 
								
								
                            
                       
পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে নিজেদের প্রস্তুতি ও আধুনিক অবকাঠামো দিয়ে বিশ্বকে বারবার চমকে দিচ্ছে সৌদি আরব। তারই অংশ হিসেবে রাজধানী রিয়াদে চালু হয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম ড্রাইভারবিহীন মেট্রো—‘রিয়াদ মেট্রো’।
গত বছরের ডিসেম্বরে চালু হওয়া এই স্বয়ংক্রিয় দ্রুতগামী রেলব্যবস্থা এখন শুধুই যাতায়াতের মাধ্যম নয়, বরং পর্যটকদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা।
১৭৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মেট্রো নেটওয়ার্ক ছয়টি লাইনে বিস্তৃত এবং ২২ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত। ৮৫টি স্টেশনের মধ্যে চারটি বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে পর্যটকদের জন্য—কাসর আল হোকম, কেএএফডি, এসটিসি ও ওয়েস্টার্ন স্টেশন।
রিয়াদের ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রে অবস্থিত কাসর আল হোকম স্টেশনটি নরওয়েজিয়ান আর্কিটেকচার ফার্মের নকশায় নির্মিত। এটি সাততলা বিশিষ্ট এবং ৪০ মিটার গভীরে বিস্তৃত।
এখানে রয়েছে ইনডোর গার্ডেন, শিল্পকর্ম, দোকানপাটসহ আধুনিক নানা সুবিধা। কেএএফডি স্টেশনে রয়েছে মার্কিন শিল্পী আলেকজান্ডার ক্যালডারের ভাস্কর্য। এসটিসি স্টেশনটি সৌদির টুয়াইক পাহাড়ের চুনাপাথরের অনুপ্রেরণায় তৈরি, আর ওয়েস্টার্ন স্টেশনটি চালু হয়েছে আল সুইদি এলাকায়।
মেট্রোতে রয়েছে শক্তি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি, রিজেনারেটিভ ব্রেকিং সিস্টেম ও সৌর প্যানেল। ভাড়া অত্যন্ত সাশ্রয়ী—দুই ঘণ্টার জন্য মাত্র চার সৌদি রিয়াল (প্রায় এক ডলার)। পুরুষ, পরিবার ও প্রথম শ্রেণির জন্য আলাদা কারেজ রাখা হয়েছে।
রিয়াদের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, মেট্রো শুধু যাতায়াত সহজ করছে না, বরং সামাজিক যোগাযোগও বাড়াচ্ছে। শহরের ভেতর বিভিন্ন স্তরের মানুষ একে অপরের সঙ্গে সহজে মিশতে পারছে।
রিয়াদ সিটি কমিশনের সিইও ইব্রাহিম বিন মুহাম্মেদ আল সুলতান বলেন, এই প্রজেক্ট শহরের চিত্র বদলে দিয়েছে। এটি অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত ও নগর উন্নয়নের সঙ্গেও যুক্ত।
চালুর ছয় মাসেই মেট্রো ব্যবহার করেছেন ১৮ মিলিয়নের বেশি যাত্রী। ভবিষ্যতে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হয়েছে। ফলে রিয়াদ মেট্রো শুধু একটি পরিবহন ব্যবস্থা নয়, বরং শহরের আধুনিকতার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
Leave a Reply