স্বদেশ জুড়ে নিউজ: লোকাল গ্রোয়িং মাল্টিন্যাশনাল কর্পোরেট কোম্পানির দাবির আড়ালে কর্পোরেট কৌশলে গরীব ঠকানোর ব্যবসা শুরু করেছে রহিমআফরোজ গ্রুপ। রুরাল সার্ভিসেস ফাউন্ডেশন (আরএসএফ) নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা শোষণ করছে তারা।
রহিমআফরোজ গ্রুপের কর্তারা বিভিন্ন সময়ে এই প্রতিষ্ঠানকে সামাজিক দায়বদ্ধতার (সিএসআর) অংশ হিসেবে দাবি করে। কিন্ত বাস্তব চিত্র আলাদা। শুধু তাই নয়, আরএসএফ প্রতিবছর ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসে ‘পরিবেশ উৎসব’ আয়োজন করে। আর এখানেও কোটি টাকার খেলা হয়। কারণ স্পন্সর বাবদ আয়, আর উপরি আয়ের অংশ পায় বড় কর্তারা। উৎসবের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজন করে। পরিবেশ উৎসবে পুরস্কার দেওয়া হয়। সবকিছুই করা হয় কোম্পানির স্বার্থে, আর বলা হয় অলাভজনক।
জানা যায়, রহিমআফরোজের অর্থায়নে ২০০৬ সালে যাত্রা শুরু করে আরএসএফ। প্রতিষ্ঠানটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও জয়েন্ট স্টক কোম্পানি থেকে একটি অলাভজনক কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত হয়। এই কোম্পানিটি কোনো এনজিও নয়, এটি নন প্রফিট কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত। কিন্ত পণ্য বিক্রি করে ব্যবসা করছে। আর নিম্নমানের পণ্য দিচ্ছে গ্রামে। আরো জানা যায়, রুরাল সার্ভিসেস ফাউন্ডেশন দু’টি স্কুল পরিচালনা করছে। একটি বগুড়ায়, আরেকটি ঢাকার আশকোনায়। দেশব্যাপী ৫০০ ফিল্ড অফিসের মাধ্যমে সৌরবিদুৎ, বায়োগ্যাস নিয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে সিস্টেম পুরোপুরি শোষণের। কিস্তি তুলে গরিবদের টাকা শোষণ করছে এই প্রতিষ্ঠানটি। এজন্য তারা প্রত্যন্ত এলাকাকে বেছে নিচ্ছে।
আরএসএফ দেশকে দশটি জোনে ভাগ করেছে। তাদের রিজিওনাল অফিস ৭৫টি। ৫০০টি ইউনিট অফিস। আরএসএফ প্রথমত বেছে নেয় অনুন্নত ও বিদ্যুৎবিহীন এলাকাকে। নানাভাবে বুঝিয়ে ও প্রলোভন দেখিয়ে গ্রামের মানুষকে একটি সোলার সিস্টেমের জন্য ডাউন পেমেন্ট নেয়। তারপর ৩ বছরে মাসিক কিস্তিতে টাকা পরিশোধের কথা বলে কিস্তিতে টাকা নেওয়া শুরু করে। আর এভাবেই গ্রামের মানুষকে বোকা বানিয়ে রহিমআফরোজের অচল মাল বিক্রি করে। না বুঝেই রহিমআফরোজের সর্বনাশের ফাঁদে আটকা পড়ে সাধারণ মানুষ।
২০১২ সালের জরিপ অনুযায়ী, আরএসএফ দাবি করে- তারা ২ লাখ ৭০ হাজার বাড়িতে সৌরবিদুৎ সংযোগ দিয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৫০ বাড়িতে বায়োগ্যাস, ৫ হাজার বাড়িতে উন্নত চুলা স্থাপন করেছে। গড়ে প্রতিমাসে ১০ হাজারের অধিক বাড়িতে সৌরবিদ্যুৎ লাগানো হচ্ছে। এই কাজে ৩ হাজার ২০০ কর্মী কাজ করছে। তাদের হিসেব অনুযায়ী, প্রথমে খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলায় কাজ শুরু করলেও এখন ৬৪টি জেলা, ৪১৬টি উপজেলা ও ১৭ হাজার গ্রামে কাজ করছে। আর এতবড় নেটওয়ার্ক আর কর্মপরিধি ব্যবহার হচ্ছে অশিক্ষিত ও গরীব মানুষের টাকা শোষণে।
Leave a Reply