রবিবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫১

লন্ডনে বৈশাখি মেলার আয়োজকের বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগ

লন্ডনে বৈশাখি মেলার আয়োজকের বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগ

অহিদুজ্জামান: তৃতীয় বাংলা খ্যাত লন্ডনে বাঙালি সংষ্কৃতির অন্যতম প্রাণের উৎসব বৈশাখি মেলা আয়োজকের বিরুদ্ধে মানব পাচারসহ নানা অনিয়ম-অসংগতি ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এবছর এই দায়ে নিয়ে মেলা অনুষ্ঠিত হলেও আগামীতে বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে টাওয়ার হ্যামলেটস কর্তৃপক্ষ।

যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সভাপতি সিরাজ হকের বিরুদ্ধে দীর্ঘকালধরে লন্ডনে কথিত বৈশাখি মেলা আয়োজনের নামে বাঙালি সংস্কৃতি ধ্বংস ও বিকৃতির অভিযোগ রয়েছে। লন্ডন্থ বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ বাঙালির জাতীয় সংস্কৃতি নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি এবং দেশের ভাবমূর্তি-স্বার্থ ক্ষুন্ন করার প্রতিবাদ জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন বাংলাদেশ সরকারের কাছে।

টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক কাউন্সিলর ও কমিউনিটি নেতা হেলাল রহমান ইত্তেফাককে বলেন, তৃতীয় বাংলা হিসেবে পরিচিত লন্ডনে বৈধভাবে প্রায় পাঁচ লাখ বাঙালি অভিবাসি রয়েছেন। এছাড়াও নানা উপায়ে আরো পাঁচ লাখের বেশি বসবাস করছেন। সবমিলিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের সংখ্যা অনেক। তাদেরকে বাংলাদেশকে পরিচিত ও আকৃষ্ট করতে অবশ্যই বাঙালি সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করাতে হবে।

এক্ষেত্রে বৈশাখি মেলা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমে। দুর্ভাগ্যক্রমে বৈশাখি মেলার মাধ্যমে আমাদের সংস্কৃতির বিকাশ এবং নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে তাদেরকে অনুপ্রাণিত করার সুযোগ এলেও তা একটি মাফিয়াচক্রের কবলে জিম্মি হয়ে পড়েছে।

তিনি লন্ডনে বৈশাখি মেলাকে ঘিরে যেসকল দুর্নীতি, অনিয়ম উঠেছে এবং বাঙালি সংস্কৃতিকে বিকৃতি ও ধ্বংসের সাথে জড়িত ষড়যন্ত্রকারিদের ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।

বাংলাদেশ ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি, কমিউনিটি নেতা ও বৈশাখি মেলা কমিটির সাবেক বোর্ড মেম্বার নুরুল ইসলাম বলেন, বৈশাখি মেলার অন্তরালে সিরাজ হক মূলত মানব পাচার করে থাকে। ৮-১০ লাখ টাকার বিনিময় শিল্পি সাজিয়ে লোক আনতে গিয়ে একাধিকবার সিরাজ হক ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশনের কাছে ধরাও পরেছে। যা ঢাকার বিভিন্ন সময়ে সংবাদপত্রে ফলাও করে প্রকাশ হয়েছে। এমনকি টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের কাছেও তার ডকুমেন্টস রয়েছে। ফলে একাধিকবার কাউন্সিল কতৃপক্ষ তার দেয়া শিল্পিদের তালিকা বাতিল করেছে। এতে বাংলাদেশ ও বাঙালি কমিউনিটির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে।

তিনি বলেন, সিরাজ হক বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে জিম্মি করে নিজের লালসায় মোটা অঙ্কের দুর্নীতি করছে এবং পুরো কমিউনিটি ও দেশের মর্যাদা বিনষ্ট করার পাশাপাশি বাঙালি সংস্কৃতিকে ধ্বংস করছে। তিনি বাংলাদেশ সরকারের কাছে এর সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।

ব্রিকলেনের বিশিষ্ট রেঁস্তরা ব্যবসায়ী শামসুদ্দিন শামস বলেন, সিরাজ হক একজন দুশ্চরিত্রের লোক। তার বিরুদ্ধে নানা অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। কিছুদিন আগে সিরাজ হকের রেস্ট্রুরেন্টে নি¤œমানের মদের লেবেল পরিবর্তন করে উচ্চ মূল্যের লেবেল লাগিয়ে পুলিশের কাছে ধরা খেয়ে মোটা অংকের জরিমানা দিয়েছে। এমনকি বাব-ছেলে একই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগের মামলায় আসামী হয়েছে।

ব্রিকলেনস্থ বাংলা ভাষার বইয়ের একমাত্র লাইব্রেরির মলিক সানু মিয়া একই অভিযোগ করলেন। তিনি বলেন, এদেশে নিয়ম রয়েছে মাল্টিকালচারের দেশ হলেও জাতিভিত্তিক সংস্কৃতির যেকোন উৎসব হতে হবে ওই সম্প্রদায়ের লোকজনকে ঘিরে। তারাই হবে প্রধান উপলক্ষ। অন্যরা মূল সম্প্রদায়ের লোকজনের আনন্দকে ভাগাভাগি করবেন। বৈশাখি মেলার নামে বাঙালি কালচারকে যেমন ধ্বংস করার পাশাপাশি বাঙালিদেরেকে সবদিক থেকেইে বঞ্চিত করছে একটি মাফিয়া চক্র।

উল্লেখ্য সিরাজ হকের অপকর্ম-কুকীর্তির খবর ব্রিটিশ মূলধারার সংবাদপত্র ডেইলি মেইল, সানডে টাইমস সহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে। এনিয়ে তদন্তও চলছে। তবে বৈশাখি মেলার আর্থিক দুর্নীতি তদন্ত হলেও সংস্কৃতি ধ্বংস ও বিকৃতির অভিযোগ বাংলাদেশ সরকারকেই করতে হবে এমন অভিমত দিয়েছেন আইনজ্ঞরা।

তবে কমিউনিটির একাদিক নেতা জানিয়েছেন সিরাজ হক বিএনপি চেয়ারপার্সনের একজন প্রভাবশালি উপদেষ্টার অবৈধ অর্থের ট্রেজারার। এই অবৈধ অর্থের জোরে ধরাকে সরা জ্ঞান করেনা। অবশ্য ওই উপদেষ্টার রয়েছে মিডিয়া হাউস। এই কথিত মেলায় ওই মিডিয়া হাউস স্পন্সর ছিল।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024