রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:৫৪

শ্রীমঙ্গলে ভূয়া ডাক্তার এর রমরমা বাণিজ্য প্রতারিত হচ্ছেন সাধারন মানুষ

শ্রীমঙ্গলে ভূয়া ডাক্তার এর রমরমা বাণিজ্য প্রতারিত হচ্ছেন সাধারন মানুষ

ধারাবাহিক প্রতিবেদন : পর্ব ০১

বাংলাদেশ প্রতিক্ষণ: ডাক্তার মানেই আরোগ্যতা, ডাক্তার মানেই আস্থা। কিন্তু এর বহু চিত্র হিসেবে অনেক সময় মিডিয়াতে সংবাদ ছাপা হয়েছে যে, ডাক্তারের অবহেলায় অথবা ভূয়া ডাক্তারের খপ্পরে পড়ে ভূল চিকিৎসার কারণে প্রসূতি কিংবা নবজাতকের মৃত্যু সহ অন্যান্য রোগী মারা গেছে।

প্রিয় মানুষ হারানোর ক্ষোবে সাধারন মানুষ হাসাপাতাল, ক্লিনিক ও প্রাইভেট চেম্বারে হামলা সহ ভাংচুর করেছে। মানুষের জীবন বাচাঁনোর শেষ অমৃত আজ যেন বিষ হয়ে দাড়িয়েছে। এমনটাই জানা যাচ্ছে শ্রীমঙ্গল উপজেলা সহ বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠা ডাক্তার নামধারী জেনারেল প্র্যাকটিশিয়ানরা কয়দিন পরই এম.বি.বি.এস এবং বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রাইভেট চেম্বার খুলে চেয়ারে বসে রমরমা ব্যাবসা করে যাচ্ছেন।

জানা যাচ্ছে কেউ আবার ভারতের কলকাতা সহ বিভিন্ন দেশের ডিগ্রির নাম লাগিয়ে এম.বি.বি.এস ও ডাক্তার হিসাবে পরিচয় দিচ্ছেন। কারো আবার বাবা ডাক্তার ছিলেন সেই সূত্রে তিনিও বংশানুক্রমে বাপ-দাদার নামের টাইটেলের মত পাওয়া ডাক্তার নাম লাগিয়ে ডাক্তারী করছেন বলে জানা যায়।

যদিও এতদ বিষয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল কাউন্সিলের অনুমোদন অবশ্যই প্রয়োজন। সম্প্রতি ভূঁয়া হাতুড়ে ডাক্তার দের বিরুদ্ধে জেলার সর্বস্থরের সাধারন মানুষ সংশ্লিষ্ট প্রসাশন থেকে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দিকে তাকিয়ে আছেন। বিশেষজ্ঞ ও এম.বি.বি.এস ডাক্তার পরিচয়ে বছরের পর বছর ভূঁয়া চিকিৎসকরা চিকিৎসা সেবার নামে সাধারন মানুষকে নিরবে মৃত্যুর ফাদে ঠেলে দিচ্ছে এবং হাতিয়ে নিচ্ছে সাধারন মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা যা দিয়ে তারা হচ্ছেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, শ্রীমঙ্গলে কিছু টকবাজ ভূয়া চিকিৎসা সনদ সংগ্রহ করে ডাক্তার সেজে বহু বছর যাবৎ রোগীদের চিকিৎসা করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বি.এম.ডি.সি) ১৯৮০ সালের এবং ২০১০ সালের (সংশোধিত) আইন মোতাবেক শুধু নিবন্ধনকৃত চিকিৎসকরাই (এম.বি.বি.এস ও বিডি.এস ডিগ্রিদারীরাই) নামের আগে ডাক্তার পদবী ব্যবহার করতে পারেন। অন্যথায় উক্ত আইন লংঘন করার অপরাধে উল্লেখিত আইন অনুযায়ী দন্ডের বিষয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন পর্ব-০২ এ আলোচনা করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডায়গনষ্টিক সেন্টারের এক কর্মকর্তা জানান, অনেক ভূয়া সার্টিফিকেটদারী ডাক্তারগণ ডায়গনিষ্টিক সেন্টারের সংশ্লিষ্টদের মেনেজ করে চেম্বার খুলে বসেন। আবার কেউ কেউ চেম্বার না করেই ভিজিটিং কার্ড, চিকিৎসাপত্র ও বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে ডায়গনষ্টিক সেন্টারের নির্ভরযোগ্য ডাক্তার সেজে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করছে। প্রতারণার স্বীকার সিভিল সার্জন বরাবরে অভিযোগ করেও তারা কোন ফলাফল পায়নি বলে জানা যায়।

তবে ভূয়া সার্টিফিকেটদারী এই সব ডাক্তারদের কাছ থেকে সাধারণ মানুষকে কে রক্ষা করবে তা আজ একটি প্রশ্ন হয়ে দাড়িয়েছে। শ্রীমঙ্গল উপজেলায় কিছু ডাক্তার রয়েছেন যাদের কোন বৈধ ডাক্তারি সনদ নেই, থাকিলেও তা ভূয়া বলিয়া জানা যায়। এদের অপচিকিৎসার ফলে শিকার হচ্ছেন সহজ সরল চা শ্রমিক সহ সাধারন মানুষ। কেউ কেউ আবার ভূয়া সনদ ব্যাবহার করে ডাক্তারী করছেন বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে।

এমতাবস্থায় সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় অনতি বিলম্বে জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রশাসন উক্ত বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন। একই সাথে সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সহ সংবাদকর্মীগণ সমাজের এই ক্যান্সার ধমনে কার্যকরী ভূমিকা রাখবেন।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024