সিরাজুল ইসলাম: ইরানে বসবাসরত বহু বাংলাদেশী নাগরিক ডিজিটাল পাসপোর্ট করার বিষয়ে সমস্যায় পড়েছেন। ডিজিটাল পাসপোর্ট করার জন্য ইরানে কোন ব্যবস্থা না থাকায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইরানে জন্মগ্রহণ করা নবজাতক শিশুদের জন্য রেসিডেন্স পারমিট নেয়ার বিধান থাকলেও ডিজিটাল পাসপোর্টের অভাবে তা করা যাচ্ছে না। আবার যেসব ব্যক্তির হাতে লেখা পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে কিংবা ডিজিটাল পাসপোর্ট নেই তারাও একই ধরনের সমস্যায় পড়েছেন।
কারণ, আগামী ২৪শে নভেম্বর হাতে লেখা পাসপোর্ট আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ হয়ে যাবে এবং সবক্ষেত্রে ডিজিটাল পাসপোর্টের প্রচলন হবে। সে কারণে এখনই ডিজিটাল পাসপোর্ট করা জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু ইরানে ডিজিটাল পাসপোর্ট করার কোন ব্যবস্থা নেই এবং ঠিক কিভাবে তা করা হবে এখন পর্যন্ত তা পরিষ্কার নয়।
এ বিষয়ে ঢাকার আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের মহাপরিচালক এন এম জিয়াউল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মূলত ইরানে বাংলাদেশী নাগরিকের বসবাস কম থাকায় তেহরানের বাংলাদেশ দূতাবাসে ডিজিটাল পাসপোর্ট করার কোন ব্যবস্থা নেই। তবে তেহরানের বাংলাদেশ দূতাবাস যদি লিখিত চিঠি পাঠিয়ে এ বিষয়ে অনুরোধ করে তাহলে একটা ব্যবস্থা নেয়া সহজ হবে।
তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, বৃটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো কয়েকটি দেশে ডিজিটাল পাসপোর্ট করার জন্য মোবাইল টিমও রয়েছে। তেহরান থেকে অনুরোধ পেলে আমরা সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে মোবাইল টিম পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিতে পারব। এতে খুব সমস্যা হবে না।’
বিষয়টি তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের নজরে আনা হলে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ তা বেশ গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন এবং এরই মধ্যে ই-মেইলের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ‘ডিপার্টমেন্ট অব ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট’কে অনুরোধ জানিয়েছেন।
ই-মেইল পাঠানোর কথা নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর এটিএম মোনেমুল হক। তিনি জানান, জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গতকাল (রোববার) ই-মেইলের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে এ বিষয়ে একটা ফলাফল আসবে বলে তিনি আশা করেন।
আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থা বা আইএটিএ আগামী ২৪শে নভেম্বর থেকে ডিজিটাল পাসপোর্ট ছাড়া হাতে লেখা কোন পাসপোর্ট গ্রহণ করবে না। বিষয়টি মাথায় রেখে বাংলাদেশ সরকারও এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। তবে যেসব দেশে বাংলাদেশী নাগরিকের অবস্থান বেশি সেসব দেশকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এ কাতারে পড়েনি ইরান। কিন্তু সময় শেষ হওয়ার কাছাকাছি অবস্থায় পৌঁছানোর কারণে ইরানে বসবাসরত বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য বিষয়টি অনেকটা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।