বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ০৬:৩৫

টানা তিন দিন কাজ করে মারা গেলেন এক শিক্ষানবিশ

টানা তিন দিন কাজ করে মারা গেলেন এক শিক্ষানবিশ

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যুক্তরাজ্যে টানা ৭২ ঘণ্টা অর্থাৎ তিন দিন কাজ করার পর মরিত্জ এরহার্ডট নামের ২১ বছর বয়সী এক শিক্ষানবিশ মারা গেছেন। তিনি ব্যাংক অব আমেরিকা মেরিল লিনচে সাত সপ্তাহের জন্য শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করছিলেন। শিক্ষানবিশের শেষ পর্যায়ে তিনি মারা গেলেন। গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের দ্য ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকায়  প্রকাশিত খবরে এ তথ্য জানা যায়।

গতকাল ভোর ছয়টা পর্যন্ত টানা তিন দিন কাজ করছিলেন। এরপর তিনি নিজের ফ্ল্যাটে ফিরে যান। পরে একই ফ্ল্যাটের সঙ্গীরা তাঁর লাশ আবিষ্কার করেন। পীড়নকর কাজের চাপে ওই শিক্ষানবিশের মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর নগরের বিনিয়োগকেন্দ্রিক ব্যাংকগুলোতে কর্মঘণ্টা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

অর্থনীতিবিষয়ক জনপ্রিয় ব্লগ ওয়ালস্ট্রিটওয়াসিস ডটকমে একজন লিখেছেন, ফ্ল্যাটে মরিৎজের সঙ্গে থাকা লোকজন শাওয়ারের নিচ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে। ক্যারিয়ারবিষয়ক পরামর্শক গ্রুপ ফাইন্যান্সইনটারনস দীর্ঘ সময়ের কাজের এই সংস্কৃতির নিন্দা জানান। তরুণেরা গ্রীষ্মকালীন শিক্ষানিবশের কাজ পেয়ে উত্ফুল্ল হয়ে ওঠেন। তাঁরা মনে করেন, এর মধ্য দিয়ে হয়তো তাঁর স্বপ্ন পূরণ হবে। কিন্তু পীড়নকর এই কাজের চাপে এই তিন মাস তাঁদের জীবনের সবচেয়ে বাজে সময় হয়ে দাঁড়ায়।

মরিৎজের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা না গেলেও পুলিশ বিষয়টিতে মরিৎজের ফ্ল্যাটের লোকজনকে সন্দেহের তালিকায় রাখেনি। তবে বিভিন্ন খবরে বলা হয়, জার্মানির ফ্রেইবার্গের মরিত্জ মৃগী রোগে ভুগছিলেন। তিনি মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসাপ্রশাসন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। যুক্তরাজ্যে গ্রীষ্মের ছুটিতে সাত থেকে ১০ সপ্তাহের জন্য বিভিন্ন ব্যাংকে শিক্ষানবিশ হিসেবে বর্তমানে কাজ করছেন প্রায় ৩০০ জন।

নাম প্রকাশ না করে একজন শিক্ষানবিশ ‘দ্য ইনডিপেনডেন্ট’কে বলেন, আমরা সবাই দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করি। কিন্তু মরিত্জ সব সময়ই রাত তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত কাজ করতেন। বিনিয়োগ শাখায় কর্মরত মরিৎজের মতো সব শিক্ষানবিশকে এমন দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতে হয়। বিপণন শাখার লোকজনেরও ভোর ছয়টা পর্যন্ত থাকার কথা থাকলেও তাঁরা থাকেন না। তাই আসলে অফিস থেকে বের হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে তাঁর বিভাগের ওপর।

লন্ডনভিত্তিক হূদরোগবিশেষজ্ঞ অসীম মালহোত্রা শিক্ষানবিশদের অমানুষিক কাজের ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা যদিও এই  মৃত্যুর কারণ জানি না। এর পরও দেখা গেছে, অতিরিক্ত কাজ, বিশেষ করে রাতে কাজ করলে তা স্বাস্থ্যের জন্য অতিরিক্ত ঝুঁকি হয়ে দাঁড়ায়। গত বছর চিকিত্সা সাময়িকী ‘বিএমজে’তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, যাঁরা রাতে কাজ করেন, তাঁদের হূদরোগ ও স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। সম্ভবত ঘুমের ঘাটতি ও চাপের কারণে এমন হতে পারে।

ব্যাংক অব আমেরিকা মেরিল লিনচের পক্ষ থেকে মরিৎজের কর্মঘণ্টা বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। ব্যাংকের আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিভাগের প্রধান জন ম্যাইভার বলেন, আমরা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছি। তবে ব্যাংকের বিনিয়োগ শাখায় কর্মীরা দীর্ঘ সময় কাজ করেন কি না, জানতে চাইলে তিনি ইতিবাচক সাড়া দেন।

 




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025