শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: বাংলা চলচ্চিত্রের এক নক্ষত্রের নাম সালমান শাহ। যিনি হুট করে এসে বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শকদের মন জয় করে মাত্র চার বছরের মাথায় চলে গিয়েছিলেন। অকাল প্রয়াত এই জনপ্রিয় নায়কের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের জাল এখনো ছিঁড়লো না। আত্মহত্যা করেছিলেন নাকি খুন হয়েছিলেন চিত্রনায়ক সালমান শাহ? এ প্রশ্নের উত্তর এখনো খোঁজেন সালমান ভক্তরা।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটনের নিজ ফ্ল্যাটে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিলো তার লাশ। বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করলেও সালমান শাহ’র ভক্তরা সেটা মেনে নেননি। বিভিন্ন সময় অনেকেই দাবী করেছেন সালমান শাহকে খুন করা হয়েছে।
সালমানের ঘণিষ্ঠ অনেকেই দাবি করেছেন স্ত্রী সামিরার গোপন প্রেমের জন্যই প্রাণ দিতে হয়েছে এ চিত্রনায়ককে। পরবর্তী সময়ে সালমানের পরিবার থেকে সামিরা ও আরো কয়েকজনকে আসামী করে থানায় হত্যা মামলাও দায়ের করা হয়েছিলো। কিন্তু কোন এক অজানা কারণে সেটি নিয়ে পরবর্তীতে তেমন কোন অগ্রগতি চোখে পড়েনি।
সালমান শাহর মরদেহের পাশ থেকে যে সিগারেট পাওয়া যায় সেটি সালমান শাহ খেতেন না বলে দাবি করেন তার মা নীলা চৌধুরী। অন্য ব্র্যান্ডের সিগারেট কে খেয়েছিলো সেদিন সালমান শাহ’র ঘরে? ফ্ল্যাটের প্রতিবেশীরা জানিয়েছিলেন সেদিন ধস্তাধস্তির শব্দ শুনেছেন তারা। সালমান শাহকে দ্রুত হাসপাতালে না নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। এমন অনেকগুলো বিষয়ই এখনো রহস্য ছড়িয়ে রেখেছে ঢাকাই চলচ্চিত্র অঙ্গনের এই একটি মৃত্যুকে ঘিরে।
কে ছিলো সেদিন সালমান শাহ’র ঘরে? আত্মহত্যা করেন নি, তবে কে খুন করেছেন সালমান শাহকে? বিভিন্ন সময় গুঞ্জন উঠেছে এক প্রভাশালী চলচ্চিত্র প্রযোজকের সঙ্গে গোপন সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন সালমান শাহ’র স্ত্রী সামিরা। এদিকে শাবনূরের সঙ্গে সালমান শাহ’র গোপন প্রেমের কথাও শোনা গিয়েছে। এই চতুর্ভূজ প্রেমের জের ধরেই কি খুন হয়েছিলেন সালমান শাহ? নাকী আত্মহত্যাই করেছেন সবার প্রিয় নায়ক।
সালমান শাহ’র মা নীলা চৌধুরী শুরু থেকেই বলে আসছিলেন এটি নিছক আত্মহত্যা নয়, তাকে খুন করা হয়েছে। কিন্তু পোস্ট মর্টেম রিপোর্টে আত্মহত্যা বলেই উল্লেখ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। ফলে রহস্যই থেকে যায় সালমান শাহ’র মৃত্যু রহস্য। তবে এবার সালমান শাহ’র মা নীলা চৌধুরী সেই হত্যার রহস্য একটু জোরালো ভাবেই প্রকাশ করেছেন। গত ১৫ মে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সালমান শাহ’র মৃত্যুর জন্য স্ত্রীর পরকীয়াকে দায়ী করেছেন।
সালমান শাহকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে নীলা চৌধুরী বলেন, মৃত্যুর পর দেখা গেছে তার শরীরে কোনো ক্ষত চিহ্ন নেই। খালি ইঞ্জেকশন পুশ করে এবং গলায় চাপ দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আর এই হত্যার সঙ্গে সালমানের স্ত্রী সামিরা জড়িত। তিনি বলেন, সামিরা ও তার পরিবারকে আমার পাশে কোনো সময় দাঁড়াতে দেখিনি। এমনকি সালমান শাহ’র ঘরে তার স্ত্রীকেও তার কাছে পাইনি। সামিরা এখন সালমান শাহ’র এক বন্ধুর স্ত্রী হিসেবে ঘর-সংসার করছে। এটা কি প্রমাণ করে না যে সামিরা’র পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল? নীলা চৌধুরী বলেন, ওই সময়ে চলচ্চিত্রাঙ্গনে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল সালমান শাহর। অন্য কারও সিনেমা চলতো না। এতে একটা গ্রুপ তার শত্রুতে পরিণত হয়। আর তারাই আমার ছেলেক হত্যা করেছে। সেদিন এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন নীলা চৌধুরী।