আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেসে প্রথমবারের মত সিটি নেইবারহুড কাউন্সিল নির্বাচনে রেসিডেন্ট রিপ্রেজেনটেটিভ প্রার্থী হয়েছেন চার বাংলাদেশি আমেরিকান।
এই চার জনের তিন জনই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন লস এঞ্জেলেসের ডাউনটাউন সংলগ্ন বাংলাদেশি এবং কোরিয়ান অধ্যুষিত উইলশায়ার সেন্টার-কোরিয়া টাউন নেইবরহুড কাউন্সিল থেকে। এখানে ৫ মে অনুষ্ঠিতত হতে যাচ্ছে নির্বাচন।
মার্কিন মুল্লুকে দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অভিবাসীগণ। বিভিন্ন সিটিতে ক্রমশই তারা মূলধারার রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে পড়ছেন। মূলধারার এই রাজনৈতিক ধারাবাহিতায় আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম সিটি লস এঞ্জেলেসে প্রথমবারের মত সিটি নেইবারহুড কাউন্সিলে প্রার্থী হয়েছেন চার বাংলাদেশি ইমিগ্রান্ট।
এই নেইবারহুড কাউন্সিলের ৫টি সাব-ডিসট্রিক্টের তিনটিতে ‘রেসিডেন্ট রিপ্রেজেনটেটিভ’ প্রার্থী হয়েছেন যথাক্রমে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, নতুন প্রজন্মের উদীয়মান নেত্রী জেরীন ইসলাম এবং সাংবাদিক আহমেদ ফয়সাল।
মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম সাবডিসট্রিক্ট-২ থেকে তারই এক প্রতিবেশিনী হোয়াইট আমেরিকানের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। শহিদু একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সাথে স্নাতক ও সম্মান ডিগ্রী শেষ করে তিনি ১৯৮৩ যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। গত ৩৩ বছর ধরে তিনি ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস এঞ্জেলেসে বসবাস করছেন।
তিনি বিভিন্ন সোশ্যাল ও চ্যারিটি অর্গানাইজেশনের সাথে জড়িত এবং কমিউনিটির যেকোন ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। শহিদুল ইসলাম গত ২৫ বছর ধরে লস এঞ্জেলেসের লিটল বাংলাদেশ এরিয়ার হোবার্ট স্ট্রিটে নিজ বাসভবনে বসবাস করছেন। তার জন্মস্থান ঢাকা জেলার দোহার উপজেলায়।
উইলশায়ার সেন্টার কোরিয়াটাউন নেইবরহুড কাউন্সিলের সাব ডিসট্রিক্ট-৩ থেকে নির্বাচন করছেন জেরীন ইসলাম। তিনি ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নর্থরিজ থেকে মার্কেটিং এবং ইকোনমিক্সে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। পেশাগত জীবনে তিনি একজন রিয়েলটর, ট্যাক্স, ইমিগ্রেশন এবং কমিউনিটি অ্যাডভোকেট। তিনি উদীয়মান কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব সিটি পুলিশ পারমিট রিভিউ প্যানেল কমিশনার মারুফ ইসলামের সহধর্মিণী। জেরীন ইসলাম শৈশব থেকেই আমেরিকাতে বসবাস করে আসছেন। তার জন্মস্থান বাংলাদেশের সিলেটের বিয়ানীবাজার। ৫ ভাই ৪ বোনের মাঝে তিনি সর্বকনিষ্ঠ।
তিনি গিভিং হেল্প নামক চ্যারিটি অর্গানাইজেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন। জেরীন ইসলাম দুইজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, যাদের একজন গত দুই টার্ম (চার বছর) বোর্ড মেম্বার নির্বাচিত হয়ে আসছেন।
সাংবাদিক আহমেদ ফয়সাল (তুহীন) নির্বাচন করছেন কোরিয়ান এবং হিস্পানিক অধ্যুষিত সাব ডিসট্রিক্ট-৫ থেকে। প্রবাস জীবনের শুরু থেকেই তিনি কমিউনিটির বিভিন্ন ইস্যুতে জোরালো ভূমিকা রেখে চলেছেন। তিনি হিউম্যান রাইটস, সোশ্যাল, চ্যারিটি এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত।
আহমেদ ফয়সাল ছাত্রজীবন থেকেই সমাজকল্যাণ, মানবাধিকার ও মাদক বিরোধী সংগঠনে নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে যুক্ত থেকে সমাজ উন্নয়নে ভূমিকা পালন করেন। তিনি ১৯৯৫ সালে বরিশাল বি.এম কলেজ থেকে মাস্টার্স করেছেন। প্রায় এক যুগ ধরে তিনি স্বপরিবারে লস এঞ্জেলেসে বসবাস করছেন। আহমেদ ফয়সাল ঝালকাঠী জেলার নলছিটি উপজেলার মুখিয়া গ্রামের মাস্টার এ.কে মনসুর আহমেদ এবং ফাতেমা মনসুরের একমাত্র পুত্র। তিনি লস এঞ্জেলেসের ক্যোহেংগা ইলিমেন্টারি স্কুল কমিটির ভাইস চেয়ার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
৫০২.৭ বর্গমাইল আয়তনের লস এঞ্জেলেস সিটিটি প্রশাসনিকভাবে ১৫টি কাউন্সিল ডিসট্রিক্ট এবং ৯৬টি নেইবরহুড কাউন্সিলে বিভক্ত। নেইবরহুড কাউন্সিলের প্রতিনিধিরা সরাসরি পাবলিক ভোটে দুই বছরের জন্য নির্বাচিত হন।