বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৭:১৫

বৌদ্ধ ভিক্ষুদের আশীর্বাদে লেস্টারের শিরোপা জয়

বৌদ্ধ ভিক্ষুদের আশীর্বাদে লেস্টারের শিরোপা জয়

শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: ১২৬ বছরের ক্লাব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের শীর্ষ লীগের শিরোপা জিতেছে লেস্টার সিটি। আর এর পেছনে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের প্রার্থনা ও আশীর্বাদ কাজ করেছে বলে মনে করেন থাইল্যান্ডের অধিকাংশ ফুটবলপ্রেমী। ইংল্যান্ড থেকে ৬ হাজার কিলোমিটার দূরে থাইল্যান্ড। এবার ইংলিশ লীগে লেস্টারের শিরোপা জয়ে বিশ্বের সবচেয়ে আনন্দিত দেশ থাইল্যান্ড।

ইংল্যান্ডের এই ক্লাবটির শিরোপা নিশ্চিত হওয়ার পর থাইল্যান্ডের শতশত ফুটবলপ্রেমী রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে। নেচে-গেয়ে উল্লাস করে। প্রিয় দলের শিরোপা জয়ে মিষ্টিমুখ করে। কিন্তু ইংল্যান্ডের একটি ক্লাবের শিরোপা জয়ে সুদূর থাইল্যান্ডে আনন্দবন্যা কেন?

কারণটা খুবই সরল। তাদের দেশের ধনবকুবের ভিচাই শ্রীভাদ্দানাপ্রভা ক্লাবটির চেয়ারম্যান। তিনি একজন ধার্মিক বৌদ্ধ। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের প্রতি তার বিশ্বাসটা প্রবল। ক্লাবের কল্যাণ কামনায় গত তিন বছর থাইল্যান্ড থেকে তিনি ডজন ডজন বৌদ্ধ ভিক্ষু ইংল্যান্ডে নিয়ে গেছেন। তারা প্রতিটি ম্যাচের আগে খেলোয়াড়দের জন্য প্রার্থনা করতেন। এমন কি বেশ কয়েকবার বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ফুটবল মাঠেও দেখা গেছে। ফুটবলারদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়ার শুভকামনার ছবিও মিডিয়ায় এসেছে।

এতে থাইল্যান্ডে একচেটিয়ে সমর্থন পেয়েছে লেস্টার সিটি। ক্লাবটির শিরোপা জেতায় পৃথিবীর সবচেয়ে আনন্দিত দেশ এখন থাইল্যান্ড। ক্লাবের ৫৮ বছর বয়সী চেয়ারম্যান ভিচাই একজন বিয়ার ব্যবসায়ী। থাইল্যান্ডের শীর্ষ বৌদ্ধ ভিক্ষু ফ্রো প্রোমাংকালাচানের একনিষ্ট ভক্ত তিনি। ক্লাবের সাফল্যের জন্য তার কাছে নিয়মিত আশির্বাদ চাইতেন চেয়ারম্যান ভিচাই। তাকে ইংল্যান্ডে নিয়ে গিয়ে আলাদা বিশেষ প্রার্থনার ব্যবস্থাও করিয়েছেন তিনি।

আর লেস্টারের এই শিরোপা জয়ের পেছনে এইসব বৌদ্ধ ভিক্ষুদের আশির্বাদ বড় অবদান রেখেছে বলে মনে করেন থাইল্যান্ডের জনগন। ৬৩ বছর বয়সী বৌদ্ধ ভিক্ষু প্রোমাংকালাচানও তেমনটাই মনে করেন। লেস্টারের শিরোপা জয়ের পর লন্ডনভিত্তিক ‘ডেইলি টেলিগ্রাফ’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এটা কোনো জাদু নয়। আমরা শুধু আধ্যাত্মিক সমর্থন দিতে পারি। বিশ্বাস করি-আমাদের এই আধ্যাত্মিক প্রার্থনা দলের খেলোয়াড়দের সুস্থ থাকতে সাহায্য করেছে। এর প্রভাবেই খেলোয়াড়রা ইনজুরিতে পড়েনি এবং খেলায় পুরোপুরি মননিবেশ করে ভাল নৈপুণ্য দেখাতে পেরেছে।’

ক্লাবের চেয়ারম্যান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ভিচাইয়ের ভালকর্ম পৃথিবীব্যাপী সমর্থক পেতে তাকে সাহায্য করেছে। তার ভালকর্মের কারণেই লেস্টার এখন এত শক্তিশালী।’ এই বৌদ্ধ ভিক্ষু সপ্তাহ দুই আগে ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন- এবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা জিতবে লেস্টার সিটি। তখনও মৌসুমে তাদের বাকি ছিল ৪ ম্যাচ। কিন্তু তার এই ভবিষ্যতবাণী অক্ষরে-অক্ষরে মিলে যাবে তা কে জানতো!

অথচ মৌসুমের শুরুতে লেস্টারের শিরোপা জয়ের পক্ষে বাজি ধরার মতো লোক ছিল না। তাদের শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা ছিল ৫ হাজার বারে একবার। ২০১০ সালে অনেকটা বাজি ধরে লেস্টার সিটি কিনে নেন ভিচাই। তখন ক্লাবটির অবস্থা ছিল ত্রাহিত্রাহি। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় বিভাগে টিকে থাকাটাই দয়। কিন্তু দারুণ কৌশলী ভিচাই ক্লাবটিকে এই পর্যায়ে উন্নীত করেছেন। লেস্টারকে শিরোপা এনে দেয়ার অন্যতম নায়ক ফরোয়ার্ড জেমি ভার্ডি।

তিনি থাই জনগণ ও ভিক্ষুদের এই বিশ্বাস নিয়ে বলেন, ‘এটা থাই মানুষের সংস্কৃতি ও বিশ্বাস। তাদের জন্য এমন উপহার দিতে পেরে আমরা খুশি।’




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025