বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৮:২৬

আল্লাহ শ্রেষ্ঠ কৌশলী: এ আয়াতের ব্যাখ্যা কি?

আল্লাহ শ্রেষ্ঠ কৌশলী: এ আয়াতের ব্যাখ্যা কি?

শায়খ মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ): আল্লাহ পাক নিজের সম্পর্কে বলেছেন, وَمَكَرُوْا وَمَكَرَ اللهُ وَاللهُ خَيْرُ الْمَاكِرِيْنَ- ‘তারা কৌশল করে, আল্লাহও কৌশল করেন। বস্ত্ততঃ আল্লাহ শ্রেষ্ঠ কৌশলকারী’- এ আয়াতের প্রকাশ্য বক্তব্য দেখে অনেকে এর মূল অর্থ বুঝতে সক্ষম হয় না। আর আমরা যেহেতু কোনরূপ তাবীলের প্রয়োজন বোধ করি না। অতএব কিভাবে আল্লাহ خَيْرُ الْمَاكِرِيْنَ হ’লেন?

উত্তর : আল্লাহর রহমতে বিষয়টি সহজ। নিশ্চয়ই আমরা এ বিষয়টি বুঝতে সক্ষম যে, ‘মকর’ সর্বাবস্থায় ‘মন্দ’ নয়। যেমন সেটা সর্বাবস্থায় ‘ভাল’ নয়। অনেক কাফের আছে, যে মুসলমানকে ধোঁকা দেয়। কিন্তু মুসলিম ব্যক্তি দূরদর্শী ও হুঁশিয়ার। সে আত্মভোলা ও বোকা নয়। সে তার প্রতিপক্ষ কাফেরের প্রতারণার বিষয়ে সতর্ক। ফলে সে তার প্রতারণার বিপরীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

ফল দাঁড়ায় এই যে, মুসলিম ব্যক্তি তার উত্তম কৌশলের সাহায্যে কাফের ব্যক্তির মন্দ কৌশলের প্রতিরোধ করে। সে অবস্থায় কি বলা যাবে যে, মুসলিম ব্যক্তির কাফেরের মুকাবিলায় কৌশল গ্রহণ করাটা অন্যায় কাজ হয়েছে? কেউ সেকথা বলবে না।

সহজে আপনারা এ বিষয়টি বুঝতে চেষ্টা করুন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর বক্তব্য থেকে। তিনি বলেছেন الْحَرْبُ خُدْعَةٌ ‘যুদ্ধ হ’ল ধোঁকা’।[1] এখানে ধোঁকা সম্পর্কে যে বক্তব্য ‘মকর’ বা কৌশল সম্পর্কেও পুরাপুরি একই বক্তব্য। নিঃসন্দেহে মুসলমানের জন্য অন্য মুসলমানকে ধোঁকা দেওয়া হারাম। কিন্তু যে কাফের আল্লাহ ও রাসূলের শত্রু, তাকে ধোঁকা দেওয়া হারাম নয়, বরং ওয়াজিব। অনুরূপভাবে কাফেরের বিরুদ্ধে মুসলমানের কৌশল করা, যে কাফের তার বিরুদ্ধে কৌশল করার পায়তারা করে- তার কৌশল ব্যর্থ করে দেওয়ার জন্য মুসলমানের কৌশল অবলম্বন করাটা উত্তম।

কেননা ইনি মানুষ, উনিও মানুষ। এক্ষণে এটা যদি সর্বশক্তিমান ও সর্বজ্ঞ আল্লাহর দিকে সম্পর্কিত হয়, তখন আমরা কি বলব? যিনি কৌশলকারীদের সকল কৌশল ব্যর্থ করে দিতে পারেন। আর একারণেই বলা হয়েছে وَاللهُ خَيْرُ الْمَاكِرِيْنَ ‘আল্লাহ শ্রেষ্ঠ কৌশলকারী’ (আলে ইমরান ৩/৫৪)। আল্লাহ যখন নিজের জন্য এই বিশেষণ গ্রহণ করেছেন, তখন বুঝা যায় যে, কৌশল করাটা এমনকি মানুষের জন্যেও সব সময় নিন্দনীয় নয়।

কেননা আল্লাহ خَيْرُ الْمَاكِرِيْنَ ‘শ্রেষ্ঠ কৌশলকারী’। অতএব সংক্ষেপে আমি বলব, আপনার অন্তরে যেসব কথার উদয় হয়, আল্লাহ তার বিপরীত। যখন মানুষ কোন কল্পনা করে যা আল্লাহর উপযুক্ত নয়, তখন তার জানা উচিত যে, সে পুরোপুরিই ভ্রান্ত। এক্ষণে আলোচ্য আয়াতটি আল্লাহর জন্য ‘প্রশংসা’। এর মধ্যে এমন কিছু নেই যা আল্লাহর দিকে সম্পর্কিত করা সিদ্ধ নয়।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025