শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: কাউকে না জানিয়ে গভীর রাতে রুহুল কবির রিজভী হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন। অনির্ভরযোগ্য সূত্রে তার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর এ্যাপোলো হাসপাতাল কতৃপক্ষ তাকে রিলিজ দিয়েছেন। তবে তিনি বর্তমানে কোথায় আছেন তা জানা যায়নি। যোগাযোগের জন্য তার ব্যক্তিগত ফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।
এদিকে, অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ বলছে, গভীর রাতে কাউকে না বলে হাসপাতাল ছাড়ায় থানায় জিডি করা হয়েছে। যাতে চিকিৎসার ব্যয় পরিশোধ না করার কথাও বলা হয়েছে। অ্যাপোলো হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মকর্তা শাহ আলম বুধবার সকালে রাজধানীর ভাটারা থানায় জিডি করেন বলে এসআই হাবিবুর রহমান জানান।
জিডিতে বলা হয়েছে, রিজভী গত ৪ জানুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। গত রাত ১২টার সময় তার কেবিনে গিয়ে দেখা যায়, তিনি টিভি দেখছেন। এরপর নিয়মিত চেক আপের লক্ষ্যে রাত ৩টা ৪০ মিনিটে নার্স লাবণী আক্তার তার কক্ষে গিয়ে তাকে পাননি। এরপর হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘোরাঘুরি করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিল পরিশোধ ছাড়াই বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব হাসপাতাল থেকে চলে গেছেন বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বিলের পরিমাণ সম্পর্কে তাতে কিছু বলা হয়নি বলে এসআই হাবিব জানিয়েছেন। দুপুরে অ্যাপোলো হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার মফিজুল ইসলাম জানান, গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজির অধ্যাপক মজিবুর রহমানের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালের দশম তলার ১১ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন ছিলেন রিজভী। গোপনীয় বলে তার চিকিৎসার ব্যয় সম্পর্কে বলতে রাজি হননি হাসপাতালের এই কর্মকর্তা। তবে রিজভী যে কেবিনে ছিলেন তার প্রতিদিনের ভাড়া ১০ হাজার টাকার মতো বলে জানিয়েছেন তিনি। শনিবার রাত থেকে ওই কেবিনে ছিলেন রিজভী। চার দিনের মাথায় মঙ্গলবার মধ্যরাতে হাসপাতাল ছেড়েছেন তিনি।
অ্যাপোলোর কর্মকর্তা মফিজুল বলেন, হাসপাতালের প্রতিটি ফ্লোরে সিসি ক্যামেরা আছে, সিকিউরিটি কর্তৃপক্ষ আছে- প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি গঠন করে তারাই দেখবেন কীভাবে ও কখন ওই কেবিন থেকে রিজভী আহমেদ বেরিয়ে গেলেন। এই ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না তা তার জানা নেই। তবে কারো গাফিলতি থাকলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে পারে।
সকালে রিজভীর সহকারী মজিদ গণমাধ্যমকে বলেন, স্যার রাত ৩টার দিকে অ্যাপোলো হাসপাতাল থেকে চলে এসেছেন। তিনি নিরাপদে আছেন, ভালো আছেন। কাউকে বলার প্রয়োজন নেই। রিজভীর কয়েক ঘনিষ্ঠ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শীতের গভীর রাতে হাসপাতালের কেবিনের দরজার বাইরে গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকজন সদস্য ঘুমিয়ে থাকার ফাঁকে বেরিয়ে যান তিনি।
বিএনপির ৫ জানুয়ারির কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে গত শনিবার রাত ১২টার দিকে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে অসুস্থ রিজভীকে তুলে নিয়ে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করে গোয়েন্দা পুলিশ।