আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: বিশ্বের অনেক দেশেই সপ্তাহে ছুটি মাত্র একদিন, অনেক দেশেই ছুটি সপ্তাহে দুই দিন। এর বেশি সাপ্তাহিক ছুটির নজির নেই। কিন্তু ভেনিজুয়েলাতে এবারে সপ্তাহের পাঁচ দিনই ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে!
কেবল সোমবার ও মঙ্গলবার কাজ করতে হবে দেশটির সরকারি চাকরিজীবীদের। দেশটিতে চলমান বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট মোকাবিলার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে ভেনিজুয়েলা সরকার।
বিবিসির খবরে বলা হয়, দেশটির ভাইস-প্রেসিডেন্ট অ্যারিস্টোবুলো ইসতুরিজ রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে এই ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে জরুরি কোনো কাজ ছাড়া শনি ও রোববারের মতো বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবারেও সরকারি অফিসে কোনো কার্যক্রম চলবে না। সংকট উত্তরণ হওয়ার আগ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলে জানান তিনি।
এ বছরে তীব্র খরায় আক্রান্ত হয় ভেনিজুয়েলা। ফলে দেশটির প্রধান জলবিদ্যুৎ বাঁধে পানির উচ্চতা আচমকা কমে গেছে। এতে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমে গেছে। এর সঙ্গে জ্বালানি সংকট যোগ হওয়ায় দেশটির অর্থনীতি হুমকির মুখে রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি অফিসে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সাশ্রয়ের জন্য এর আগেই এপ্রিল ও মে মাসের জন্য শনি ও রোববারের পাশাপাশি শুক্রবারেও সরকারি অফিসগুলোতে ছুটি ঘোষণা করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো।
ওই সময়ে তিনি বলেন, এল নিনোর প্রভাবেই এমন পরিস্থিতির মুখে পড়েছে ভেনিজুয়েলা এবং বৃষ্টি শুরু হলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে আশাবাদ জানান তিনি। আন্তর্জাতিক সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। ভেনিজুয়েলা সরকারের পক্ষে যতটা সম্ভব চেষ্টা করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন মাদুরো।
এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে শপিং সেন্টারগুলোর কর্মঘণ্টাও কমিয়ে আনার নির্দেশনা দেয়া হয়। নিজেদের বিদ্যুৎ নিজেদেরই উৎপাদনেরও পরামর্শ দেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। গত সপ্তাহে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য ঘড়ির কাটা এগিয়ে আনার পরিকল্পনার কথাও জানানো হয়েছে। প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে দেশব্যাপী লোডশেডিংয়ের ঘোষণাও দিয়েছে ভেনিজুয়েলা সরকার।
কিন্তু তাতে পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হচ্ছে না। সরকারের পক্ষ থেকে এই পরিস্থিতির জন্য এল নিনো ও পরিবেশগত পরিবর্তনকে দায়ী করা হলেও অনেক ব্যবসায়ী ও বিরোধীদলীয় রাজনীতিকরা বলছেন, সরকারের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার কারণেই এই পরিস্থিতির উদয় হয়েছে।