প্রায় তিন বাই তিন বাই তিন ইঞ্চি মাপের নানারঙের ধাঁধার একটি বাক্সটি তৈরি করেছিলেন হাঙ্গেরিয়ান উদ্ভাবক এর্নো রুবিক। ৫০ বছর আগে ‘আইকনিক’ রুবিক্স কিউব নামক একটি নতুন জিনিষ উদ্ভাবন করেছিলেন তিনি।
গত ৫০ বছরের এই সময়ে পৃথিবী আমূল পাল্টে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। জলবায়ু পরিবর্তন থেকে জনবিস্ফোরণ সব মিলিয়ে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে, মন্তব্য হাঙ্গেরিয়ান এই উদ্ভাবকের।
এরনো রুবিক বুদাপেস্টের শহরতলির বাড়িতে মন দিয়ে বাগান করতে ভালবাসেন। বাগানের যত্ন নিতে নিতে তিনি সংবাদসংস্থার প্রতিনিধিকে বলেন, প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশ্বে এত উন্নতি হয়েছে। তবে সবমিলিয়ে ভারসাম্যের বদল নেতিবাচক। শিক্ষাক্ষেত্র থেকে সবকিছুই বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে গিয়েছে। পৃথিবীর সঙ্গে সরাসরি সংযোগটাও জরুরি।
তার কথায়, কোনোকিছু ওলটপালট হয়ে গেলে প্রকৃতির এমন ব্যবস্থা রয়েছে যার ফলে ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করা যায়। তার অনুযোগ, আমরা এই ভারসাম্যকে মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত করেছি। সবচেয়ে বেদনাদায়ক হলো, নম্র, মিতব্যয়ী বা পরিশ্রমী হওয়ার মানে আমরা এখন আর জানি না।
রুবিকের সবচেয়ে বিখ্যাত সৃষ্টি এই রুবিক্স কিউব। মানুষের ফোকাস বা মনোসংযোগের কথা ভেবেই এটি তৈরি করেন তিনি। এর ফলে হাতেনাতে সমস্যা সমাধান করাটা আসলে কী, তা বোঝা সম্ভব।
তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মকে ব্যর্থতা সামলাতে শেখানোই হলো শিক্ষার আসল ভূমিকা। শুধু অর্থ নয়, আরো অনেক কিছু জীবনে বিনিয়োগ করা উচিত। যেমন: মনোযোগ, শক্তি এবং বৌদ্ধিক চেষ্টা। এর ফলে পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের ভুলের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার জন্য প্রস্তুতিটুকু অন্তত নিতে পারবে।
ডিজিটাল গেম এবং ডিভাইসের অতিরিক্ত ব্যবহার নিয়েও সতর্ক করেন রুবিক। শিশুদের ক্ষেত্রে এর ফলে বাস্তব জগতে নিজে নিজে কোনো কিছু শেখার সুযোগ কমে আসছে বলে মনে করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, এটি হাঙ্গেরির অন্যতম সেরা উদ্ভাবন বললে ভুল হবে না। শিশু থেকে বৃদ্ধ এই রুবিক্স কিউব সারা বিশ্বে সমাদৃত, জনপ্রিয়। এখনো পর্যন্ত সারা বিশ্বে কয়েক কোটি রুবিক্স কিউব বিক্রি হয়েছে। সেই কিউবের স্রষ্টার বয়স এখন আটাত্তর।
Leave a Reply