মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সঙ্গে সম্প্রতি রাশিয়ার উত্তেজনা বেড়েছে। ফ্রান্সের কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দেশটির সংবাদমাধ্যম লে মন্ডে একটি প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে।
এমনকি রুশ প্রেসিডেন্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো যদি ইউক্রেনকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালাতে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেয়, তাহলে এর অর্থ হবে, ন্যাটো রাশিয়ার সঙ্গে ‘যুদ্ধে লিপ্ত’ হয়েছে। এই অবস্থায় ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ফ্রান্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে মস্কো এবং ন্যাটোর মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষের আশঙ্কা জোরালো হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার পশ্চিমা মিত্ররা কিয়েভকে রুশ ভখণ্ডে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন দেয়ার কথা বিবেচনা করছে।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে মস্কো। এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, এর ফলে পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটবে। এর অর্থ হবে যে, ন্যাটো জোট অর্থাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করছে।
ন্যাটো ও রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান এই উত্তেজনার মধ্যে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি ফরাসি সরকার। তবে ফ্রান্সের কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্যারিস সম্ভাব্য উত্তেজনা সম্পর্কে উদ্বিগ্ন এবং এটি এড়াতে চেষ্টা করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফরাসি একজন কূটনীতিক সংবাদমাধ্যম লে মন্ডেকে বলেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ এড়াতে আমাদের অবশ্যই যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ শীর্ষ রাশিয়ান কর্মকর্তাদের হুঁশিয়ারির বিষয়ে ফরাসি কর্মকর্তা আরও বলেন, রাশিয়া তাদের সামরিক অভিযানের মাত্রা বাড়াতে পারে এমন অনুমান কেউ খারিজ করতে পারে না।
রাশিয়ার ভূখণ্ডে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে ইউক্রেনকে এ পর্যন্ত অনুমতি দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। যুদ্ধের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় এমন অনুমতি দেয়নি দেশ দুটি।
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পশ্চিমা মিত্রদের কাছে বারবার এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের জন্য অনুমতি চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, এটি যুদ্ধ শেষ করার একমাত্র উপায়।
এর আগে যুক্তরাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল, আত্মরক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যের দেয়া অস্ত্র ব্যবহার করার ‘স্পষ্ট অধিকার’ ইউক্রেনের রয়েছে। এর অর্থ, সেসব অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ভেতরে হামলা চালানোর ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হবে না।
গত মাসে ইউক্রেনের বাহিনী আকস্মিকভাবে রুশ সীমান্তের অনেকটা ভেতরে ঢুকে গিয়ে অভিযান পরিচালনার পর এমনটা বলেছিল লন্ডন। তবে নিজেদের আন্তর্জাতিক সীমানার বাইরে পরিচালিত এসব অভিযানে দূরপাল্লার স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের কথা এখানে বলা হয়নি।
এ বছরের শুরুর দিকে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও পশ্চিমা মিত্ররা কিয়েভকে এসব ক্ষেপণাস্ত্র রুশ সীমান্তের ভেতরের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি।
Leave a Reply