শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: বন্ড সুবিধায় পণ্য আমদানি করে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন এক শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ আমদানিকারক। কাস্টমস ও বন্ড কমিশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেই তারা এমন রাজস্ব ফাঁকির মচ্ছবে মেতেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি বন্ড সুবিধায় আমদানি করা ডুপলেক্স বোর্ড (পেপার) এর এমনই একটি চালান আটক করেছে বেনাপোল কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা অফিস। তারা জানিয়েছে, এসকে ইন্ডাস্ট্রিজ এই পণ্যের আমদানিকারক। দেশের বৃহত্তম ও এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই স্থলবন্দরের শুল্ক অফিস আরো জানিয়েছে, পণ্যটি ছাড় করানোর দায়িত্বে রয়েছে বেনাপোলের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ড প্রভাতি ইন্টারন্যাশনাল। গত ১৯ মে ভারত থেকে আমদানি করা ২ হাজার ৯শ’ ৬৯ প্যাকেজ ডুপলেক্স বোর্ড (পেপার) বর্তমানে বেনাপোল বন্দরের ১ নম্বর পণ্যাগারে রয়েছে। বেনাপোল কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তা ওমর ফারুক রোববার দুপুরে বাংলানিউজকে জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এসকে ইন্ডাস্ট্রিজের পণ্য চালানটি নজরদারিতে রেখে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হচ্ছে।
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, বেশি পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের জন্য সরকার শিল্প কারখানার মালিকদের বন্ডের মাধ্যমে (শুল্কমুক্ত) সুবিধায় পণ্য আমদানির সুযোগ দিয়ে থাকে। তবে শর্ত থাকে, পণ্য আমদানির পর তা বন্দর থেকে খালাস করে আমদানিকারকরা নিজেদের গোডাউনে রাখবেন। পরে বন্ড কমিশনের অনুমতি সাপেক্ষে গোডাউন থেকে পণ্য নিয়ে কারখানায় উৎপাদন কাজে ব্যবহার করবেন। পরবর্তীতে উৎপাদিত পণ্য শুধু দেশের বাইরে রপ্তানির কাজে ব্যবহার করবেন। কোনভাবেই এই পণ্য দেশের খোলা বাজারে বিক্রি করা যাবে না।
কিন্তু কিছু ব্যবসায়ী এই শর্ত ভঙ্গ করে ডুপলেক্স বোর্ড আমদানির পর বন্ড কমিশনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে খোলা বাজারে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, বন্ড দুর্নীতিতে বড় হাত রয়েছে বন্ড কমিশন কর্তৃপক্ষের। একজন আমদানিকারকের কি পরিমাণ ডুপলেক্স বোর্ড ব্যবহারের চাহিদা রয়েছে তা খোঁজ নিয়ে তাকে সে পরিমাণ বন্ড সুবিধায় আমদানির সুযোগ দেওয়ার কথা। কিন্তু অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে বন্ড কমিশন চাহিদার চেয়ে বেশি পরিমাণে বোর্ড আমদানির অনুমতি দিচ্ছে ব্যবসায়ীদের। ফলে অনায়াসে বন্ড জালিয়াতের মাধ্যমে আমদানিকারকরা হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা।
১শ’২০ থেকে ৩শ’ জি এস এম ঘনত্বের ডুপলেক্স বোর্ড আমদানির ক্ষেত্রে সরকারকে শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। আর ৩শ’ জিএসএম থেকে শুরু করে উপরের ঘনত্বের কাগজ গুলি আমদানির ক্ষেত্রে কেবল আমদানিকারকরা বন্ড সুবিধা পাবেন। তবে যাদের বন্ড লাইসেন্স আছে কেবল তারাই বন্ড সুবিধায় ডুবলেক্স বোর্ড আমদানির সুযোগ পাবেন। আর এখানেই অবারিত দুর্নীতির সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।