শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৯

তুরস্কে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫: জানাজায় লাশ কাঁধে এরদোগান

তুরস্কে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫: জানাজায় লাশ কাঁধে এরদোগান

শীর্ষবিন্দু আর্ন্তজাতিক নিউজ: তুরস্কে গত শুক্রবারের ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও এক হাজার ২৪৩ জন। ২৬ জানুয়ারি রবিবার রাজধানী আঙ্কারায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট  ফুয়াত ওকতাই। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি।

পশ্চিম তুরস্কের এলাজিগ প্রদেশে ভূমিকম্পে নিহত দুই ব্যক্তির জানাজার পর তাদের মরদেহ কাঁধে নিয়ে কবরে নিয়ে যেতে দেখা গেছে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানকে। শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে মৃত্যের সংখ্যা বেড়ে ২৯ জনে দাঁড়িয়েছে। ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে বেঁচে থাকা লোকজনকে উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দেশটির উদ্ধারকর্মীরা। -খবর এএফপির

ভূমিকম্পে রাজধানী আঙ্কারার সাড়ে ৫০০ কিলোমিটার পূর্বের প্রদেশটিতেই ১৩ জন নিহত হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রী ফারেতিন কোসা বলেন, এলাজিগের পার্শ্ববর্তী মালাতিয়া প্রদেশে প্রাণ গেছে আরও ৫ জনের। উদ্ধার অভিযান তদারকি করতে ফারেতিনের পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকজন মন্ত্রীও প্রদেশ দুটিতে ছুটে যান।

ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়া ৩০ জনের খোঁজে উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। ভূমিকম্পে পাঁচশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলিমান সোইলু জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম টিআরটিতে এলাজিগের আংশিক ধ্বসে পড়া একটি ভবনের ভেতর পুলিশ ও জরুরি বিভাগের কর্মীদের উদ্ধার অভিযান চালানোর ফুটেজ দেখানো হয়েছে।

ধ্বসে পড়া অন্য একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা খালি হাতেই ইট-সুরকি সরাচ্ছে। অন্যান্য এলাকায় ধ্বংসস্তূপ সরাতে জরুরি বিভাগের কর্মীদের ড্রিল মেশিনসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ব্যবহার করতে দেখা গেছে।

তুরস্কে এর আগেও বেশ কয়েকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছিল। ১৯৯৯ সালের অগাস্টে পশ্চিমাঞ্চলীয় ইজমিত শহরে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার এক ভূমিকম্পে ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন। ২০১১ সালে পূর্বাঞ্চলীয় শহর ভান ও এরসিসে অন্য এক ভূমিকম্প অন্তত ৫২৩ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল।

গত ২৪ জানুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যায় পূর্বাঞ্চলীয় ইলাজিগ প্রদেশে ১৫ সেকেন্ডের কম্পন অনুভূত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল দশমিক ৮। ভূমিকম্পের পর দফায় দফায় আফটার শক ঘটেছে। রিখটার স্কেলে এগুলোর মাত্রা ছিল দশমিক থেকে দশমিক পর্যন্ত। কম্পনটি প্রতিবেশী দেশ সিরিয়া জর্জিয়াতেও অনুভূত হয়

ইলাজিগে ইতোমধ্যে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সোইলু, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহরেতিন কচা এবং পরিবেশ নগরায়ন মন্ত্রী মুরাত কুরুম। সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তূপ থেকে ৩৯ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। পরে ভূমিকম্পের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিকদের বাড়ির ভাড়া বাবদ ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। এই কার্যক্রম তাৎক্ষণিকভাবে শুরু করেছে সরকার

উল্লেখ্য, আরব ইউরেশীয় প্লেটের ওপর অবস্থিত তুরস্ককে ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৯৯ সালের ১৭ আগস্ট ৩৭ সেকেন্ডের এক ভূমিকম্পে দেশটিতে ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। আহত হন আরও ৪৩ হাজারেরও বেশি মানুষ। তুরস্কের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় মারমারা অঞ্চলে কম্পনটি আঘাত হেনেছিল। এর তিন মাসের মাথায় ১৯৯৯ সালের ১২ নভেম্বর ডিজসে প্রদেশে মাত্রার আরেকটি কম্পন আঘাত হানে। এতে ৮৪৫ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন আরও প্রায় হাজার মানুষ

শুক্রবার সন্ধ্যায় ছয় দশমিক আট মাত্রার ভূমিকম্পটি হয়েছে। এলাজিগের লেকের পাশের ছোট্ট শহর সিভরিসেই এই ভূকম্পের উৎসস্থল। প্রতিবেশী দেশগুলোতে এই কম্পন অনুভূত হয়েছে।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024