গ্যালারী থেকে ডেস্ক: আইপিএল জয় করে রাতে দেশে ফিরছেন মুস্তাফিজুর রহমান। এই খবরে সোমবার (৩০ মে) সারাদিনই ক্রীড়া সাংবাদিকদের মধ্যে বাড়তি উদ্দীপনা বিরাজ করছিল। দিনের সব অ্যাসাইনমেন্টের চেয়েও রাতে মুস্তাফিজের ফেরাই যেন এদিন সবার কাছে সবচেয়ে বড় অ্যাসাইনমেন্ট হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
কখন আসবেন সেই বীর? যাকে নিয়ে লিখতে লিখতে তারা গেল একমাস হাঁপিয়েই উঠেছিলেন।
মুস্তাফিজের আসার কথা রাত সাড়ে ৯টায়। কিন্তু এদিন বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জের বাইরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকেই ভিড় করতে শুরু করেন গণমাধ্যম কর্মীরা।
এভাবে অপেক্ষা করতে করতে হঠাৎই জানা গেল, রাত সাড়ে ৯টার বদলে মুস্তাফিজের ফ্লাইট অবতরণ করবে রাত সাড়ে ১০টায়।
ক্রীড়া প্রতিবেদক থেকে শুরু করে ফটো সাংবাদিক, সবাই সারাদিন কাজ করেছেন, কিন্তু তারপরও কারও অবয়বেই যেন ক্লান্তির ছাপ নেই, নেই কোনো বিরক্তির লেশ।
আইপিএলে মুস্তাফিজের কীর্তি লিখে লিখে এতদিন যারা গণমাধ্যমে প্রচার করেছেন, আজ সেই কাটার স্পেশালিস্টের মুখ থেকেই শুনবেন নিজের প্রথম আইপিএলের গল্প, তাইতো এমন অপেক্ষা।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ দিয়ে মুস্তাফিজ বের হবার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত চললো শুধু তারই বন্দনা। ভিআইপি লাউঞ্জের বাইরের বেরসিক মশা, গরম তাপমাত্রা ও ঠাঁয় দাড়িয়ে থাকা, কোনো কিছুই যেনো এদিন এক মুহূর্তের জন্য আলোচনার প্রসঙ্গ থেকে মুস্তাফিজকে সরিয়ে দিতে পারেনি।
এভাবে অপেক্ষা ও আলোচনার পর অবশেষে রাত সাড়ে ১০টায় ভিআইপি লাউঞ্জের অভ্যর্থনা কক্ষে দেখা মিললো মুস্তাফিজের। মাথায় গোলাপের মুকুট, গলায় ফুলের মালা আর গোলাপ ও রজনীগন্ধা সমেত হাজারো ফুলের সুসজ্জিত ডালা হাতে বীর বেশে প্রবেশ করলেন এই টাইগার পেস ওয়ান্ডার।
বিমানবন্দরে মুস্তাফিজকে বরণ করে নিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এসেছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সিইও নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজন।
মুস্তাফিজ অভ্যর্থনা কক্ষের সোফায় এসে বসতেই জ্বলে উঠলো আলোকচিত্রীদের ক্যামেরা। একের পর এক ক্লিক ক্লিক শব্দ আর ক্যামেরার ফ্ল্যাশে যেন জ্বলে জ্বলে উঠছিল বিমানবন্দরের অভ্যর্থনা কক্ষ।
গণমাধ্যম কর্মীদের উপচেপড়া ভিড়ের সামনে নিজেকে সামলে বসলেন তিনি। আর বসেই এমন বীরোচিত অভ্যর্থনার জন্য গণমাধ্যমের সামনে প্রথমেই ধন্যবাদ জানালেন প্রধানমন্ত্রীকে। আর জানালেন নিজের আইপিএল গাঁথা, ‘প্রথমেই আমি ধন্যবাদ জানাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমাকে এরকম অভ্যর্থনার জন্য। জীবনের প্রথম আইপিএল। দেশবাসীর দোয়ায় শুরুটা যেমন ভালো ছিল, শেষটাও ছিল তেমনি ভালো।’
দেশে ফেরার পর আর তর সইছে না। সেজন্য মঙ্গলবার (৩১ মে) গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায় মা-বাবার কাছে যাবেন তিনি।