শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম সেনানিবাসে আজ শনিবার বাংলাদেশ সেনাবহিনীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডারদের সম্মেলনে যোগ দিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এই রেজিমেন্ট তাঁর পরিবারের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাঁর দুই ভাই শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল ও শহীদ সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল এ রেজিমেন্টের অফিসার ছিলেন।
ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডারদের সম্মেলন এবং নবম টাইগার্স রিইউনিয়ন উপলক্ষে রিইউনিয়ন প্যারেড অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আত্মপ্রকাশ ঘটে। তাই, আমি আপনাদের কাছ থেকে দেশপ্রেমের সর্বোত্তম নজির প্রত্যাশা করি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতির স্বার্থে যেকোনো আত্মত্যাগ করতে সব সময় প্রস্তুত থাকবে বলে তাঁর আশা। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ্য ও দেশপ্রেমিক কমান্ডিং অফিসার প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মুক্তিযুদ্ধে এ রেজিমেন্টের ভূমিকার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেঙ্গল রেজিমেন্টের পাঁচটি ব্যাটালিয়ন সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেজিমেন্টের সব ইউনিটের সদস্যদের তাদের ইউনিফর্মের কলারে লাল রঙের পাইপিং পরিধান করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও অষ্টম ইউনিটের সদস্যদের জন্য এটি একটি গর্বের বিষয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের জনগণের অংশ এবং ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এই বাহিনীর প্রধান অঙ্গ। রেজিমেন্টের সদস্যরা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার পাশাপাশি দুর্যোগ পরবর্তী ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং অন্যান্য জাতি গঠন কর্মকাণ্ডে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে। কেবল দেশেই নয়, তারা দেশের বাইরেও সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উন্নয়নে তাঁর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার একটি সক্ষম ও আধুনিক সশস্ত্রবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে অব্যাহত প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে তারা মাথা উঁচু করে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সব দায়িত্ব পালন করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বাংলাদেশ অর্ধ-দশক আগের তুলনায় ভিন্ন। বাংলাদেশের জনগণ এখন অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং যেকোনো অসাধ্যসাধনে অনেক বেশি আত্মপ্রত্যয়ী ও সংকল্পবদ্ধ। পদ্মা সেতু প্রকল্পের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নিজস্ব সম্পদে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত। তিনি বলেন, এ ধরনের কাজে সেনাবাহিনীর দক্ষতার কারণে বহু কাঙ্ক্ষিত প্রকল্পের নির্মাণকাজ তদারকির জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী প্যারেড পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম সেনানিবাসে পৌঁছালে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক তাঁকে স্বাগত জানান। মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সাংসদবৃন্দ, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ বিমানবাহিনী উচ্চ পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।