শফিক আহমদ শফি: সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবন দেখে অনেকে অবাক না হওয়ার উপায় নেই। সিলেটের প্রায় ৫০ লাধিক মানুষ লন্ডনে বসবাস করেন। বেশির ভাগ মানুষ সপরিবার নিয়ে লন্ডন রয়েছেন।
এসব লন্ডনী পরিবারগুলো দেশের বাড়িতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে মনোরম পরিবেশে বিলাসবহুল বাড়ি ঘর নির্মাণ করছেন। এসব এলাকার মধ্যে অন্তত শতাধিক বিলাসবহুল অট্টালিকা গড়ে উঠেছে। এসব বাড়ি ঘর নিমার্ণ করতে এক একটি বাড়িতে ৩০/৪০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এমন বাড়ি আছে ১০০/১৫০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
কিন্তু এসব বাড়িঘর নির্মাণের পর প্রবাসীরা আবার একজন কেয়ারটেকার রেখে চলে গেছেন লন্ডনে। ফলে প্রবাসীদের শত শত কোটি টাকা কোন কাজে আসছে না। এতসব টাকা ব্যয়ে ঘর বাড়ি নির্মাণ করে অকেজো করে ফেলে রাখা হয়েছে ।
এসব টাকা দিয়ে কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুললে এলাকার জন সাধারণের কর্মসংস্থান হতো তেমনি আর আয় হতো হাজার হাজার কোটি টাকা। সচেতন মহলের ধারণা এসব লন্ডন প্রবাসীদের উদ্বুদ্ধ করে শিল্প কারখানা গড়ে তুললে নবীগঞ্জ উপজেলা বাংলার মডেল হবে। সিলেট বিভাগের উপজেলাগুলোর প্রতিটি গ্রামের মধ্যে রয়েছে কোটি কোটি টাকার বিলাসবহুল বাড়ি। এসব বাড়িগুলো বিভিন্ন ছায়াছবি ও নাটকের শুটিংয়ের অভিনয় ছাড়া আর কোন কাজে আসছে না।
বৃহত্তর সিলেটের বিশ্বনাথ, জগন্নাথপুর, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর, গোলাপগঞ্জ বিয়ানীবাজার, নবীগঞ্জ, দণি সুরমাসহ প্রায় প্রতিটি উপজেলার লন্ডন প্রবাসীরা লন্ডনের বিভিন্ন নামিদামি বাড়ির চিত্র অবিকল নকল করে ঘরবাড়ি নির্মাণ করছেন। এসব মহলের নাম দেয়া হয়েছে কুইন এলিজাবেথ মহল,বাংলা টাউন, স্কাইলেট ভবন, হাওয়া ভবন, মোহন ভিলা, স্বপ্ননীড়, রাজমহল, ইত্যাদি। এসব বাড়িঘর প্রতিযোগিতামূলকভাবে গড়ে উঠছে। এক লন্ডনীর চেয়ে আরেক লন্ডনী আরো সুন্দর করে বাড়ি নির্মাণ করাই যেন প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য। এসব দেখে স্থানীয় অনেক পর্যটকরা অবাক হন যা শহরে মধ্যে দেখা যায় না।
নবীগঞ্জ উপজেলার রুস্তমপুর গ্রামের হাওয়া ভবনের কেয়ারটেকার মদরিছ মিয়া বলেন, তাদের ভবন নির্মাণে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয় হলেও থাকার মতো মানুষ নেই। তিনি একাই ভবনটি পাহারা দেন। ফুটার মাটি গ্রামের মছনু আহমদ চৌধুরী বলেন, প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে তাদের ভবন নির্মান কাজ করছেন এখনো ভবনের কাজ শেষ হয়নি। এই জন্য নাম দেয়া হয়নি। দিনার পুর আতানগীরি ভবনের কেয়ারটেকার বলেন, আমাদের মালিক ভবনটি নির্মাণ করতে শত কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। তাদের পরিবারে সবাই লন্ডন থাকেন তাই আমি একাই ঘরটি পাহারা দেই। এরকম বেশির ভাগ বিলাসাবহুল ভবনগুলো নির্মাণের পর শুধু কেয়ারটেকারের অধীনে রয়েছে।