শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: প্যারিস হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে আবদেল হামিল আবাউদ নামের এক আইএস জঙ্গিকে। মোস্ট ওয়ান্টেড এই জঙ্গিকে হামলার আগে কয়েক সপ্তাহ ধরে খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছে পশ্চিমা জোটবাহিনী। লক্ষ্য ছিল বিমান হামলার তাকে হত্যা করা।
কিন্তু তাকে খুজে বের করতে ব্যর্থ হন তারা। দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। বেলজিয়ামের নাগরিক আবাউদকে এ বছরের শুরুতে জিহাদি নিয়োগ দেয়ার অভিযোগে তার অনুপস্থিতিতে ২০ বছরে কারাদ- দেয় আদালত। পুলিশ কর্মকর্তাদের শিরচ্চেদ করার একটি ব্যর্থ পরিকল্পনা
তার ছিল বলে সন্দেহ করা হয়। পরে সে সিরিয়ায় পালিয়ে যায়। তাকে ধরতে ইউরোপীয় কর্তৃপক্ষের ব্যর্থ হওয়া নিয়ে বিদ্রুপ করে আবাউদ। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যাঙ্গ করা তার বক্তব্য প্রকাশ করা হয় আইএসের অনলাইন ম্যাগাজিনে।
শুক্রবার আইএস জঙ্গিদের সিরিজ হামলায় প্যারিসে ঝরে যায় ১২৯ টি প্রাণ। এসব হামলার চলমান তদন্তের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে যে দু’জন জঙ্গির নাম রয়েছে, তার মধ্যে আবাউদ একজন। ফরাসী ও বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষ তাকে খুঁজছে। অপর জঙ্গি ২৬ বছরের সালাহ আবদেসলাম। গতকাল পশ্চিমা কিছু গণমাধ্যমে আবাউদ গ্রেপ্তার নিয়ে পরস্পরবিরোধী খবর আসে। রক্তাক্ত প্যারিস হামলার মূল হোতা হিসেবে সন্দেহভাজন আবাউদের বয়স মাত্র ২০ কোঠায়। সে আইএসের বহু পুরোনো সদস্য। ব্রাসেলসের কাছে মোলেনবিক শহরে তার বাড়ি। নিজ দেশ বেলজিয়ামেও একাধিক নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল সে।
কিন্তু জানুয়ারি মাসে তার হামলা পরিকল্পনা ভেস্তে দেয় বেলজিয়ান পুলিশ। জানুয়ারি মাসে আইএস জঙ্গিদের খোঁজে পুলিশ যখন ভাভিয়ার্স শহরে তল্লাশি চালায় তখন গ্রিসে পালিয়ে যায় আবাউদ। তার ফোনের সিগন্যাল ট্র্যাক করে কল রেকর্ড খতিয়ে দেখে এ তথ্য নিশ্চিত হয় পুলিশ। এ বছর আইএসের অনলাইন ম্যাগাজিন দাবিক-এ হামিদ আবাউদ নামে এক জঙ্গির সাক্ষাতকার প্রকাশ করা হয়।
ওই সাক্ষাতকারে আবাউদ বলেছিল, খুব শিগগিরিই সে এমন একটা কাজ করতে যাচ্ছে, যার জন্য পুরো ইউরোপ তাকে খুঁজবে, কিন্তু পাবে না। বেলজিয়ামের একটি সংবাদপত্রে আবাউদের বাবা ওমর আবাউদের সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছে। সাক্ষাতকারে পিতার কণ্ঠের ছেলেকে নিয়ে ক্ষোভ আর ঘৃণা ছিল স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, বেলজিয়াম আমার দেশ, আবাউদ আমাদের পুরো পরিবারকে লজ্জায় ফেলেছে। ও শুধু মানুষ মেরেছে তাই নয়, আমাদের জীবনকেও বিপন্ন করে তুলেছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিরিয়া পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই তার ওপর নজরদারি চালায় কর্তৃপক্ষ। জঙ্গি দলে পশ্চিমাদের নিয়োগ দেয়ার কাজে সরাসরি সম্পক্ত ব্যক্তিদের খুজে বের করে হত্যা করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তার ওপর নজরদারি করা হয়। বিমানহামলা চালানোর জন্য আবাউদকে যখন খোঁজা হচ্ছিল তখন প্যারিস পরিকল্পনা নিয়ে কোন তথ্য কর্মকর্তাদের কাছে ছিল না।