আরিফ মাহমুদ: ঢাকা শহরে একবার যদি কোনো ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়, বিপন্ন সাধারণ মানুষের উদ্ধার করাতো দূরের কথা, দেশের প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধারেরও কোনো সুব্যবস্থা নেই।
কারণ বাইরে থেকে যে হেলিকপ্টার এসে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করবে তারও ল্যান্ডিং করার কোনো ব্যবস্থা নাই। আর যদি বেশি মাত্রার ভূমিকম্প একবার আঘাত করে, তাহলে উদ্ধারকাজ শেষ হতে সময় লাগবে প্রায় ৫০ বছর। আট তলা ভবন রানা প্লাজা ধ্বসে গেলে উদ্ধার কাজ শেষ হতে বেশ সময় লেগেছিলো।
রানা প্লাজার চারপাশে বিশাল উদ্ধারকর্মী বাহিনী আর বিভিন্ন সরঞ্জাম সরবরাহের ব্যবস্থা থাকার পরও সময় লেগেছিলো প্রায় ৬ মাস।
সেই হিসাবে পুরো ঢাকা শহর ভূমিকম্পে ধ্বসে পড়লে কত বছর যে লাগতে পারে চিন্তা করতে পারবেন না। ব্যাংকের রিজার্ভ বেড়েছে, সেই রিজার্ভের পুকুর চুরি হয়েছে, কিন্ত একটি দেশের রাজধানীকে বাঁচানোর জন্য কি কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে? পরিকল্পনা কি?
এসো হে বৈশাখ বললেও বৈশাখ আসবে। এসো হে বৈশাখ কেউ না বললেও বৈশাখ আসবে। বৈশাখ আসাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ভুমিকম্প আসাটাই হলো অস্বাভাবিক। এই অস্বাভাবিকটাকেই ভয় হয়।
স্বাভাবিক উৎসবের আনন্দে বাংলাদেশ প্রস্তুত। শুধু তাই নয়, রঙ করে সঙ সেজে মুখোশ পড়ে ঘুরতে,গাইতে আর আনন্দ মিছিল করতে পরিশ্রম হয়না, মেধা খাটাতে হয়না। কিন্তু অস্বাভাবিক দূর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ কতোটুকু প্রস্তুত। মেধা, শ্রম আর পরিকল্পনার সঠিক বন্দোবস্ত করা আছেতো!
টুইন টাওয়ার ধ্বংসের জায়গায় গৌরব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ফ্রীডম টাওয়ার। বোমায় পুড়ে যাওয়ার পর ধূলো আর ধোঁয়া থেকে হিরোশিমা, নাগাসাকিকে সুন্দর রূপে সাজিয়েছে জাপান। আমরাও ধবংস হয়ে যাওয়া একটা নগরকে এভাবে সাজাতে পারবো তো?
এই পর্যন্ত ৩২ বার বড় রকমের ঝাঁকুনি আর বিভীষিকার সংকেত দিয়ে গেলো প্রাকৃতিক ভূকম্পন। ৩৩ নাম্বার ভূকম্পনটা নিশ্চয়ই খুব জোড়ালো হবে।
ভূকম্পন যদিও এসব সংখ্যার সঙ্গে মিল রেখে আসবেনা। তবে বারবার সতর্ক সংকেত দিয়ে যাচ্ছে। হয়তোবা এটা আমাদের প্রতি প্রকৃতির বা স্রষ্টার এক দয়া বা মমতা। এই মমতাকে অবহেলা না করে এ থেকে পরিত্রাণের চেষ্টা করা উচিত।।
উৎসব পালন করা ভালো। পাশাপাশি একটি দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন তার চেয়েও ভালো। কারণ- জীবন আছে বলেই উৎসব, উৎসব আছে বলেই জীবন নয়।