শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা বিপনী বিতানগুলো ঢেলে সাজিয়ে নিয়েছেন। ক্রেতারাও ঈদের কেনা-কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা।
ঈদকে সামনে রেখে সিলেটের ঈদের বাজার সেজেছে নানা ঢং-এ। মার্কেট গুলোতে ক্রমশ ক্রেতার ভিড় বাড়ছে। বিশেষ করে বিপণী বিতান, টেইলার্স ও লেডিস কর্নারগুলোতে বেশি ভিড় দেখা যাচ্ছে। মাসের প্রথম সপ্তাহে চাকরিজীবীদের অনেকেই বেতন-বোনাস পেয়ে বেরিয়ে পড়েন কেনাকাটায়। শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় ঈদের বাজারে ছিলো মোটামুটি জমজমাট। তবে দিনের বেশি সময় বৃষ্টি হওয়াতে দোকানিদের চিন্তিত দেখালেও সন্ধের পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত অনেকেই ভালো বেচা-কেনা করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর সিটি সেন্টার, মিলেনিয়াম, কাকলী, ব্লু-ওয়াটার, আল-হামরা, সিলেট প্লাজা, মধুবন, শুক্রিয়া মার্কেট, আড়ং, মাহা, লা-রিভ, কাশিস এবং কুমার পাড়া রোডের বিপণিবিতান গুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। রঙ-বেরঙের বাহারি ডিজাইনের পোশাক শোভা পাচ্ছে সবখানে ।
এ বছর কিরণমালা ও ফোরটাচ নামের পোশাক মেয়েদের সেরা পছন্দে স্থান পেয়েছে বলে জানিয়েছেন দোকানীরা। গত বছর বাজারে ভারতীয় টিভি সিরিয়ালের নায়িকার নামানুসারে পাখি থ্রি-পিচ ছিল আকর্ষণীয়। এ বছরও অনুরূপ কিরণমালা এবং ফোরটাচ থ্রি-পিচ বাজারে এসেছে। তাছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নামে শিশুদের পোষাকের নামকরন করা হয়েছে। কিশোরদের জন্য দাবাং ও পাগলু নামে পোশাক আনা হয়েছে।
বিক্রেতারা জানান, ভারতীয় সিরিয়াল কিরণমালার নামের পোশাকটিতে সাধারণত লম্বা সালোয়ার-কামিজের ওপর কোটি থাকে। নিচে ঘের দেওয়া থাকে। এর সঙ্গে থাকে ফলস, সামনে-পেছনে নকশা, দুই পাশে দুটি ঝুমকা। বিক্রেতারা জানান, এ পোশাকের দাম ৩ হাজার থেকে শুরু হয়ে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা। কিরণমালা ছাড়াও সিলেটের ঈদ বাজারে তরুণীদের জন্য আরও আছে রাজকুমারী, ইচ্ছে নদী, ছুয়ে দিলে মন, জলকন্যা, বউ কথা কও, পাতালপুরি, পাখি রিটার্নস’সহ নানা ভারতীয় টিভি সিরিয়াল ও এর নায়িকাদের নামের পোশাক ।
ঈদের বাজারে শাড়িতেও ভারতীয় সিরিয়ালের দাপট লক্ষ করা যাচ্ছে। নগরীর শাড়ির দোকানগুলো ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এবার তারা ক্রেতার জন্য রেশম কা জরি, রাধিকা, জারা জারা ইত্যাদি নামে ভারতীয় শাড়ি দোকানে তুলেছেন। এ শাড়িগুলোতে পাথর ও চুমকির ভারি কাজ করা হয়েছে। কোয়ালীটি অনুযায়ী এসব শাড়ি ৫ হাজার থেকে ৯৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। রেশমি চুড়ি আর প্রসাধনীর দোকানগুলোতেও ঈদের প্রভাব পড়েছে। তরুণীরা তাদের পছন্দের পোষাকের সাথে মিল রেখে তা ক্রয় করছেন। ঈদ বাজারে জুতার দোকানগুলোতে বিভিন্ন বয়সী ক্রেতার সমাগম দেখা যায়। বাটা, এপেক্স, লটোসহ অন্যান্য ব্রান্ডের শো-রুমে ক্রেতাদের আনাগোনা দেখে বিক্রেতারা একটু নড়ে-চড়ে বসেছেন।
নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ফুটপাতের দোকানগুলোতেও বেশ আয়োজন দেখা যায়। নগরীর বন্দরবাজার থেকে আম্বরখানা পর্যন্ত পুরো ফুটপাত এখন হকারদের দখলে। ঈদকে সামনে রেখে তাদের বেচাকেনায় কোন ঘাটতি নেই। সেখানে ক্রেতা আকর্ষণ নানা কৌশল চোখে পড়ার মতো।
বড় বড় মার্কেটগুলোতে ক্রেতা আকর্ষণের জন্য নানা রকম কুপন ব্যবস্থায় আকর্ষণীয় পুরস্কারের আয়োজন রাখা হয়েছে। নতুন নতুন ডিজাইনের পোষাক আর রকমারি সাজসজ্জায় পুরো সিলেট এখন কেনাকাটার ব্যস্ত নগরী। ঈদ আসলেই সারা দেশের মতোই সিলেট নগরীর মার্কেটগুলোতে বেড়ে যায় কেনাবেচা। আনন্দে ভাসিয়ে নিতে বছরে দু’বার ঈদ আসে। এই ঈদগুলোতে সামর্থ অনুযায়ী মুসলমানরা নতুন পোশাক কেনেন। নতুন পোষাকের আনন্দ ঈদের আনন্দকে বহুগুন বাড়িয়ে তোলে। ঈদ হয়ে উঠে অপার আনন্দের মহামিলন।