তাজ হাশমি: আয়মান আল-জাওয়াহিরির কণ্ঠস্বর ও তার ভারী মিশরীয় উচ্চরণের (আরবের সনাতনি ভাষার বদলে তিনি মিশরীয় আরবি ব্যবহার করতেই পছন্দ করেন) সঙ্গে পরিচিত একজন হিসাবে আমি নিশ্চিত, ‘বাংলাদেশ: আ ম্যাসাকার বিহাইন্ড এ ওয়াল অব সাইলেন্স’ শিরোনামে গত ১৪ জানুয়ারি প্রকাশিত পডকাস্টটি তারই। প্রথম প্রকাশিত হওয়ার এক মাস পর গত ১৪ ফেব্রয়ারি ওই পডকাস্ট বাংলাদেশের গণমাধ্যমে আলোচনায় এসেছে।
হাওয়াইয়ের মিলিটারি কলেজ এশিয়া প্যাসিফিক সেন্টার ফর সিকিউরিটি স্টাডিজের সিকিউরিটি স্টাডিজ বিভাগে চার বছর (২০০৭-১১) অধ্যাপনা করার সময় আল কায়েদা ও বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের নেতাদের অডিও/ভিডিও পডকাস্ট নিয়ে কাজ করার সুবাদে আয়মান আল-জাওয়াহিরির কণ্ঠ, উচ্চারণ ও তার বাচনভঙ্গির সঙ্গে আমি খুবই পরিচিত। আমার এক মিশরীয় সহকর্মীও (তিন বছর আগে তিনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছেন ) ওই পডকাস্ট শুনে কণ্ঠটি আল-জাওয়াহিরির বলে সনাক্ত করেছেন।
কেউ কেউ ওই অডিওর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেও জামায়াতপন্থি এক তরুণকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে নির্দিষ্ট কিছু ব্লগে ওই পডকাস্ট ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে। ওই পডকাস্টের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর রাজনৈতিকভাবে অতিমাত্রায় বিভক্ত ও অতিসক্রিয় বাংলাদেশিরা এ নিয়ে উচ্চকিত হয়ে উঠেছে।
ওই পডকাস্টে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে পশ্চিমা ক্রুসেডার এবং বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর ঝড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছেন আয়মান আল-জাওয়াহিরি। বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলো যখন ওই পডকাস্ট তৈরি ও ছড়িয়ে দেয়ার জন্য পরস্পরকে দায়ী করছে, গণমাধ্যমগুলো তখন ওই পডকাস্ট নিয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ও অসমর্থিত তথ্যের ভিত্তিতে গালগল্প প্রকাশ করছে।
সব ধারণা ও অনুমান ঠেলে ফেলে কোনো কোনো বিশ্লেষক আবার নতুন তত্ত্ব হাজির করছেন। ওই অডিওর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে তারা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন; গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে বাংলাদেশেরই কোনো রাজনৈতিক দল ওই অডিও বানিয়ে ছড়াচ্ছে কিনা- সে প্রশ্নও তুলেছেন।
আমি যতোদূর বুঝতে পারছি, ওই পডকাস্টের কণ্ঠ আয়মান আল-জাওয়াহিরিরই।
তাজ হাশমি, যুক্তরষ্ট্রের টেনিসিতে অস্টিন পি স্টেইট ইউনিভার্সিটিতে সিকিউরিটি স্টাডিজের অধ্যাপক।
সূত্র: বিডিনিউজ২৪