শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: কম্পিউটার অপারেটর দিয়ে চলছে আইসিটি ক্লাস। বেশির ভাগ স্কুলে চলছে এভাবেই। এ অবস্থায় খুঁড়িয়ে চলছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষা। কাগজে কলমে পাস করলেও প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ৫ বছর আগে আইসিটি শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হলেও অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের এখনও এ বিষয়ের শিক্ষক নেই। তাই বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাড়া করা কম্পিউটার অপারেটর দিয়ে চলছে পাঠদান। কোথাও অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক নামেমাত্র ক্লাস নিয়ে দিন পার করছেন। বাধ্য হয়ে প্রাইভেট টিউটরের শরণাপন্ন হচ্ছে তারা।
২০১০ সালে শিক্ষানীতিতে আইসিটিকে বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের এই বিষয়ে শিক্ষক থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান শিক্ষক নিয়োগ দিলেও এমপিও না হওয়া, জাল সার্টিফিকেট চাকরির কারণে পুরো আইসিটি শিক্ষায় লেজে গোবরে অবস্থা তৈরি হয়েছে। শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের আলোকে ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এরপর পর্যায়ক্রমে ২০১২ শিক্ষাবর্ষ ও ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নামক নতুন বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত ও বাধ্যতামূলকভাবে পাঠ্য করা হয়েছে। মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান তিন বিভাগেই বিষয়টি বাধ্যতামূলক। বাধ্যতামূলক করেই সরকার তার দায়িত্ব শেষ করেছে। কিছু শিক্ষককে কোনোরকম প্রশিক্ষণ দিয়েছে, কিন্তু শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। আবার বেসরকারি অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ হলেও বছরের পর বছর ধরে এমপিওভুক্ত বন্ধ রয়েছে।
শিক্ষকরা বলছেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে আইসিটি সেক্টরকে সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করলেও এই শিক্ষা চলছে জোড়াতালি দিয়ে। বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হলেও দীর্ঘ আড়াই বছরে কোনো স্কুলের আইসিটির শিক্ষক এমপিওভুক্ত হতে পারেননি।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সূত্র জানায়, দেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় ২৭ হাজার। এর মধ্যে ১৪ হাজার স্কুল-কলেজ ও মাদরাসায় আইসিটি বিষয়ের শিক্ষক নেই। বাকি ১৩ হাজার প্রতিষ্ঠানে আইসিটি বিষয়ের শিক্ষক থাকলেও ১২শ’ শিক্ষক সরকারের বেতন-ভাতা সুবিধা পান না। সারা দেশে মোট ৩৩৩টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ১৮টি সরকারি উচ্চমাধ্যমিক/ইন্টারমিডিয়েট কলেজের সবগুলোতে চলছে আইসিটি ও কম্পিউটার শিক্ষক ছাড়া।
একাধিক সরকারি হাইস্কুল ও কলেজের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার অপারেটররা কখনও খণ্ডকালীন ভাড়াটে কম্পিউটার অপারেটর দিয়ে এ বিষয়ে পাঠদান চলছে। এ বিষয়ে মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর ইলিয়াছ হোসেন বলেন, এই বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
একই সঙ্গে গত দু’দিন আগে এ বিষয়ে একটি মিটিংও হয়েছে। সেখানে বেশ কিছু প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি মাউশিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশি অধিদপ্তরের সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আইসিটি/কম্পিউটার বিষয়ের অপেক্ষমাণ শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি প্রদানের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।