেনের এই পতাকা। অবশ্য কর্তৃপক্ষ দ্রুতগতিতেই মস্কোর কোতেলোনিচেস্কায়া এমব্যাংকমেন্ট ভবনের স্তম্ভ থেকে ওই পতাকা নামিয়ে ফেলে এবং সোভিয়েত তারাকে পুনরায় আগের রঙে ফিরিয়ে আনে। কিন্তু কমিউনিজমের প্রতীকে পরিণত হওয়া কাস্তে-হাতুড়িসমেত ‘সোভিয়েত তারা’য় ইউক্রেনের এই পতাকার ছবি ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে।
সোভিয়েত তারা থেকে ইউক্রেনের পতাকা খুলে নেওয়া এবং কাস্তে-হাতুড়ির তারাটিকে পুনরায় আগের রঙে ফিরিয়ে আনার আগে মুঠোফোনে সেলফি তুলছেন ভবনটির এক কর্মী। ছবি: দ্য গার্ডিয়ানএ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চার ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।
কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানা না গেলেও এটা স্পষ্ট যে, রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের চলমান সংকটে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন জানানোই এই গেরিলা অ্যাকটিভিজমের উদ্দেশ্য। এ ঘটনায় যুক্ত অ্যাকটিভিস্টরা স্পষ্টতই রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় সরকারকেই অমান্য করার ঝুঁকি নিয়েছেন। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাব্যবস্থা ছাড়া ১৭৬ মিটার উচ্চতায় একটা স্তম্ভের ওপরে উঠে রাতারাতি এই কাজ করাটাও অত্যন্ত বিপজ্জনক।
মস্কোর বিখ্যাত কোতেলোনিচেস্কায়া এমব্যাংকমেন্ট ভবন। ফাইল ছবি: ইউজিন তারাসভ/দ্য গার্ডিয়ান
এদিকে, নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো লিখেছেন, ‘স্বাধীনতা দিবস ঘিরে আমরা একটা উদ্যোগ নিয়েছি। “আমাদের রং” নামে এই উদ্যোগ ইউক্রেনের পতাকার প্রতি উত্সর্গিত।’ পোরোশেঙ্কো আরও লিখেছেন, ‘এটা খুবই প্রতীকী যে, এমন দিনে আমাদের রং মস্কোর সবচেয়ে সেরা অট্টালিকাকেও রাঙিয়ে দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে বসবাসকারী ইউক্রেনীয়দের প্রতি আমার আহ্বান থাকবে, আপনারা যে যেখানেই থাকুন না কেন, স্বাধীনতার বার্ষিকীকে ঘিরে আপনাদের বাড়ি, অফিস, গাড়ি আমাদের জাতীয় পতাকার রঙে রাঙান।’
১৯৯১ সালের ২৪ আগস্ট সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে ইউক্রেন। মস্কোর যে ভবনটির চূড়ায় ইউক্রেনের পতাকা টাঙানো হয়েছে, সেটা জোসেফ স্তালিনের শাসনামলে নির্মিত মস্কো নগরের ঐতিহাসিক ‘সাত বোন অট্টালিকা’র একটা। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৩ সালের মধ্যে বানানো ওই অট্টালিকাগুলো মস্কোর নগর-দিগন্তে এখনো স্বমহিমায় উদ্ভাসিত।