শীর্ষবিন্দু নিউজ: প্রতিক্ষার প্রহন শেষ করে মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে চালকবিহীন বিমানের (ড্রোন) সফল পরীক্ষা চালালেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থী।
আধুনিক ড্রোনের মতোই বাংলাদেশি এই চালকবিহীন বিমান যে কোনো সময়, যে কোনো স্থানে দ্রুততার সঙ্গে অভিযান চালাতে পারবে বলে দাবি এর উদ্ভাবকদের। বেলা সাড়ে ১২টায় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে দলনেতা সৈয়দ রেজুয়ানুল হক নাবিল নিজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাশে ওড়ান ড্রোনটি। প্রায় ১০ মিনিট সেটি আকাশে ঘুড়ে সফলভাবে মাটিতে অবতরণ করে। গত বছরের এপ্রিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিজ্ঞানী ড. জাফর ইকবাল নাবিলকে একটি ড্রোন বানানোর কথা বলেন। সেই থেকে শুরু হয় পরিকল্পনা। তার সঙ্গে যোগ দেয় একই বিভাগের রাহাত ও রবি।
নাবিল বলেন, ২০১৩-এর এপ্রিলের দিকে হঠাৎ করেই জাফর ইকবাল স্যার আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে বলেন, চলো নাবিল আমরা একটা ড্রোন ওড়াই। ওখান থেকেই আসলে শুরু। রেজুয়ানুল হক নাবিল বলেন, প্রতিদিন আমরা অনেক কষ্ঠে এয়ারক্রাফট বানাতাম। মাঠে এসে উড়ানোর পর তিন-চার টুকরা হয়ে ফিরে যেতো। অনেক আবেগপ্রবণ, এটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।
এ বিষয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিজ্ঞানী ড. জাফর ইকবাল বলেন, অনেক চেষ্টা করতে হয়েছে। অনেকবার অকৃতকার্য হয়েছে। অনেকবার ক্র্যাশ করেছে। শেষ পর্যন্ত তারা একটা ডিজাইন করতে পেরেছে, যেটি নাকি আকাশে উড়ে। মূলত সেনাবাহিনীর জন্যই ড্রোনটি বানাচ্ছে শাবির শিক্ষার্থীরা। তবে অন্য কাজেও এটি ব্যবহার করা যাবে। খুবই কম শব্দে চলা ড্রোনটি যে কোনো জায়গায় গিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি তুলে বা হামলা করে চলে আসতে পারবে।
রেজুয়ানুল বলেন, যে মডেলগুলো আমরা বানাচ্ছি, এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এগুলোর কোনো রানওয়ে লাগে না, ল্যান্ডিংয়ের জন্য কোনো রানওয়ে লাগে না। শুধু হাত দিয়ে থ্রো করলেই হবে। খুব দ্রুত গিয়ে ওই জায়গায় তথ্যগুলো সংগ্রহ করে ফেলবে। শত্রুপক্ষ যদি সেটা ধ্বংসও করে ফেলে, সে অলরেডি কিন্তু তথ্যগুলো পাঠিয়ে দিয়েছে। এটা যদি তারা খুলে ফেলে বা হ্যাক করে ফেলে, তাহলে ওটার ভেতরে তারা এ ধরনের কোনো তথ্য পাবে না। যারা আক্রমণ করবে তারা তাদের প্রয়োজনীয় সব তথ্য পেয়ে যাবে। আমরা সেখানে ইমেজ প্রসেসর লাগাবো, যার ফলে সে শত্রু পক্ষ, মিত্রপক্ষ চিহ্নিত করতে পারবে। ড্রোন বানানোর কাজের সহায়তায় এখনও কেউ এগিয়ে না আসায় ব্যয়বহুল এই প্রকল্পের সম্পূর্ণ অর্থ জোগান দিচ্ছেন ড. জাফর ইকবাল।