নিউজ ডেস্ক: পানামা দুর্নীতি সংক্রান্ত সমস্ত নথিপত্র অনলাইনে প্রকাশ করে দিল অনুসন্ধানকারী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন আইসিআইজে। সোমবার থেকে তাদের ওয়েবসাইট অফশোরলিকস ডট আইসিআইজে ডট ওআরজিতে গেলেই এই নথিপত্র দেখতে পাবেন সাধারণ মানুষ।
বিশ্বের বিখ্যাত প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বিনিয়োগ করেছেন এমন দুই লক্ষ সংস্থার নাম ও বিস্তারিত তথ্য রয়েছে সেখানে। পানামার মোসাক ফনসেকা নামের এক কর পরামর্শদাতা সংস্থা থেকে ওই নথি হস্তগত করে একটি জার্মান সংবাদ সংস্থা। তারাই সমস্ত নথিপত্র খতিয়ে দেখার জন্য বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার হাতে তুলে দেয়। এতে বিশ্ব জুড়ে গত ৪০ বছরের বহু অবৈধ লেনদেনের হদিশ মিলেছে।
এদিকে ওইসব তথ্য সকলের সামনে আনার প্রতিবাদ করেছে মোসাক ফনসেকা। এতে গ্রাহকদের গোপনীয়তা লঙ্ঘন হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ। কিন্তু আইসিআইজে–র অন্যতম কর্মকর্তা মারিনা ওয়াকার গুয়েভার জানিয়েছেন, সত্যিটা সকলের সামনে আসা দরকার। কোন সংস্থায় কত টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন ওই ব্যক্তিরা তা নিয়ে জনগণের স্বচ্ছ ধারণা থাকা দরকার।
গোটা বিশ্বের প্রায় ১০০টি সংবাদ সংস্থার উদ্যোগে সামনে আসা এই পানামা দুর্নীতি আলোড়ন ফেলেছে। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং, বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের নামও জড়িয়েছে। নাম রয়েছে মিশরের প্রাক্তন শাসক হোসনি মুবারক, লিবিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার গাদ্দাফি, আর্জেন্টিনার ফুটবলার লিওনেল মেসিরও। অমিতাভ ও ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন–সহ প্রায় ৫০০ ভারতীয়র বিরুদ্ধেও এই দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। নড়েচড়ে বসেছে ভারত সরকার। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন সংস্থাকে নিয়ে একটি তদন্তকারী দলও গঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশীদের তালিকা
বাংলাদেশীদের তালিকায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাফরউল্যাহ ও নীলুফারের নাম দেখা গেছে। জাফরউল্যাহ ও নীলুফারকে বৃটিশ ভার্জিনিয়া আইল্যান্ডে নিবন্ধিত পাথফাইন্ডার ফিন্যান্স এবং হ্যানসিটিক লিমিটেডের পরিচালক বা অংশীদার হিসেবে দেখানো হয়েছে।
এই তথ্যভাণ্ডারে নাম রয়েছে সিটিসেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহবুব চৌধুরীর, যিনি আগে গ্রামীণফোনেও কাজ করেছেন।
তালিকায় রয়েছে আইজিডাব্লিউ অপারেটর সেল টেলিকমের কফিল এইচ এস মুয়ীদ, এক্সেসটেলের মালিক জাইন ওমর, কিউবির অংশীদার আফজালুর রহমান, টেকনোমিডিয়ার মালিক সরকার জীবন কুমারের নাম।
বাংলাট্রাকের মালিক আমিনুল হক, তার ছেলে নাজিম আসাদুল হক ও তারিক একরামুল হকের নামও এসেছে।
সিটিসেলের সাবেক চেয়ারম্যান আজমাত মঈনও এর মধ্যে রয়েছেন।
আব্দুল মোনেম গ্রুপের এ এস এম মহিউদ্দিন মোনেম এবং আসমা মোনেমের নামও রয়েছে এই তালিকায়। তথ্য ভাণ্ডারে থাকা এদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া অন্যদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নাম রয়েছে দিলীপ কুমার মোদি, মল্লিক সুধীর, কাজী রায়হান জাফর, মো. ইউসুফ রায়হান রেজা, মাহতাবউদ্দিন চৌধুরী, বেনজির আহমেদ, ইসরাক আহমেদের।
নোভেরা চৌধুরী, সৈয়দা সামিনা মির্জা, উম্মে রুবানা, বিলকিস ফাতিমা, সালমা হক এই নারীদের নাম রয়েছে তালিকায়।
এছাড়াও ফরহাদ গনি মোহাম্মদ, মো. আবুল বাশার, নিজাম এম সেলিম, মোহাম্মদ মোকসেদুল ইসলাম, মো. মোতাজ্জারুল ইসলাম, মো. মোতাজ্জারুল ইসলাম, মো. সেলিমুজ্জামান, সৈয়দ সেরাজুল হক, এফ এম জুবাইদুল হক এই নামগুলো এসেছে।
তথ্য ভাণ্ডারে রয়েছে ক্যাপ্টেন এম এম জাউল, মোহাম্মদ শহীদ মাসুদ, খাজা শাহাদত উল্লাহ, মোহাম্মদ ফয়সাল করিম খান, মোহাম্মদ শহীদ মাসুদ, জুলফিকার হায়দার, মির্জা এম ইয়াহিয়া, মো. নজরুল ইসলাম, মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম, এফ এম জুবাইদুল হক, এ এফ এম রহমাতুল বারী, খাজা শাহাদাত উল্লাহ এই নামগুলোও।