শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: অর্থের বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ককে অবৈধ ঘোষণা করেছে ফ্রান্স। যদি যৌন ব্যবসায় কোন খদ্দেরকে পাওয়া যায় তাহলে তাকে ৩৭৫০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। এমন নিয়ম করে একটি আইন পাস করেছেন ফরাসি এমপিরা। এ নিয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

যখন এ আইনের বিল নিয়ে পার্লামেন্টে চূড়ান্ত বিতর্ক চলছিল তখন এর বাইরে তুমুল হট্টগোল সৃষ্টি করেন কমপক্ষে ৬০ জন যৌনকর্মী। তারা বলছেন, এ আইনের ফলে ফ্রান্সে কমপক্ষে ৩০ হাজার যৌনকর্মীর পেটে লাথি পড়বে। তাদের আর যাওয়ার কোন জায়গা থাকবে না। তাদের প্রতি ৫ জনের মধ্যে চার জনই বিদেশী। যৌনকর্মীদের প্রতিবাদ বিক্ষোভের সময় তাদে হাতে ছিল বেশ কিছু ব্যানার। তাতে বলা হয়, সেক্স ওয়ার্ক ইজ ওয়ার্ক। ডোন্ট লিবারেট মি, আই উইল টেক কেয়ার অব মাইসেলফ।

উল্লেখ্য, অর্থের বিনিময়ে দেহব্যবসা বা নারীর দেহ ভোগ করাকে অবৈধ ঘোষণা করা এই আইনটি করতে ফ্রান্সের সময় লেগেছে প্রায় আড়াই বছর। ইউরোপের সব দেশেই যৌন ব্যবসায় দালালদের জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু সুইডেন, নরওয়ে, আইসল্যান্ড, বৃটেনের পর ফ্রান্সের যৌন ব্যবসার খদ্দেরদের শাস্তির বিধান পাস হলো। ১৯৯৯ সালে অর্থের বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ককে অবৈধ ঘোষণা করে সুইডেন। এর মধ্য দিয়ে এটিই হয় বিশ্বে সর্বপ্রথম এমন ঘোষণাকারী দেশ।

তবে ফ্রান্সে ডানপন্থি সিনেটররা পার্লামেন্টে এ বিল পাস করার বিরোধিতা করেছেন। তবে তাতে কাজ হয় নি। এর ফলে সেখানে প্রথম দফায় কোন ব্যক্তিকে অর্থের বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ার অভিযোগে অভিযুক্ত পাওয়া গেলে তাকে জরিমানা করা হবে ১৫০০ ইউরো। যদি তিনি এরপরও একই কাজ করেন তাহলে জরিমানার অর্থ বেড়ে দাঁড়াবে ৩৭৫০ ইউরো।

এ বিলটি সর্বপ্রথম ফ্রান্সের পার্লামেন্টে তোলা হয় ২০১৩ সালের অক্টোবরে। এ সময় দেশটির জনমত বিভক্ত হয়ে পড়ে। দেহ ব্যবসায়ীদের পক্ষ নিয়ে অনেকে কথা বলেন। আবার এর বিরোধিতা করেন অনেকে।

তবে বিলটি পাস হওয়ার পর দেহ ব্যবসায়ীদের জন্য বিকল্প কর্ম সংস্থানসহ আবাসিক সুবিধা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, এ খাতে বছরে ৪৮ লাখ ইউরো ব্যবহার করা হবে। এর অধীনে বিদেশী যৌনকর্মীদের ৬ মাসের আবাসিক অনুমতি দেয়া হবে। উল্লেখ্য, ফ্রান্সের যৌনকর্মীদের মধ্যে রয়েছে ইউরোপের পূর্বাঞ্চল, আফ্রিকা, চীন ও লাতিন আমেরিকান।