শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: মঙ্গলবার ব্রাসেলসে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় কে কত বেশি মুসলিমবিরোধী, এর প্রতিযোগিতায় নেমেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও টেড ক্রুজ। আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের শীর্ষ দুজন মনোনয়নপ্রত্যাশী তাঁরা। ডোনাল্ড ট্রাম্প সন্ত্রাসের অভিযোগে আটক যেকোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে কথা আদায়ে অবৈধ ওয়াটার বোর্ডিং প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে, টেড ক্রুজ মুসলিম-অধ্যুষিত এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও সব ধরনের মুসলিম উদ্বাস্তুর আগমন নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।
ট্রাম্প এর আগেও ‘ওয়াটার বোর্ডিং’-এর প্রস্তাব করেছিলেন। মার্কিন সেনা কর্মকর্তাদের আপত্তির মুখে সে প্রস্তাব পরে তিনি নিজেই বাতিল করেন। ২০০৯ সালে প্রেসিডেন্ট ওবামা ক্ষমতা গ্রহণের এক দিন পর ‘অত্যাচার’ হিসেবে বিবেচিত জিজ্ঞাসাবাদের এই পদ্ধতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।
ব্রাসেলসে সন্ত্রাসী হামলার পর এনবিসি টিভির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘আমেরিকায় সন্ত্রাসীদের আগমন ঠেকানোর একমাত্র উপায় হলো তাদের এ দেশে ঢুকতে না দেওয়া। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে আমি নির্ভুল কাগজপত্র ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে এ দেশে প্রবেশ করার অনুমতি দেব না।’ সন্ত্রাসীদের ঠেকাতে ওয়াটার বোর্ডিংয়ে তাঁর কোনো আপত্তি নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ট্রাম্পের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সিনেটর ক্রুজ বলেন, সীমান্ত এলাকায় শুধু কড়াকড়ি করলেই হবে না, আল-কায়েদা ও আইএস রয়েছে এমন দেশ থেকে সব উদ্বাস্তু আগমনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। এই ব্যবস্থা অবিলম্বে নিতে হবে। মুসলিম সংখ্যাধিক্য আছে। এমন এলাকায় পুলিশি নজরদারি বৃদ্ধির প্রস্তাব করে তিনি বলেন, সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলা ঠেকাতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে সব রকম ক্ষমতা দিতে হবে।
এই দুই রিপাবলিকান প্রার্থীর তুলনায় ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স অনেক সতর্কতার সঙ্গে তাঁদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। বেলজিয়ামের নাগরিকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে হিলারি বলেন, এই আক্রমণ সন্ত্রাস নির্মূল করার ব্যাপারে আমাদের সংকল্প আরও দৃঢ়তর করবে। তিনি সন্ত্রাসী হামলাকে ব্যবহার করে ভীতি ছড়ানোর বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানান। অন্যদিকে বার্নি বলেছেন, এই হামলা আবার প্রমাণ করে সন্ত্রাসবাদকে নির্মূলের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের এই অবস্থানকে বিপজ্জনক হিসেবে অভিহিত করেছেন আমেরিকান ইসলামিক রিলেশন্স কাউন্সিল। এই সংস্থার নির্বাহী পরিচালক নিহাদ আওয়াদ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, প্রত্যেকের উচিত এই জাতীয় মুসলিমবিরোধী প্রস্তাবের বিরোধিতা করা। কারণ, এসব প্রস্তাব মার্কিন মূল্যবোধের পরিপন্থী।