শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: ইথিওপিয়ান নাগরিক গৃহকর্মী হিসাবে রিয়াদে নিয়োজিত ছিলেন তাঁকে পা উপরে বেঁধে পিঠে বেত্রাঘাত করা হয়। মধ্যপ্রাচ্যে যারা গৃহকর্মী হিসাবে নিয়োজিত থাকেন তারা কোন কারণে ছুটি পাননা । মালিকের হুকুম পালন না করলে তাদের শাস্তি ভোগ করতে হয়। এইসব শাস্তির ভেতরে আছে ধর্ষন, বেত্রাঘাত, চামড়া ছিলে বেত্রাঘাত বা পা সিলিং এ বেঁধে বেত্রাঘাত বা গলা কেটে ফেলা।
আবুধাবী এমবেসীতে একজন গৃহকর্মী একটি খামের ভেতরে ফোনে ভিডিও টেপ করা এই নির্মম ঘটনা রেখে যায়। সময় মত কফি না আনার জন্য গরম পানি দিয়ে ঝলসে দেওয়া হয় এই ফিলিপিনো নাগরিক গৃহকর্মীকে।
ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক গৃহকর্মী হিসাবে মদিনাতে আসেন জুলাই মাসে। নভেম্বরে হাসপাতালে ভর্তি হয় শরীরের নানা জাগাতে পোড়া জখম নিয়ে । এই গৃহকর্মীকে নির্যাতন করা হচ্ছিল কাজ শুরু করার দিন থেকে। এই নির্যাতনে জড়িত ছিল পরিবারের তিন জন।
নিপীড়িত ইন্দোনেশিয়ান গৃহকর্মী তার মালিককে হত্যা করার ফলে তাঁকে জবাই করে শাস্তি দেওয়া হয়। যারা গৃহকর্মীদের উপরে নির্যাতন করে তাদের কোন শাস্তি নাই। ইথিওপিয়ান গৃহকর্মীকে পুলিশ উদ্ধার করে তার মালিকের কাছ থেকে ইথিওপিয়ান নাগরিক গৃহকর্মী হিসাবে কাজ করছিলেন সৌদী আরবে। নির্যাতন্ সহ্য না করতে পেরে আত্মহত্যা করে।
যারা এই সব ছবি দেখছেন তারা নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন সৌদী আরবে বা মধ্যপ্রাচ্যের কোথাও গৃহকর্মী হিসাবে কাজ করতে যাওয়া নিরাপদ নয়। বাংলাদেশও নিরাপদ নয়। তবে যদি হিংস্র পশুর হাতে মৃত্যুবরন করতে হয় তাহলে এত কস্ট করে এত আশা নিয়ে সৌদী আরব বা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যেয়ে নির্যাতিত হয়ে মরার কোন দরকার আছে বলে মনে করিনা। না খেয়ে মরা অনেক কস্টের। নির্যাতিত হয়ে মরা আরো কস্টের। বিল্ডিং এর নীচে চাপা পড়ে মরা অনেক অনেক কস্টের। দেশী পশুদের খাদ্য হয়ে মরলেও কোন লাভ নেই।
তবে আশা ভঙ্গের বেদনা থাকেনা। আমরা সবাই একদিন মরে যাবো কিন্তু আমরা কি চাইব যে কেউ আমাদের উপরে গরম পানি ঢেলে আমাদের চামড়া ছিলে বেত্রাঘাত করুক বা সিলিঙ্গে পা বেঁধে বেত্রাঘাত করুক? বাংলাদেশেও সৌদী আরবের মত অনেক হিংস্র পশু আছে যারা গৃহকর্মীদের উপরে নির্যাতন করে। সাড়া বাংলাদেশে অনেক হিংস্র পশু আছে। তবে পাশবিকতার শিকার হবার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে যাবার আগে এই ছবিগুলো যদি দেখানো যেতো তাহলে হয়তো সিদ্ধান্ত নেবার আগে শ্রমিকেরা ভেবে দেখতেন। যারা এই লেখা পড়ছেন যদি সম্ভব হয় এই খবর পৌছে দিন তাদের কাছে যারা কোনদিন এই খবরগুলো পড়বেনা
এই ঘটনাগুলো জানবেনা আর না জেনেই এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হিসাবে একই দুর্ঘটনার শিকার হবে। ৪০ বছর আগে শেখ মুজিবের আইন বিষয়ক উপদেস্টা ডঃ কামাল হোসেনের পরিবারের একজন সদস্যা একজন গৃহকর্মীকে নির্যাতন করে হত্যা করে। সৌদী আরবে গৃহকর্মী হত্যার ঘটনাগুলোর মত এই ঘটনাও কেউ জানেনা।
সৌদী আরব মুসলমানদের জন্য পবিত্র জাগা। এই পবিত্র জাগাতে এইসব অপবিত্র কর্মকান্ড চলছে অবিরত। সেকারনেই আল্লাহ্ এই এলাকাতেই যুগে যুগে নবী প্রেরণ করেন। মানুষকে সুদ্ধ করার জন্য। আল্লাহ্ শয়তানকে স্বাধীন করে দিয়েছেন। পবিত্র জাগাতে যে সবাই পবিত্র মানুষ সেটা ভাবা উচিৎ নয়। শয়তান সব খানেই আছে। তবে সৌদী আরবে শয়তানদের চাষ করা হয়। সৌদী নাগরিক যদি বিদেশী দরিদ্র কারু উপরে জুলুম করে তাহলে সে কোন রকমের শাস্তি ভোগ করেনা।
বিত্তহীন মানুষেরা এই শয়তানের খপ্পড়ে পড়ে নির্যাতিত হয়ে জীবন হারাচ্ছেন। মার্কিন যুক্তরাস্ট্র থেকে বা যুক্তরাজ্য থেকে বা কানাডা থেকে কেউ সৌদী আরবের গৃহকর্মী হিসাবে কাজে যোগ দেননা। যদি দিতেন আর যদি এভাবে মৃত্যুবরণ করতেন তাহলে সৌদী বাদশাদের বাসার উপরে বোমা ফেলা হতো। কোন ইহুদী নারীকে এইভাবে নির্যাতন করার সাহস হবেনা সৌদী পশুদের।
বাংলাদেশ যেহেতু এতিম দেশ – অর্থাৎ বাংলাদেশের কোন মাবাপ নাই – অর্থাৎ বাংলাদেশে যারা স্বঘোষিত সরকার তারা ভারতের দালাল। তাই বাংলাদেশীদের বৈদেশিক মুদ্রাই এই সরকারের দরকার। বৈদেশিক মুদ্রা কিভাবে অর্জিত হচ্ছে সেটা এই সরকারের দেখার বিষয় নয়। এই সরকারের নিয়োগ হয়েছে ভারতের সেবার জন্য । সরকার মন প্রান লাগিয়ে ভারতের সেবাতে নিয়োজিত আছে। এই সরকারকে জনগন নির্বাচিত করেনি তাই জনগণের সেবা করার দায় দায়িত্ব এই সরকারের নয় ।
জনগনকে নিজেদের জীবনের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেদের নিতে হবে। যেমন বাংলাদেশের দরিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী মানুষদের নিজেদের জীবনের নিরাপত্তার কথা নিজেদের চিন্তা করতে হবে। অন্যান্য মানুষ যারা মধ্যপ্রাচ্য থেকে নানাভাবে লাঞ্ছিত হয়ে ফিরে এসেছেন তাদের সাথেও কথা বলে দেখতে পারেন এবং অভিজ্ঞতা আদান প্রদানের মাধ্যমে সাবধান হতে পারেন।