বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৮:০৪

বৃটিশ বাংলাদেশিদের অবদান ও কৃতিত্ব জাতির গর্ব

বৃটিশ বাংলাদেশিদের অবদান ও কৃতিত্ব জাতির গর্ব

রায়হান আহমেদ তপাদার: নানা দেশের বহু বর্ণের মানুষ একত্রে বাস করে আসছে বৃটেনে। স্বাভাবিকভাবেই এরা রাজনৈতিক মতাদর্শে ভিন্নমত ও পথের সমর্থক। বৃটেনে বাংলাদেশি কমিউনিটির অবস্থান এখন অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক শক্ত এক ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এখানকার বৃটিশ বাংলাদেশিদের এক বৃহৎ অংশ বৃটেনের মূলধারার রাজনীতি, অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, আইন ও বিচার ব্যবস্থা, সংস্কৃতি ও সমাজনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৃটিশ মূলধারার রাজনীতিতে বাঙালিদের অভিষিক্ত হওয়াই এর প্রমাণ।

এদিকে ২০১৫ সালের বৃটেনের পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সে এমপি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ৬ বৃটিশ নাগরিক। বৃটেনের রাজনীতিতে অতীতেও মেধার স্বাক্ষর রাখা এই ৬ জন হলেনÑ রুশনারা আলী, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, রূপা আশা হক, আনোয়ার বাবুল মিয়া, মিনা সাবেরা রহমান ও প্রিন্স সাদিক চৌধুরী।

এদিকে রুশনারা আলী ১৯৭৫ সালে সিলেট জেলার বিশ্বনাথে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র সাত বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে লন্ডনে অভিবাসিত হন তিনি। টাওয়ার হ্যামলেটে বেড়ে ওঠা রুশনারা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট জনস কলেজে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশোনা করেন। তারপর ক্রমে জড়িয়ে পড়েন বৃটিশ রাজনীতিতে।

আরও উল্লেখ্য, লেবার পাটির্র রুশনারা আলী হলেন এখন পর্যন্ত বৃটেনের প্রথম এবং একমাত্র বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সংসদ সদস্য। ২০১৫ সালের সংসদীয় নির্বাচনে বেশ কৃতিত্বের সঙ্গে বিজয়ী হয়ে বৃটেনের হাউস অব কমনসে জায়গা করে নিয়েছেন আর দুজন বাংলাদেশি কৃতী কন্যা সন্তান। তারা হলেন টিউলিপ সিদ্দিক এবং রুপা আশা হক।

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০১০ সালে রুশনারা আলী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ১১,৫৭৪ ভোট বেশি পেয়ে। সে সময় বৃটেনে মুসলিম এমপিদের মধ্যেও অন্যতম হিসেবে দৃষ্টি কাড়েন রুশনারা আলী। বর্তমানে বেশ সুনামের সঙ্গেই তিনি কাজ করে চলেছেন। কিছুদিন আগেই শ্যাডো মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তিনি সারা বিশ্বে আলোড়ন তুলেছিলেন।

এদিকে যুক্তরাজ্যে প্রথমবারের মতো ভোটে অংশ নেয়া তরুণদের জন্য ‘মাই ভয়েস, মাই ভোট’ প্রচারাভিযান শুরু করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো এমপি রুশনারা আলী। তরুণদের সামাজিক কর্মকা-ে অংশগ্রহণ বাড়ানো ও গণতান্ত্রিক কর্মকান্ডে সক্রিয় করতেই তার এই প্রচারণা এছাড়া রুশনারা আলীকে ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সবচেয়ে উজ্জ্বলতম দাবিদার বলে মনে করছে বৃটেনের প্রভাবশালী রাজনৈতিক পত্রিকা নিউ স্টেটসম্যান ম্যাগাজিনটি বৃটেনের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সম্ভাবনাময় যে ২০ জন এমপির নাম প্রকাশ করেছে তার মধ্যে রুশনারা আলীর স্থান সবার উপরে।

তাছাড়া ‘মিস আলী বৃটিশ পার্লামেন্টের একজন উদীয়মান তারকা’ শীর্ষক প্রচ্ছদ প্রতিবেদনে অনূর্র্ধ্ব ৪০ বয়সের ২০ জন এমপির তালিকা দিয়ে বলা হয়েছে, তাদের উজ্জ্বল রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ রয়েছে। তাদের মধ্য থেকে অনেকেই আগামীতে বৃটেনের মন্ত্রিসভায় স্থান করে নেবেন। এমনকি এদের মধ্য থেকেই বেরিয়ে আসবেন ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী। যুক্তরাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সেক্টরে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন বৃটিশ বাংলাদেশিরা। ব্যবসা-বাণিজ্য ও সামাজিক কর্মকান্ডে সাফল্য পেয়ে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিকরা এখন ধীরে ধীরে বৃটেনের মূল ধারার রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবেই এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হচ্ছেন। এর মাধ্যমে বিদেশে বাংলাদেশের মান-মর্যাদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আশা করছি, নিজ কর্মগুণ আর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা এবং বিচক্ষণতার সঙ্গে এগিয়ে চলা উপরোক্ত বাঙালিরা বৃটিশ বাংলাদেশি ইতিহাসকে আগামীতে আরও উজ্জ্বল করে তুলবে। আর এটাই বৃটেন প্রবাসীদের প্রত্যাশা। তাছাড়া তাদের এ কৃতিত্বে আমাদের তরুণ প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হয়ে তারাও বাংলার মুখ উজ্জ্বল করবে বলে আমার বিশ্বাস।

একটা সময় ছিল বৃটিশ বাংলাদেশিরা খুবই কষ্টের মধ্যে প্রবাস জীবন অতিবাহিত করেছেন। যা ভাবতেও কষ্ট হয়। ভাবতে পারেন আমি আবার এসব কেন টেনে আনছি। এসব টেনে আনার উদ্দেশ্য হলো বর্তমান প্রজন্মকে বুঝিয়ে দেয়া বা মনে করিয়ে দেয়া: আমরা বৃটেনে উড়ে এসে জুড়ে বসিনি। আমাদের বাপ-দাদাদের অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে আজ আমরা এখানে।

তাই শ্রদ্ধাভরে আমাদের পূর্বপুরুষদের বা উত্তরসূরিদের কথা মনে রেখে এগিয়ে যেতে হবে। একটা সময় ছিল আমাদের কমিউনিটির বেশির ভাগ মানুষ বেকার ছিল। তারা কাজের সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এমনকি সন্তানদের স্কুলে দেওয়াও অনেক সমস্যা ছিল। সত্তরের দশকের শেষের দিকে বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে সহিংসার মাত্রাও বেড়ে গিয়েছল।

অভিবাসন বিরোধী বেথনাল গ্রিন তখন সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। তারা তখন অভিবাসন বিরোধী লিফল্যাট বিতরণ করতো। স্কিন হেড বলে পরিচিত শ্বেতাঙ্গরা তখন ব্রিকলেনে ভাঙচুর করতো, বাঙালি শিশুদের লক্ষ্য করে থুতু ছিটাতো আর মহিলাদের নিগৃহ করতো। এদের ভয়ে শিশুরা আগেভাগেই স্কুল থেকে বেরিয়ে যেত, আর মহিলারা ও পুরুষরা দল বা জোট বেঁধে হাঁটাচলা এবং কাজকর্ম করতেন। পিতামাতা নিজেদের এবং সন্তানের নিরাপত্তার কথা ভেবে সন্তানদের উপর এক ধরনের কারফিউ জারি করে রাখতেন। আর বাড়িঘরকে অগ্নিসংযোগের হাত থেকে রক্ষা করতে আগুন প্রতিরোধী লেটার বক্স স্থাপন করে রাখতেন। এইভাবে চলছিল বাংলাদেশিদের জীবন চলা।

১৯৭৮ সালের ৭ই মে কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে আলতাব আলী নামের ২৫ বছরের এক তরুণকে অন্য ধর্মের তিন কিশোর হত্যা করে। একে জাতিগত উন্মাদনার ফল হিসেবেই ধরে নেয়া হয়। এ হত্যাকা-ের ফলে সেখানকার বাংলাদেশিরা একত্রিত হয়ে এ ধরনের হামলা প্রতিহত করার উদ্যোগ নেন এবং ন্যাশনাল ফ্রন্টের বিরুদ্ধে ব্রিকলেনে বাংলাদেশিরা প্রতিবাদ সমাবেশ করে।

এর ফলশ্রুতিতেই বাংলাদেশ ইয়ুথ মুভমেন্ট নামের সংগঠনের উৎপত্তি হয়। এবং ১৪ই মে প্রায় ৭০০০ মতো বাংলাদেশি জড়ো হয়ে আলতাব আলীর কফিন নিয়ে হাইড পার্কে জাতিগত সহিংসতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে়ন। তখন অনেক বাঙালি তরুণ স্থানীয়ভাবে সংঘটিত হয়ে স্কিনহেডদের ওপর চড়াও হতে শুরু করে।

আর তখন থেকে বৃটেনে বর্ণবাদী আন্দোলনের সঙ্গে আলতাব আলীর নাম জড়িয়ে আছে আর এখনও সেটা বৃটেনের মানবাধিকার আন্দোলনে বেশ শ্রদ্ধার। ভাবেন তো আমরা কোন অবস্থা থেকে আজ এ অবস্থানে। মনে রাখবেন যাদের আত্মত্যাগে আজ আমরা বেশ দাপটের সঙ্গেই এগিয়ে যাচ্ছি। নতুন প্রজন্মদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান থাকবে আপনারা নিজের জীবনকে প্রতিষ্ঠা করার সঙ্গে সঙ্গে দেশকেও গৌরবোজ্জ্বল করবেন।

এদিকে ব্যারোনেস মঞ্জিলা পলা উদ্দিন প্রথম বাংলাদেশি মুসলমান নারী হিসেবে হাউজ অব লর্ডসে প্রবেশ করেছেন। তিনি নিজের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী শপথও নিয়েছেন। আনোয়ার চৌধুরী ২০০৪ সালে বাংলাদেশে বৃটিশ হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। আর তিনিই প্রথম অশ্বেতাঙ্গ হিসেবে কূটনৈতিক পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন। বৃটেনের সবচেয়ে বড় মুসলিম কাউন্সিল অব বৃটেনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ড. মোহাম্মদ আবদুল বারী।

আর মুরাদ কুরেইশী লেবার দলের রাজনীতিবিদ হিসেবে গ্রেটার লন্ডন এসেম্বলিতে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া অনেকেই বৃটেনে মিড়িয়া, ব্যবসা বাণিজ্যে এবং আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বড় রকমের অবদান রেখে চলেছেন। যা গর্বের সঙ্গে আমাদের কমিউনিটিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কমিউনিটির সকলের প্রতি বিনীত অনুরোধ থাকবে: আমরা সব ভেদাভেদ ভুলে যেন একত্রে সংঘটিত হয়ে কাজ করতে পারি। তবে আমরা আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবো বলে আমার বিশ্বাস। মনে রাখবেন প্রবাসে আমাদের একটাই পরিচিতি, আমরা সবাই বাংলাদেশি।

বৃটেনের অর্থনীতিতে বাংলাদেশি কমিউনিটির অবদানের কথা স্বীকার করে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন। এখানকার কয়েক লাখ বাংলাদেশি সরাসরি এদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বৃটিশ বাংলাদেশিদের আরও ভাল ভাল কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন। তার সঙ্গে সঙ্গে তিনি এও বলেছেন বৃটিশ বাংলাদেশিরা একাডেমিক শিক্ষা ক্ষেত্রেও অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। জিসিএসি এবং এ লেভেল পরীক্ষায় ফলাফলের ক্ষেত্রেও শীর্ষ স্থান দখল করে যাচ্ছেন।

এমনকি উচ্চ শিক্ষায়ও বাংলাদেশিরা এগিয়ে। এছাড়া সম্প্রতি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ দল ইংল্যান্ডকে পরাজিত করায় তার কোন দুঃখ নেই উল্লেখ করে ডেভিড ক্যামেরন বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমকে অভিনন্দন জানান।

বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন আরও চমৎকার বাণী শুনিয়েছেন। বৃটেনে বাংলাদেশিরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, আগামী দিনে বৃটিশ বাংলাদেশিদের মধ্যে থেকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন। যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত বৃটিশ বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি এমন আশার কথা শুনিয়েছেন। যা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দারুণ উৎসাহ যোগাবে বলে আমার বিশ্বাস।

বৃটিশ বাংলাদেশি কমিউনিটির পক্ষ থেকে আমি নতুন প্রজন্মদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাবো। আমি দেখতে পাচ্ছি আপনাদের মাঝে এক শুপ্ত প্রতিভা লুকিয়ে আছে। যা শুধু প্রস্ফুটিত হওয়ার অপেক্ষায় আছে। আর এটা প্রস্ফুটিত হওয়া মানেই আপনার ও লাল সবুজের পতাকার গর্ব সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া। আর তাইতো আমার বিনীত এ আহ্বান, আপনারা আপনাদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ গৌরবোজ্জ্বল করবেন। তাছাড়া এখানে আপনারা যে সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন বাংলাদেশের তরুণ সমাজ তা পাচ্ছেন না। আমার কথা হচ্ছে এত সুযোগ-সুবিধা আপনারা কেন হাত ছাড়া করবেন।

আরও মনে রাখবেন সবার ভাগ্যে এমন সুযোগ আসে না বা অনেকে পায় না। আমার বিশ্বাস আপনারা যে যার জীবনের লক্ষ্যকে সামনে রেখে দৃঢ় মনোবল নিয়ে একটু কষ্ট করে যদি পড়াশুনা করেন তবেই আপনাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত বলে আমি মনে করি। আমাদের নতুন প্র্রজন্মরা সবকিছু বুঝার ক্ষমতা রাখে না তাই এ ব্যাপারে অভিভাবকদের দায়িত্ব হবে আপনাদের ছেলে মেয়েদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং সঠিক পথে পরিচালনা করা। তার সঙ্গে সঙ্গে খেলাধুলার প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করানোও আপনাদের দায়িত্ব। যা ভাল থাকার সহায়কও বটে।

মনে রাখবেন, গার্ডিয়ানদের গাইডেন্সের উপর বেশিরভাগ নির্ভর করবে সন্তনদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। ওরাতো আপনার আমার এমনকি একটা দেশ ও জাতির গর্ব। এখানেই শেষ নয় আমাদের ইহকাল ও পরকালেও ওদের ভূমিকা অনেক। আর তাই তো বুঝতেই পারছেন, সন্তানদের প্রতি কি করা আমাদের করণীয়। আশা করি এ ব্যাপারে সবাই সোচ্চার থাকবেন।

বৃটিশ বাংলাদেশিদের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের বহু দেশে বাংলাদেশিরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন এবং কত শত অবদান রেখে বাংলাদেশকে যেমন গর্বিত করছেন তেমনি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। আর তাতে করে গর্বের বাংলাদেশটা আরও অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু দারুণ কাল শাপ রাজনীতি সবকিছু গ্রাস করে নিচ্ছে। আর এটাই বাংলাদেশিদের একমাত্র দুর্ভাগ্য বলে প্রবাসীদের ধারণা। বৃটিশ প্রবাসী বাংলাদেশিরা এখন আর আগের মতো পিছিয়ে নেই। হাঁটি হাঁটি পা পা করে অনেক দূর এগিয়ে এসেছেন বেশ সুনামের সাথে।

এটা শুধু আমার একার কথা বা মন্তব্য নয়। বৃটেনের অনেক এমপি ও মন্ত্রী-মিনিস্টার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বার বার বলে যাচ্ছেন। যা বৃটিশ বাংলাদেশিদের এগিয়ে যেতে সহায়ক হবে বলে আমার বিশ্বাস। এ তো কিছুদিন আগেও লন্ডনের ইজলিংটন নর্থ থেকে নির্বাচিত এমপি জেরেমি করভিন ইজলিংটন বারার ইজলিংটন টাউন হলে বারার প্রথম বৃটিশ বাংলাদেশি মেয়র জিলানি চৌধুরীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেছিলেন।

বৃটেনে বৃটিশ বাঙালিদের অবদান ও অর্জনকে তুলে ধরতে কাজ করছেন বৃটিশ বাংলাদেশি বিজনেস ফোরামসহ আরও অন্যান্য অনেক মিডিয়া ব্যবস্থাপনার কর্ম কর্তারা, যাদের এ অবদান জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে। বৃটিশ বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে বিনীত অনুরোধ থাকবে আপনারা আরও ত্যাগ শিকার করে হলেও বাংলাদেশ তথা বৃটিশ বাংলাদেশিদের অবদানকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেবেন। আর এতে করে বৃটিশ বাঙালি নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা যোগাবে। এইতো আরও একজন কৃতিত্বমান বাংলাদেশি বৃটেনে রাজকীয় সম্মাননায় এমবিই মনোনীত হয়েছেন বাংলাদেশি রেস্তরাঁ সমিতির সভাপতি বজলুর রশীদ এমবিই। শীর্ষ পর্যায়ের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী হিসেবে অনন্য কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ নতুন বছরের আগমন উপলক্ষে বৃটিশ সরকারের পরামর্শে রাজ পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে এ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

পরিশেষে বলতে চাই, বৃটেনের শীর্ষ বেসামরিক রাজকীয় পদক বিজয়ী; বজলুর রশীদ এমবিই আরও একজন সফল বৃটিশ বাংলাদেশি। এরকম আরও কত নাম না জানা বৃটিশ বাংলাদেশি কৃতিত্বের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন এবং বেশ কৃতিত্বের সঙ্গে নিজের ও জাতির সম্মান বয়ে আনছেন। তাদের প্রতি থাকলো লাল সবুজের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

তাছাড়া আরও অনেক কৃতিমান বাংলাদেশী যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বেশ কৃতিত্বের সঙ্গে আছেন, কিন্তু আমার লিখার স্বল্পতার কারণে সবাইকে উল্লেখ করতে পারিনি বিধায় ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। সবাই যে যার অবস্থানে আছেন ভাল থাকবেন। এই শুভ কামনায় বিদায় চাইছি আমি।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025