শীর্ষবিন্দু নিউজ: স্বর্ণ চোরাচালানের ঘটনায় গ্রেফতার বিমানের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদের কথিত ধর্মপুত্র মাহবুবুল হক পলাশ, এয়ারলাইন্সের ডিজিএম এমদাদ হোসেনসহ ৫ জনের রিমান্ড চলছে। এদের রিমান্ড শেষ হলেই বিমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন করে তাদের বক্তব্য জানাবে। শনিবার রাতে বিমানের পরিচালনা পর্ষদের জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
রোববার শেষ হবে গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ড। আর তাই সোমবার কিংবা মঙ্গলবার বিমান কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে সব বক্তব্য তুলে ধরবে বলে সভা সূত্রে জানা গেছে। সোনা চোরাচালানের ঘটনায় বৈমানিকদের কয়েকজনের নামও উঠে এসেছে পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে। এতে বিমানের কর্তব্যরত বৈমানিকদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সামাজিকভাবেও বেশিরভাগ বৈমানিকরা হেয় হচ্ছেন।
এই প্রেক্ষাপটে বৈমানিকদের সংগঠন বাংলাদেশ এয়ারলাইন পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) এর নেতারা শনিবার রাতে বিমানের পরিচালনা পর্ষদ সভায় হাজির হন। এ সময় তারা লিখিতভাবে সত্যিকার যারা অপরাধে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে পুরো বৈমানিক কমিউনিটিকে মানসিক ও সামাজিকভাবে পুলিশি হয়রানি থেকে মুক্ত করার দাবি জানান।
শুধু কর্মচারী কিংবা দৈনিকভিত্তিক শ্রমিকরাই নয়, সোনা চোরাচালানের ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছে বিমানের পদস্থ কর্মকর্তারাও। সম্প্রতি এ ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন এয়ারলাইন্সের ডিজিএমসহ ৫ জন। এর সঙ্গে উঠেছে বিমানের আরো পদস্থ কর্মকর্তাদের নাম। আর এ নিয়ে তোলপাড় চলছে সারাদেশে। এ অবস্থায় বিমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ শনিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জরুরিভাবে পরিচালনা পর্ষদের সভা ডাকে। সভা ডেকে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ পড়ে আরো বিপদে।
সূত্র জানায়, সভায় বলা হয়, সোনা চোরাচালানের ঘটনায় যেভাবে পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে বিমানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, কয়েকজন বৈমানিক ও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কেবিন ক্রু’র নাম উঠে এসেছে তাতে বিমানের ভাবমূর্তি বলে আর কিছু নেই। দীর্ঘদিন ধরে বিমানের একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী এসব কাজে জড়িত থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে অগ্রিম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নিতে পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন পর্ষদের একাধিক সদস্য।
সভায় সোনা চোরাচালানে বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় উদ্বেগ জানায় পরিচালনা পর্ষদের কেউ কেউ। রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সের কর্মীদের এভাবে নৈতিক ও অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে সরকারের মর্যাদাকেও ভুলুন্ঠিত করা হয়েছে বলে কেউ কেউ মত দেন। এসব কাজে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বিমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকেও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। নতুবা ভবিষ্যতে এই কাজে অন্যরাও জড়িয়ে পড়বে বলে কেউ কেউ মত দেন।
পরিচালনা পর্ষদ সভা সূত্রে জানা গেছে, সোনা চোরাচালানের সঙ্গে বিমানের পদস্থ কর্মকর্তা ছাড়াও জামাল উদ্দিন আহমেদের ধর্মপুত্র বিমানের ঠিকাদার পলাশ জড়িত। বিমানের কর্মকর্তা ছাড়াও বিমান চেয়ারম্যানের ধর্মপুত্র গ্রেফতার হওয়ায় বিষয়টি এয়ারলাইন্সের ভার্বমূর্তিতে নেতিবাচক প্রলেপ দিয়েছে। যা পুনরুদ্ধার জরুরি। এ অবস্থায় সবকিছু খোলাসা করতে চায় বিমান। তবে যেহেতু আইনানুগ একটি প্রক্রিয়া (রিমান্ড) চলছে তাই এ অবস্থায় এ নিয়ে বক্তব্য দেওয়া সমীচীন হবে না বলেই মনে করছে বিমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।