শীর্ষবিন্দু নিউজ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন পুনর্গর্ঠত সরকার সর্বদলীয়, নির্দলীয়, না অন্তর্বর্তীকালীন—তা বুঝতে পারছেন না বলে মন্তব্য করেছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। শুক্রবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা কথা বলেন।
তিনি বলেন, আজ এখন যা চলছে, তা নাটকীয় নির্বাচন। এর মধ্যে একজন নাটকীয় বিরোধী দলের ভূমিকায় রয়েছেন। সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা কোনো টাকাই না—অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের এ বক্তব্যের সমালোচনা করে কামাল হোসেন বলেন, এখনো তিনি মন্ত্রী হয়েছেন। আমি তো অবাক হই। স্বাস্থ্যের কারণে হলেও তাঁকে মুক্তি দেওয়া উচিত ছিল। বর্ধিত সভায় গণফোরামের চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক জানে আলম সর্বদলীয় সরকারকে অসাংবিধানিক বলে সরকারের এ পদক্ষেপের সমালোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবিধান বিশেষজ্ঞ। পরে এ বক্তব্যের উল্লেখ করে কামাল হোসেন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, আজ জানিয়ে দেন, দেশে একজনই আছেন, সংবিধান বিশেষজ্ঞ। তিনি যা বলেন, তাই সংবিধান। আমরা কেউ কিছু জানি না। বর্ধিত সভায় গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু লিখিত বক্তব্য পড়েন। সভায় তৃণমূলের নেতারা পাতানো নির্বাচনে না গিয়ে গণফোরামের নেতৃত্বে সমমনাদের একটি অর্থবহ জোট গঠন করার তাগিদ দেন।
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের দিকে ইঙ্গিত করে কামাল হোসেন বলেন, নব্বইয়ের স্বৈরাচারকে সরিয়ে সংসদীয় গণতন্ত্র আনা হলো। এর ধারাবাহিকতায় ২৩ দফার ভিত্তিতে আমরা ১৪ দল ঐক্য করলাম। ২০০৮ সাল পর্যন্ত এ ঐক্য ছিল। যখন এ মঞ্চে স্বৈরাচারকে তোলা হলো, সেদিন থেকে আমি থাকতে পারলাম না। নির্বাচন নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের তত্পরতার দিকে ইঙ্গিত করে ড. কামাল হোসেন বলেন, অনেকে বলেন, বিদেশি লোক কেন হস্তক্ষেপ করছে। বিদেশি লোক যদি আমার গণতন্ত্রের পক্ষে সমর্থন দেয়, তখন কার গায়ে লাগে? যারা গণতন্ত্রের অপব্যাখ্যা দিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে, তাদের।
তিনি বলেন, মানুষ চেয়েছে নির্দলীয় সরকার, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন। এ দাবি কোনো একক দলের নয়। ড. কামাল হোসেন নতুন মন্ত্রিসভায় শপথ নেওয়া ওয়ার্কার্স পাটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর নাম উল্লেখ করে নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের পক্ষ থেকে আমরা কি তাঁদের অভিনন্দন জানাতে পারি? সবাই এ সময় না না বলে উঠলে তিনি বলেন, তাহলে কী করার আছে?