রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৯

৪৪টি পদ শূন্য: দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য দেখার কেউ নেই

৪৪টি পদ শূন্য: দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য দেখার কেউ নেই

বজলুর রহমান: দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এমনই দুর্দশা যে প্রতিষ্ঠানটি নিজেই আজ অসুস্থ্য। যার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার কেউ নেই। স্থানীয়রা এমটাই বলে থাকেন এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সম্পর্কে।

উপজেলার তিন লাখ মানুষের জন্য এখানে আছেন মাত্র ৪ জন চিকিৎসক। কাগজে দুইজন থাকলেও প্রতিদিনের রুটিন আউটডোরে কর্মরত ডাক্তারকে মাঝে মধ্যে পাওয়া যায় না। গত বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসা সহকারী। এ দিয়েই চলছে দোয়ারাবাজার উপজেলার বৃহৎ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসাসেবা। ৩১ শয্যার আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট চলছে দীর্ঘদিন ধরে। দোয়ারাবাজারের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে অনেক রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এলেও আশাহত হয়ে তাদের ফিরতে হয় আপন নীড়ে।

সবচেয়ে ভয়াভহ তথ্য হলো, ভান্ডার রক্ষক আমির উদ্দিন চাকুরীরত অবস্থায় অননুমোদিত ভাবে গত ২০০০ সালের ১লা জুন মাসে বিদেশ চলে যান। এর পর থেকে ১৪ বছর ওই পদে কোনো জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি এমনকি তাকে বাতিলও করা হয়নি। অন্যদিকে, দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে হাসপাতালের স্বাস্থ্য প.প. কর্মকর্তাসহ আরএমওর পদটিও।

জানা গেছে, উপজেলায় ৩টি ইউনিয়ন ভিত্তিক উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে সেখানে ডাক্তার শূন্যতার কারনে বন্ধ রয়েছে। এর ফলে ইউনিয়ন পর্যায়ের মানুষদের ভোগান্তিও বাড়ছে। বর্তমানে হাসপাতালের চিকিৎসক সংখ্যা ৪জন। কিন্তু প্রতিদিনের রুটিনে আউটডোরে কর্মরত থাকেন ১ জন। হাসপাতালে একটি মাত্র এক্স-রে মেশিন তাও দীর্ঘদিন ধরে অকেজো। চিকিৎসাধীন রফিজান বেগম নামের এক রোগী জানান, এক্স-রে মেশিন না থাকায় তাদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সরকারি বিধি মোতাবেক মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি, এনথ্রেসিয়া, শিশুরোগ, অর্থোপেডিক্স, নাক-কান-গলা ও ডেন্টাল সার্জনসহ মোট ৯ কনসালটেন্ট থাকার কথা। সাধারণ ডাক্তারের পদ রয়েছে ১৬টি। কিন্তু আছেন ৮ জন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা থাকলেও আবাসিক মেডিকেল অফিসার নেই একজনও। ৮ জন অফিস সহকারীর পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ২জন। হাসপাতালে নার্সের পদ রয়েছে ১১টি। কিন্তু বর্তমান নার্সের সংখ্যা মাত্র ৬জন থাকলেও প্রশিক্ষনে রয়েছেন ৩জন। হাসপাতালে ৭ জন অফিস পিয়নের মধ্যে আছে মাত্র ১ জন।

এছাড়াও হাসপাতালে নাইট গার্ড দুই জনের বদলে ১জন থাকায় মাঝে মধ্যেই হাসপাতালের মূল্যবান জিনিসপত্র হারিয়ে যায়। হাসপাতালে ২টি জেনারেটর থাকলেও প্রতিষ্ঠার পর থেকে কখনও চালু হয়নি বলে জানান স্থানীয় এলাকাবাসী। উপজেলা স্বাস্থ্য প.প.কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ মোঃ জিল্লুল হক জানান অনেক চেষ্টা করে ডাক্তার নিয়োগ হলেও তারা উপর থেকে ষ্ট্যান্ড রিলিজ এনে চলে যান আমার করার কিছু থাকে না।

তিনি আরও জানান হাসপাতালটিতে জনবল নিয়োগ করা জরুরী। প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক মোঃ হানিফ মিয়া জানান ১০৬ টি পদের মধ্যে ৪৪টি পদই শূন্য রয়েছে। দোয়ারাবাজার উপজেলা সদর হাসাপাতালে ডাক্তার সংকট ছাড়া নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত রয়েছে বলে মন্তব্য করলেন সদর ইউনিয়নের তিন তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল খালেক।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025