মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১৬

রুবেলের হ্যাটট্রিকে জয় ছিনিয়ে নিল বাংলাদেশ

রুবেলের হ্যাটট্রিকে জয় ছিনিয়ে নিল বাংলাদেশ

গ্যালারী থেকে: নিজের প্রথম ওভারেই উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। তবে আসল জাদুটা রুবেল হোসেন দেখালেন বৃষ্টির পর। বৃষ্টির পর আক্রমণে আসতেই তৃতীয় বলে ফেরালেন হুমকি হয়ে ওঠা কোরে অ্যান্ডারসনকে। উপড়ে ফেললেন স্টাম্প। পরের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ বানালেন ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে। দাঁড়িয়ে গেলেন হ্যাটট্রিকের সামনে। ঠিক পরের বলে নিশামের গ্লাভস ছুঁয়ে বল চলে গেল উইকেটের পেছনে। ডানে দুর্দান্তভাবে ঝাঁপিয়ে ক্যাচটা লুফে নিলেন মুশফিকুর রহিম। হ্যাটট্রিক!

শাহাদাত হোসেন এবং আবদুর রাজ্জাকের পর তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডেতে হ্যাটট্রিক করলেন রুবেল। কিন্তু রুবেলের ক্ষুধা তখনো থামেনি। নিজের পরের দুই ওভারে পর পর ফেরালেন নাথান ম্যাককালাম আর নিউজিল্যান্ডের শেষ ভরসা হয়ে উইকেটে ৭১ রানে ব্যাট করতে থাকা গ্রান্ট এলিয়টকে। বৃষ্টির আগে এক উইকেট, বৃষ্টির পর নিলেন পাঁচটি। সব মিলিয়ে ২৬ রানে ৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডটায় ভাগ বসালেন। এর আগে মাশরাফি বিন মুর্তজাও ২৬ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন।

সেই মাশরাফি আজ রুবেলে শেষ দুটো উইকেটের ক্যাচ নিয়ে তাঁরই পাশে বসতে সাহায্য করলেন সতীর্থকে। বৃষ্টির পর বাংলাদেশের মুঠো থেকে বেরিয়ে যেতে বসেছিল যে ম্যাচটি, সেটাই দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে বাংলাদেশের পক্ষে ফিরিয়ে আনলেন রুবেল। ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ৪৩ রানে ম্যাচ জিতল বাংলাদেশ। হাতে চোট পাওয়ায় কেন উইলিয়ামসন ব্যাট করেননি। ৯ উইকেট পড়ে যাওয়াতেই হার মেনে নিল নিউজিল্যান্ড। না মেনে উপায়ও ছিল না। উইলিয়ামসন ব্যাট করলে বড়জোর রুবেলের উইকেট সংখ্যা সাতটি হতো, ম্যাচটা রুবেল শেষ করে দিয়েছিলেন আগেই।

অথচ রুবেল বল করার আগে সমীকরণ কী ভীষণভাবে হেলে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ডের দিকে! ৬০ বলে ৮৬ রান লাগত, হাতে ছিল সাত উইকেট। তখনই দৃশ্যপটে আবির্ভাব কদিন আগে ঢাকা প্রিমিয়ার প্রিমিয়ার লিগেও হ্যাটট্রিক করা রুবেলের। কিছুদিনের ব্যবধানে দুটো হ্যাটট্রিক। তবে এই হ্যাটট্রিকের সঙ্গে তার তুলনা চলে না।

বৃষ্টিটা এক রকম লাভই করে দিয়েছিল নিউজিল্যান্ডের। বৃষ্টির আগে কঠিন এক সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল কিউইরা। বৃষ্টির কারণে ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট খেলা বন্ধ থাকার পর নিউজিল্যান্ডের লক্ষ্যটা তুলনামুলক সহজ হয়ে গিয়েছিল। ৭৮ বলে আর ১২৪ করলেই সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যেত তারা। দলে ছিল টি-টোয়েন্টির মেজাজে ব্যাট করতে সক্ষম  একাধিক তারকা। কিন্তু তাঁরা ডানা মেলবার আগেই ডানা ছেঁটে দিয়েছেন রুবেল।

এর আগে ২৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশ উদ্ধার পেয়েছিল মুশফিকুর রহিম ও নাঈম ইসলামের ব্যাটে। দুজনই অবশ্য প্রাপ্য সেঞ্চুরিটা পাননি। মুশফিক ৯০ রানে আর নাঈম ৮৪ রানে আউট হয়েছেন। তবে দুজনের ১৫৪ রানের জুটিটাই ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিল বাংলাদেশকে। এক বল বাকি থাকতে অলআউট হওয়ার আগে বাংলাদেশ করেছিল ২৬৫। যেটি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর।

সেটিও ভেস্তে যেতে বসেছিল বৃষ্টির কারণে। বৃষ্টির পর নিউজিল্যান্ডের নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৩ ওভারে ২০৬। বৃষ্টির আগেই ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ৮২ তুলে ফেলায় নিউজিল্যান্ডকে শেষ ১৩ ওভারে তুলতে হতো ১২৪ রান। বৃষ্টির পরের তিন ওভারে ৩৮ রান তুলে নিউজিল্যান্ড জানিয়ে দিয়েছিল লক্ষ্যটা তাদের জন্য কিছুই না। কিন্তু তখনো তারা জানত না, তার চেয়েও বড় ঝড় মুঠোয় পুরে রেখেছেন বাগেরহাট-এক্সপ্রেস!




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025