ওয়েছ খসরু: হেলিকপ্টারে চড়ে সিলেট এলেন ড. আবদুল মোমেন। দুপুর তখন ১টা ২৫ মিনিট। ক্রীড়া কমপ্লেক্সের প্রবেশ মুখে কয়েক হাজার নেতাকর্মী। হাতে ফুলের তোড়া। হাসিমুখে হেলিকপ্টার থেকে নামলেন ড. মোমেন।
এমন সময় স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠলো ক্রীড়া কমপ্লেক্সের ফটক। একটু এগিয়ে আসার পর একে একে নেতারা ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নেন ড. আবদুল মোমেনকে। গতকাল দুপুরে এমনভাবে জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশন থেকে সদ্য বিদায়ী স্থায়ী প্রতিনিধি ড. আবদুল মোমেনকে এভাবে বরণ করে নেন সিলেটের নেতাকর্মীরা।
মিশন থেকে ফেরার পর গতকালই সিলেট ছিল তার প্রথম সফর। এ কারণে তাকে নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনার কমতি ছিল না। বরণপর্ব শেষ করার পর তাকে নিয়ে শোডাউন করে ওলিকুল শিরোমণি হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার প্রাঙ্গণে যান তিনি। শোডাউনের অগ্রভাগে ছিল কয়েকশত মোটরসাইকেল।
এরপর ছিল গাড়ির সারি। নেতাকর্মীদের নিয়ে মাজার জিয়ারতের পর করেন মোনাজাত। পরে তিনি চলে আসেন সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। ওখানে শহীদদের প্রতি পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেন। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন ড. আবদুল মোমেন। বলেন, ‘আপনাদের ভালোবাসায় আমি আনন্দিত। ভবিষ্যতে আপনাদের সঙ্গে নিয়েই দেশ গড়ার কাজে মনোনিবেশ করবো।’ তিনি উপস্থিত সকল স্তরের নেতাকর্মীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।
এদিকে, শহীদ মিনার থেকে চলে আসেন নগরীর ধোপাদিঘীপাড়স্থ হাফিজ কমপ্লেক্সে। বিকালে সেখান থেকে তিনি চলে যান নগরীর রায়নগরস্থ পারিবারিক গোরস্থানে। এরপর শাহপরান (রহ.) মাজার জিয়ারতের পর সন্ধ্যায় ফিরে আসেন হাফিজ কমপ্লেক্সে। সেখানে তিনি প্রথমবারের মতো সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
নগরীর মেন্দিবাগস্থ আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে তাকে বরণ করে নিয়ে উপস্থিত ছিলেন ড. মোমেনকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত নেতারা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া নিকট অতীতে কোন নেতাকে এভাবে বরণ করেনি কেউ। ড. মোমেনকে বরণ করতে কয়েক হাজার নেতাকর্মীর ঢল নেমেছিল। আর এই বরণের মধ্য দিয়ে তারা সিলেটের নেতাকর্মীরা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের পর তার ছোট ভাই ড. আবদুল মোমেনকেও সাদরে গ্রহণ করে নিলেন। ড. আবদুল মোমেন মাসখানেক আগে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য হয়েছেন। ১৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ওই কমিটিতে ভাই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের নামও সদস্যের তালিকায় রয়েছে।
অর্থমন্ত্রীর সিলেটের বিশেষ সহকারী জাভেদ সিরাজ গতকাল সন্ধ্যায় জানিয়েছেন, ড. আবদুল মোমেন সন্ধ্যায় সিলেট আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে মতবিনিময় করেন। এর আগে তিনি পারিবারিক পরিসরে বেশিরভাগ সময় কাটান। আজ রোববার তিনি প্রশাসনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানান তিনি। এরপর তিনি ঢাকায় ফিরে যাবেন।
এদিকে, ড. একে আবদুল মোমেনের সিলেট আগমন উপলক্ষে তাকে স্বাগত জানিয়ে সিলেট মহানগর যুবলীগ গতকাল দুপুরে সিলেট নগরীতে এক বিশাল মোটর শোভাযাত্রার আয়োজন করে। মহানগর যুবলীগের সিনিয়র সদস্য ডা. মো. হোসেন রবিন ও সিনিয়র নেতা সৈয়দ গোলজার হোসেনের নেতৃত্বে মোটর শোভাযাত্রাটি আম্বরখানার সিলসিলা থেকে শাহী ঈদগাহ, নাইওরপুল, উপ-শহর রোড হয়ে মেন্দিবাগস্থ আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠে গিয়ে পৌঁছে।
পরে সেখানে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা থেকে আসা ড. আবদুল মোমেন ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আহমেদুল কবিরকে যুবলীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী তাদেরকে মিছিল ও করতালির মাধ্যমে স্বাগত জানান। মোটর শোভাযাত্রায় আরও অংশ নেন মহানগর যুবলীগের সিনিয়র নেতা কয়েস উদ্দিন আহমদ, সিনিয়র সদস্য মকবুল আলী, সাবেক জেলা ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার আলী, মাছুম বিল্লাহ, ফয়ছল আজাদ খান, রাহেল আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।
ড. আবদুল মোমেনের সিলেট আগমন উপলক্ষে জাতীয় শ্রমিক লীগ সিলেট ও মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি এবং জাতীয় শ্রমিক লীগ সিলেট মহানগর সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী এজাজুল হক এজাজ, জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম রশীদ চৌধুরী, মহানগর শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহমান, জেলা শ্রমিক লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল মতিন ভূঁইয়া, সহ-সভাপতি আবদুল জলিল, সহ-সভাপতি আব্দুস সাত্তার, মহানগর শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এম. শাহরিয়ার কবির সেলিম, যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ আহমদ, জেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান, মহানগর শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ তোফায়েল আহমদ সেফুল প্রমুখ(মাজ।