মোহাম্মদ আলী শিপন:
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেষ কাটতে না কাটতেই শুরু হয়েছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রস্তুতি। ইতিমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে নির্বাচনের তফশীল। আগামী ১৯শে ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে এ নির্বাচন। নির্বাচনে প্রার্থী হতে প্রস্তুতি নিচ্চেন উপজেলার অনেকেই। ইতিমধ্যে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা শুরু করেছেন দৌড়ঝাপ। বিরোধীদল বিহীন সংসদ নির্বাচনে বিশ্বনাথে সাধারণ মানুষের মধ্যে কোন উৎসাহ উদ্দীপনা না থাকলে এবার উপজেলা নির্বাচন জমে উঠবে বলে অনেকেই ধারনা করছেন। নির্বাচনে আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জামায়াত থেকে প্রার্থী হবেন অনেকেই। এছাড়া প্রার্থী হতে প্রবাস থেকে দেশে আসছেন অনেক প্রবাসীও। তবে এখনও বলা মুশকিল কারা হচ্ছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী।
এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিশ্বনাথে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজম্মিল আলী, সাধারণ সম্পাদক বাবুল আখতার, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামীলীগ নেতা পংকি খান, বিশ্বনাথ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছয়ফুল হক, বিএনপি থেকে সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোজাহিদ আলী, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সুহেল আহমদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গৌছ খান, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী এইচ এম আখতার ফারুক, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সামছুল আলম ছরকুম, সাবেক দেওকলস ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা ফখরুল আহমদ মতছিন। প্রার্থীর সংখ্যা আরোও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত কারা এ নির্বাচনে অংশগ্রহন করেন তা দেখার বিষয়।
গত উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হন আওয়ামীলীগ নেতা মুহিবুর রহমান। তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ছিলেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি প্রার্থী হতে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তাই এবারের নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হবেন কি না তা এখনও বলা যাচ্ছে না। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। গত নিার্বচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদ পদপ্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া এবার দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসন থেকে তিনি এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া গত নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন তাদের মধ্যে অনেকেই এবার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তাদের মধ্যে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আওয়ামীলীগ নেতা এডভোকেট শাহ ফরিদ আহমদ, আছলম খান, প্রবাসী আয়ূব আলী রেজা, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিন চেয়ারম্যান ও বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শুভা আক্তার আঙ্গুরা এবারের নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়েছেন।
এদিকে, নির্বাচনের তফশীল ঘোষণার পরপরই চেয়ারম্যান প্রার্থীরা দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে যোগযোগ অব্যাহত রেখেছেন। এলাকার ভোটাদের কাছে তাদের প্রার্থীতা হওয়ার খবরও ছড়িয়ে দিচ্ছেন। উপজেলা সর্বত্রই এখন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। নির্বাচনে এক প্রার্থীকে সমর্থন দিতে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে সূত্রে জানা গেছে। প্রার্থী হতে আগ্রহী অনেকেই জানিয়েছেন তারা নিজ নিজ দলের সমর্থন পেলে নির্বাচনে অংশ নিবেন।
অপর দিকে উপজেলা বিএনপিতে কোন্দল থাকায় একক প্রার্থীকে সমর্থন করতে দলের উর্ধ্বতন নেতাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে সূত্রে জানা যায়। দুই এক দিনের মধ্যে বিএনপি’র কোন্দন নিরশনের জন্য নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদী লুনা ঢাকা থেকে বিশ্বনাথে আসার কথা রয়েছে বলেও সূত্রটি জানায়। বিএনপির অনেক নেতাকর্মী মনে করছেন দলীয় ভাবে একজন প্রার্থীকে সমর্থন দিলে উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এব্যাপারে উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী চেয়ারম্যান বলেন, দলীয়ভাবে উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী এইচ এম আখতার ফারুক কে সমর্থন করা হয়েছে।
উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক কবির হোসেন ধলা মিয়া চেয়ারম্যান বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিএনপি থেকে বেশ কয়েকজনে নাম শুনা যাচ্ছে। তবে দলীয় ভাবে একক প্রার্থীকে সমর্থন দিতে শীঘ্রই বৈঠকের আহ্বান করা হবে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজম্মিল আলী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, দলের অনেকেই এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী। তবে দলীয় ভাবে একজনকে সমর্থন দেওয়া হবে। তিনি বলেন, এনিয়ে আমরা দলীয় ভাবে শীঘ্রই বৈঠকে বসবো।