খুররম জামান: সৌদি আরবে বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে নতুন এক বিড়ম্বনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি সরকার প্রদত্ত মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের প্রায় প্রতিটি পৃষ্ঠায় বাংলাদেশে ঐতিহ্যবাহী চিত্র ছাপানো হচ্ছে।
এ ধরনের ছবি সম্বলিত পাসপোর্টে সৌদি আরব সরকার ভিসা দিতে চাচ্ছে না বলে জেদ্দা ও রিয়াদে বসবাসরত কিছু সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি বাংলানিউজকে ফোন করে জানিয়েছেন। তারা বলছেন, নতুন এ সমস্যার ব্যাপারে সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস কোনো সহযোগিতা করছে না।
এ সম্পর্কে সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলাম জানান, এ ধরনের অভিযোগ একেবারে ভিত্তিহীন। তবে তিনি স্বীকার করেন, কিছু কিছু স্থানে নতুন পাসপোর্ট নিয়ে কিছু সমস্য দেখা দিলেও এখন তা কেটে যাচ্ছে। সৌদি কর্তৃপক্ষকে নতুন পাসপোর্টের ব্যাপারে আমরা অবহিত করছি। কারণ তারা পুরাতন পাসপোর্ট দেখেই অভ্যস্থ। এখন আস্তে আস্তে সমস্য কেটে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলাম বলেন, তবে পাসপোর্টের চিত্র নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে তা অপ্রোয়জনীয়। সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ এধরনের কোনো বিষয় সামনে নিয়ে আসে নি। এটি অপপ্রচার। সৌদি আরব-প্রবাসীদের এ ধরনের অপপ্রচার থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে এহেন অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তাও বাংলানিউজকে জানান, এ ধরনের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। তার দাবি, কিছু সরকারবিরোধী লোক ফেসবুকে এ ধরনের প্রচারণা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশি পাসপোর্ট নয় বিশ্বের প্রায় সকল দেশের পাসপোর্টে তাদের দেশের ঐতিহ্য চিত্ত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়। আর বাংলাদেশিরাই শুধু সৌদি আরব যায় এমন ধারণা করারও তো কোনো কারণ নেই।
সম্প্রতি সরকার প্রদত্ত পাসপোর্ট বইটিতে ৪৮ টি পৃষ্ঠার মধ্যে ৪২ পৃষ্ঠাজুড়ে রয়েছে বিভিন্ন চিত্র। বাংলাদেশের জাতীয় স্মৃতিসৌধ দেখতে পবেন প্রথম পাতা খুললেই। তবে মলাটে রয়েছে জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে। এটি আগের দেওয়া পাসপোর্টেও ছিল।
বর্তমান পাসপোর্টের ২ ও ৩ পৃষ্ঠায় পার্সপোর্টধারীর নাম, ছবি, পরিচয় আছে।
৪ ও ৫ পৃষ্ঠায় পাহাড়পুর বিহার, ৬ ও ৭ পৃষ্ঠায় পানাম নগর, সোনারগাঁও, ৮ ও ৯ পৃষ্ঠায় ষাট গম্বুজ মসজিদ, ১০ ও ১১ পৃষ্ঠায় লালবাগ কেল্লা, ১২ ও ১৩ পৃষ্ঠায় কান্তজীর মন্দির, ১৪ ও ১৫ পৃষ্ঠায় আহসান মঞ্জিল, ১৬ ও ১৭ পৃষ্ঠায় কার্জন হল, ১৮ ও ১৯ পৃষ্ঠায় শহীদ মিনার, ২০ ও ২১ পৃষ্ঠায় সুপ্রিম কোর্ট, ২২ ও ২৩ পৃষ্ঠায় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, ২৪ ও ২৫ পৃষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার, ২৬ ও ২৭ পৃষ্ঠায় মুজিব নগর স্মৃতিসৌধ, ২৮ ও ২৯ পৃষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু সেতু, ৩০ ও ৩১ পৃষ্ঠায় চট্টগ্রাম বন্দর, ৩২ ও ৩৩ পৃষ্ঠায় চা বাগান, ৩৪ ও ৩৫ পৃষ্ঠায় সোনালী আঁশ পাট, ৩৬ ও ৩৭ পৃষ্ঠায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, ৩৮ ও ৩৯ পৃষ্ঠায় সুন্দরবন, ৪০ ও ৪১ পৃষ্ঠায় শিল্পচার্য জয়নুল আবেদিনের শিল্পকর্ম এবং ৪৪ও ৪৩ পৃষ্ঠায় মহাস্থানগড়ের জলছাপ রয়েছে। মলাটের ভেতরে শেষ পৃষ্ঠায় রয়েছে জাতীয় সংসদ ভবনের চিত্র।