শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ০৬:২৮

বিপর্যয়ের মধ্যেই এগুচ্ছে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প

বিপর্যয়ের মধ্যেই এগুচ্ছে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প

শীর্ষবিন্দু নিউজ: সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর বেশ বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হয়েছিল বাংলাদেশের পোশাকশিল্পে। এরইমধ্যে চলতি অর্থবছরেও রপ্তানি আয় বেড়েছে ৫ শতাংশ। লন্ডন থেকে প্রকাশিত বিখ্যাত সাময়িকী ‘ইকোনমিস্ট’-এর এক প্রতিবেদনে এই মন্তব্য করা হয়েছে।

ইতিহাসের অন্যতম বড় এই ভবনধসের ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন অন্তত এক হাজার ১০০ পোশাকশ্রমিক। মর্মান্তিক এই ট্রাজেডির পর বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক কেনার ব্যাপারে চাপের মুখে পড়তে হয়েছিল পশ্চিমের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও। বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে পোশাকশ্রমিকদের আন্দোলনের ঘটনাও এখানে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। আশ্চর্যজনক ব্যাপার এই যে এত সব সমস্যা-প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও বিকশিত হয়ে চলেছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের এই খাত।

ইকোনমিস্ট লিখেছে, রানা প্লাজার ভয়াবহ ভবনধসের পর বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নতুন করে পরিদর্শন-প্রক্রিয়া চালু করেছে কিছু পশ্চিমা ক্রেতা প্রতিষ্ঠান; যদিও তাতে রোধ করা যাচ্ছে না পোশাক কারখানার দুর্ঘটনা। চলতি মাসের শুরুতেই কারখানায় আগুন লাগায় প্রাণ হারাতে হয়েছে ১০ শ্রমিককে। কিন্তু তার পরও যে এই রপ্তানি খাত ক্রমেই ফুলেফেঁপে উঠছে, তার কারণ হয়তো পশ্চিমা ক্রেতাদের কাছে বাংলাদেশের বিকল্প কোনো কিছু আসলেই নেই। এশিয়ায় প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশেই পাওয়া যায় সবচেয়ে সস্তা শ্রম। পোশাকশ্রমিকেরা যে আট হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরির আন্দোলন করছেন, সেটা বাস্তবায়িত হলেও এই অবস্থা অপরিবর্তিতই থাকবে।

এই খাতে আরেকটি দিক দিয়েও বাংলাদেশ অন্য প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় এগিয়ে আছে। ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামের তুলনায় বাংলাদেশে তৈরি পোশাকশিল্পের পরিসরটা অনেক বড়। ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামে আছে আড়াই হাজার ও দুই হাজার কারখানা। সেখানে বাংলাদেশের আছে পাঁচ হাজার। এই সংখ্যা আগামী ২০ বছরে চার গুণ বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারও পালন করেছে একটা বড় ভূমিকা।

ইকোনমিস্ট আরও লিখেছে, সামগ্রিকভাবে তৈরি পোশাকশিল্পের এই খাত বিকশিত হলেও সম্প্রতি বেশ আকস্মিকভাবেই কমে গেছে দেশীয় পোশাক কারখানার মালিকদের মুনাফা। গত পাঁচ বছরে বিনিয়োগের তুলনায় মুনাফা অর্জনের পরিমাণ ৫০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ কমে গেছে বলে জানিয়েছেন আমেরিকান অর্থনীতিবিদ ফরেস্ট কুকসন। যার ফলে অনেক মালিকই কারখানা বিক্রি করে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির দাবি মেনে নিতে বাধ্য হলে হয়তো এই খাতে বিনিয়োগ আরও কমে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে। তখন শ্রমিকদের জন্য কারখানার নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার কাজটিতেও হয়তো আর মনোযোগী হবেন না কারখানার মালিকেরা।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025