মিশরের ক্ষমতাচ্যূত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির বিচার কার্য স্থগিত করা হয়েছে। আদালতে বিশৃঙ্গখা সৃষ্টি হওয়ার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেন কায়রোরর পুলিশ অ্যাকাডেমিতে স্থাপিত বিশেষ আদালত।
বিচার চলার সময় মুরসি বিচারকদের বলছিলেন, তিনি এখনো প্রেসিডেন্ট পদে বহাল রয়েছেন। তার এ বিচার আয়োজন অবৈধ। ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পর থেকে মুরসিকে একটি সেনাবহিনী নিয়ন্ত্রিত অজ্ঞাত স্থানে রাখা হয়েছিল। কিন্তু বিচারক তাকে কারাগারে নিয়ে যাওযার নির্দেশ দেন। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে কায়রোর উপকন্ঠে তোরা কারাগারে অথবা আলেজান্দ্রিয়ার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হবে।
দেশটির সেনা সমর্থিত রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, সোমবার বিকেলে এজলাস কক্ষে তোলা হলে মুরসিরসদ মুসলিম ব্রাদারহুডের অন্য নেতারা বিচারের বিরুদ্ধে চেচামেচি শুরু করলে এ সিদ্ধান্ত নেন আদালত। এ সময় এ বিচার অবৈধ ও সেনা অভূথান মানি না বলে স্লোগান দেন সাবেকে এই প্রেসিডেন্ট ও তার দলের নেতারা।
রাস্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, মুরসিকে সকাল ১০টার দিকেই অজ্ঞাত স্থান থেকে হেলিকপ্টার চড়িয়ে এনে কায়রোর পুলিশ অ্যাকাডেমির ভেতরে স্থাপিত একটি বিশেষ আদালতে হাজির করা হয়। তার সঙ্গে হাজির করা হয় ব্রাদারহুডের নেতা এসাম এল এরিয়ান, মোহাম্মদ এল বেলতাগি ও আহমেদ আবদেল আতাইসহ অন্য নেতাদেরও। সেনাবাহিনী সমর্থিত সরকার মুরসিকে বিচারের মুখোমুখি করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দেশজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে অন্তবর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়।
এর আগে সোমবার সকালে সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, বিকেল ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে শুরু হতে যাচ্ছে ক্ষমতাচ্যূত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির বিচার। সোমবার স্থগিত করা হলেও অন্তর্বতী সরকার বলছে, মুরসিসহ আরও ১৪ জন মুসলিম ব্রাদাহুড নেতা ২০১২ সালে রাস্ট্রপতি ভবনের সামনে বিরোধী দলের কর্মীদের হত্যা ও সহিংসতায় উস্কানির অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন।
এদিকে আদালতের সামনে ও কায়রোর বিভিন্ন জায়গায় বিচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে মুরসির সমর্থকরা। মুরসির বিচার কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে সহিংসতার আশংকায় পুরো মিশরজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা গহণ করেছে দেশটির সেনা সমর্থিত অন্তবর্তী সরকার। সরকারের অবস্থান ও ব্রাদারহুডের পাল্টা অবস্থান নিয়ে পুরো দেশটিতে উদ্ধেগ উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে।
রাজনীতি বিশ্লেষকরা উদ্ধেগ প্রকাশ করে বলেছেন, সোমবার স্থগিত হলেও পরবর্তীকালে শুরু হওয়া বিচারের মাধ্যমে সেনাবহিনী এ ধরনের কোন সিদ্ধান্ত নিলে আরব দেশটি আর গভীর সংকটে পড়বে।
সংবাদমাধ্যমগুলো আরো জানায়, মুরসির বিচার শুরুর একদিন আগেই পদত্যাগ করেছেন তিন বিচারপতি। ব্রাদাহুড নেতা মোহাম্মদ বদিই ও তার দুই উপদেষ্টা বিচার চলাকালে রোববার তিন বিচারপতি এই বিচারকার্যে বিব্রত বোধ করেছেন উল্লেখ করে পদত্যাগ করেন।