শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: ভারতের উত্তর প্রদেশের মুজাফফরনগর জেলায় কারফিউ ও সেনা টহলের মধ্যে নতুন সংঘর্ষের ঘটনায় আরো ১৩ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে দুদিনের সহিংসতায় নিহতের মোট সংখ্যা দাঁড়ালো ২৬ জনে। বার জেলার ছয়টি গ্রামে আলাদা আলাদ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
গত মাসে সংঘটিত তিন যুবকের হত্যাকাণ্ড নিয়ে ঘটনা শুরু হয়। দাবি করা হচ্ছে, এক নারীকে হেনস্থা থেকে রক্ষার চেষ্টার সময় ওই যুবকদের খুন করা হয়। এই খুনের বিচারের দাবিতে শনিবার নাগলাবাধোদ এলাকায় কয়েক হাজার হিন্দু কৃষক এক সমাবেশ করে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।
ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইট ফেইসবুকে এক যুবকের হত্যাকাণ্ডের মিথ্যা ভিডিও পোস্ট করে উত্তেজনা ছড়িয়ে দাঙ্গা বাঁধানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইউটিউব ও অন্যান্য সামাজিক যোগযোগ নেটওয়ার্কে ভুয়া ভিডিও পোস্ট করে উত্তেজনা ছড়ানো হয়েছে। ভিডিওটি ব্লক করা হয়েছে এবং কে এটি আপলোড করেছে তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা অরুণ কুমার। ভিডিওটি দুই বছরের পুরনো এবং এটি দেখে উত্তর প্রদেশের ঘটনা বলেও মনে হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, শান্তি বজায় রাখার জন্য আমি সবার কাছে আবেদন জানাচ্ছি, কোন গুজবে কান দেবেন না বা গুজবে বিশ্বাস করবেন না।
এদিকে পুরো উত্তর প্রদেশে রাজ্যজুড়ে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে দেড়শ’ কিলোমিটার উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় জেলা মুজাফফরনগরের ঘরে ঘরে তল্লাশি চালাচ্ছেন সেনা সদস্যরা। মুজাফফরনগরসহ তিনটি জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। এই সমাবেশ থেকে ফেরার পথে তিন কিলোমিটার দূরে কাওয়াল এলাকায় তারা আরেক সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে ১২ জন নিহত হন। এই পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থলে সেনা মোতায়েন করে রাজ্য সরকার।
উত্তর প্রদেশ সরকারের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী আজম খান অভিযোগ করেছেন, শনিবারের সমাবেশে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখা হয়। রাজ্য বিধান সভার বিজেপি (ভারতীয় জনতা পার্টির) দলীয় চার সদস্য কৃষকদের ওই মহাপঞ্চয়েত সভায় উত্তেজনামূলক বক্তব্য দেন, এমন অভিযোগও উঠেছে।
কাওয়ালে গত মাসে ওই যুবকরা নিহত হওয়ার পর থেকে বড় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে রাজ্য সরকার। এ্রই কারণে মহাপঞ্চায়েত সভাটি আইনত অবৈধ ছিল। কিন্তু তারপরও নতুন সংঘর্ষে আরো ১৩ জন নিহত হন। দুদিনের দাঙ্গায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৬ জন নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে হিন্দু- মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের নেতারাই ওই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।