শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন পয়েলা ফাল্গুন। এ দিনে বন-বনান্তে কাননে কাননে পারিজাতের রঙের কোলাহলে ভরে ওঠবে চারদিক। কচি পাতায় আলোর নাচনের মতই বাঙালির মনেও লাগবে রঙের দোলা। হৃদয় হবে উচাটন।
উৎসবে মাতবে গোটা দেশ। হলুদ শাড়ি পরিহিত নারীর চুলের খোঁপায় শোভা পাচ্ছে হলুদ ফুলে। পাতার আড়ালে আবডালে লুকিয়ে থাকা বসন্তের দূত কোকিলের মধুর কুহুকুহু ডাক, ব্যাকুল করে তুলবে অনেক বিরোহী অন্তর। কবি তাই বলেছেন, ‘সে কি আমায় নেবে চিনে/ এই নব ফাল্গুনের দিনে…’।
তবে বসন্তের সমীরণ বলছে এ ঋতু সব সময়ই বাঙালীর মিলনের বার্তা বহন করে। কারণ বসন্তেই ভাষা আন্দোলনের মধ্যদিয়ে বাঙালির স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল। বসন্তেই বাঙালি মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিল। আর শহরের নাগরিক জীবনে বসন্তের আগমন বার্তা নিয়ে আসে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি…’ ও একুশের বইমেলা।
এদিনেই অসংখ্য রমনী বাসন্তী রঙে নিজেদের রাঙিয়ে রাজধানীর রাজপথ, পার্ক, বইমেলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বরসহ পুরো নগরী সুশোভিত করে তোলে। বসন্তের পূর্ণতার এ দোলা ছড়িয়ে পড়ুক বাংলাদেশের সর্বত্র এবং সারা পৃথিবীর সকল বাঙালির ঘরে ঘরে। কোকিলের কুহুতান, দখিনা হাওয়া, ঝরা পাতার শুকনো নুপুরের নিক্কন, প্রকৃতির মিলন, সব এ বসন্তেই। তাই বসন্ত মানে পূর্ণতা। বসন্ত মানে নতুন প্রাণের কলরব। বসন্ত মানে একে অপরের হাত ধরে হাঁটা। মিলনের ঋতু বসন্তই মনকে সাজায় বাসন্তী রঙে, মানুষকে করে আনমনা।
কবিও তাই ব্যক্ত করেছেন, ‘ফুল ফুটুক, আর না-ই ফুটুক আজ বসন্ত’। ১৮ বছর আগে বঙ্গাব্দ ১৪০১ সাল থেকে প্রথম ‘বসন্ত উৎসব’ উদযাপন করার রীতি চালু হয়। সেই থেকে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদ্যাপন পরিষদ বসন্ত উৎসব আয়োজন করে আসছে। বসন্তের নাচ, গান ও কবিতার পাশাপাশি ফুলের প্রীতি বন্ধনী ও বসন্ত কথনের মাধ্যমে রাজধানীর চারটি স্পটে কাল বসন্ত বরণের অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।
সকাল ৭টায় চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় যন্ত্রসঙ্গীতের মুর্ছনার মধ্যদিয়ে শুরু হবে বসন্ত আবাহন। চলবে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। সেখানেই আবার বিকেল ৪টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে বসন্ত বন্দনার উৎসব। এছাড়া বিকাল ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত একযোগে বসন্ত আবাহনের উৎসব চলবে পুরান ঢাকার বাহাদুরশাহ পার্ক, ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবর মঞ্চ ও উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের উন্মুক্ত মঞ্চে।