শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: সংবাদ সম্মেলন শেষে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে বের হওয়ার পরই গ্রেপ্তার হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ মঙ্গলবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আগামীকাল মির্জা ফখরুলকে আদালতে নেওয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ) মাসুদুর রহমানের ভাষ্য, বিএনপির নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে অনেক মামলা রয়েছে। তাঁর জানামতে ৬০টিরও বেশি মামলা রয়েছে। কোন মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। আদালতে নেওয়ার পর বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
বিকেলে সংবাদ সম্মেলন শেষে মির্জা ফখরুল প্রেসক্লাব থেকে বের হন। ফটক পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশকে প্রস্তুত হতে দেখা যায়। ফটকের সামনে পুলিশের একটি প্রিজন ভ্যান রাখা ছিল। মির্জা ফখরুল ব্যক্তিগত একটি গাড়িতে ওঠেন। পরে সেখানে ডিবির এক সদস্য ওঠেন। এরপর গাড়িটি নিয়ে যাওয়া হয়। গাড়ির পেছনে পুলিশের প্রিজন ভ্যান ও বেশ কয়েকটি গাড়ি ছিল।
বিএনপির নেতা ফখরুল প্রেসক্লাবের ফটকে আসার সময় আওয়ামীপন্থী সাংবাদিকদের একটি মিছিল থেকে ধর ধর ফখরুলরে ধর বলে স্লোগান দেওয়া হতে থাকে। মিছিল থেকে জয় বাংলা স্লোগান দেওয়া হয়।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি সারা রাত জাতীয় প্রেসক্লাবে ছিলেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের ঐতিহ্যগত আতিথেয়তা গ্রহণ করেছেন। এ জন্য তিনি সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও বলেন, দেশ কারাগারে পরিণত হয়েছে। অধিকার আদায়ের সংগ্রামে যোগ দেওয়ার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রামে রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকেরা বরাবরই প্রেসক্লাবে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রেসক্লাবের দরজা তাঁদের জন্য খোলা ছিল। এটা নিয়ে কেউ কটাক্ষ করেননি। শওকত মাহমুদ আরও বলেন, মির্জা ফখরুল প্রেসক্লাব থেকে বের হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সাংবাদিকেরা তাঁকে যেতে দেননি। কারণ বাইরে গেলেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হতো।
এরআগে এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া ঘোষিত সংগ্রামে শামিল হওয়ার জন্য দেশবাসির প্রতি আহবান জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, নিরাপত্তাজনিত কারণেই তিনি রাতে প্রেসক্লাবে ছিলেন। বিএনপিপন্থী পেশাজীবীদের সভায় যোগ দিতে সোমবার দুপুরে ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রেসক্লাবে যান। সেখানে তিনি বক্তব্য রাখেন। তার প্রেসক্লাবে উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রজন্ম লীগের কর্মীরা প্রেসক্লাবে হামলা চালায়।
মঙ্গলবার সকালে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে মোস্ট ওয়ান্টেড হিসেবে আখ্যায়িত করে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানান। এরকিছুক্ষন পরই আওয়ামী লীগ পন্থী সাংবাদিকরা মিছিলসহ প্রেসক্লাব ভবনে প্রবেশ করে। তারা প্রেসক্লাব বহিরাগত মুক্ত করার আল্টিমেটাম দেয়।