আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশী এক আয়া সুফিয়া আকতারের কথা ভুলতে পারে না এক আমিরাতি পরিবার। কারণ, ওই পরিবারের চার সন্তানকে ডুবে মরার হাত থেকে বাঁচাতে দু’বছর আগে নিজের জীবন দিয়েছিলেন ওই আয়া। আজ রোববার অনলাইন গালফ নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, আবু ধাবির দাবায়া সমুদ্র সৈকতে সপ্তাহের এক ছুটির দিনে ২০১৪ সালের ২৪শে অক্টোবর পরিবার নিয়ে পিকনিক করতে গিয়েছিলেন আবু আবদুল্লাহ। সেখানে অকস্মাৎ গভীর পানিতে পড়ে যায় তার চার সন্তান। সুফিয়া আকতার নামে বাংলাদেশী ওই আয়া তার সন্তানদের দেখাশোনা করতেন। তিনি দেখতে পান বাচ্চারা পানিতে পড়ে গেছে। ডুবে যাচ্ছে তারা। সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাদেরকে উদ্ধারের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন পানিতে। আবু আবদুল্লাহর সন্তানদের জীবন রক্ষা করতে পেরেছেন সুফিয়া।
কিন্তু সমুদ্রের ঢেউ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেন নি তিনি। গভীর সমুদ্রে ভেসে যান সুফিয়া। তাকে উদ্ধারে সমুদ্রে ঝাঁপ দেন তাকে উদ্ধার করতে। তিনিও ব্যর্থ হন। এক পর্যায়ে সমুদ্রের ঢেউ তাকে তীরে ভাসিয়ে আনে। সবাই মিলে চেষ্টা করেন সুফিয়ার চেতনা ফেরাতে। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মাফরাক হাসপাতালে। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। মারা যান সুফিয়া। তার অবদানের কথা এখনও স্মরণ করেন আবদুল্লাহর পরিবার। সুফিয়ার আত্মদানের জন্য বাংলাদেশে তার আত্মীয়-স্বজনদের এখন সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে আবদুল্লাহর পরিবার।
আবদুল্লাহর মা বলেন, সুফিয়া ছিলেন অতিশয় নম্র। তাদের পরিবারের সঙ্গে তিনি ছিলেন ঘনিষ্ঠ। দেশে অবস্থানরত তার চার সন্তানের উন্নত জীবনের জন্য তিনি কঠোর পরিশ্রম করতেন। আবু আবদুল্লাহ বলেন, আমি সব সময়ই সুফিয়া ও তার পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি আমাদের সঙ্গে চারটি বছর ছিলেন। এ সময়ে আমাদের আস্থা অর্জন করেছিলেন। তার সাহস ও আত্মত্যাগের জন্য আমার সন্তানরা রক্ষা পেয়েছে। সুফিয়া সব সময়ই বলতেন বাসায় বাচ্চাদের শাস্তি না দিতে, যদিও তারা কোন অন্যায় করে।