শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: আর ঠিক চার দিন পরেই ভারতে লোকসভা নির্বাচন শুরু হয়ে যাবে। চলবে চার সপ্তাহ ধরে। তার আগেই নির্বাচনী সমীক্ষায় যে চিত্র ফুটে উঠছে তাতে বিজেপি’র অগ্রযাত্রা বহাল থাকলেও ভোট কমেছে অনেকটাই। অন্যদিকে কংগ্রেস অনেকটাই ঝড় সামাল দিয়ে শক্তি বাড়িয়েছে। বিজেপি’র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী মোদিকে নিয়ে যে ঝড় উঠেছিল তাও অনেকটাই কমে গিয়েছে। গত মাসে যেখানে ৫৭ শতাংশ মানুষ নরেন্দ্র মোদিকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চেয়েছেন এখন তা কমে এসেছে ৫৪ শতাংশে।
সম্প্রতি সবক’টি জনমত সমীক্ষায় তেমনই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। সিএনএন-আইবিএন এবং এবিপি নিউজ ও নিয়েলসনের সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে। তাদের এই তৃতীয় সমীক্ষায় বলা হয়েছে, দিল্লিতে এবার পরিবর্তন নিশ্চিত। এই ধরনের জনমত সমীক্ষার নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে যদিও প্রশ্ন রয়েছে। সব সময় যে মিলে যায় তাও নয়। তবে সাম্প্রতিক এই সমীক্ষার মতে, বিজেপি একাই পেতে পারে ২০৯টি আসন। কেন্দ্রে এ যাবৎ বিজেপি’র সেরা ফল ১৯৯৯ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে ১৮০টি আসন প্রাপ্তি। সমীক্ষার এই পূর্বাভাস ঠিক হলে গত লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের প্রাপ্ত আসনও টপকে যাবে বিজেপি।
তবে মাত্র একমাস আগের দ্বিতীয় সমীক্ষার তুলনায় বিজেপি’র আসন ২১৭ থেকে ৮টি যেমন কমেছে তেমনি এনডিএ’র মোট আসনও তিনটি কমে হয়েছে ২৩৩। তবে এই সংখ্যাটি ৫৪৩ আসনবিশিষ্ট লোকসভার ম্যাজিক নম্বর ২৭২ থেকে অনেকটাই দূরে। তবে কংগ্রেস গত একমাসে বেশ খানিকটা শক্তি সঞ্চয় করেছে। সমীক্ষা অনুযায়ী, কংগ্রেস আসন সংখ্যা গত মাসের সমীক্ষার চেয়ে ১৮টি বাড়িয়ে ৯১টি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তেমনি বেড়েছে ইউপিএ’র আসনও। তাদের আসন সংখ্যা ৯২ থেকে বেড়ে হতে পারে ১১৯। আর ভোটের হিসেবে এনডিএ যেখানে পাবে বলে মনে করা হচ্ছে ৩২ শতাংশ ভোট সেখানে কংগ্রেস পাবে ২৬ শতাংশ ভোট।
তবে এবারের সরকার গঠনে আঞ্চলিক দলগুলোর নির্ণায়ক ভূমিকা থাকবে বলে সমীক্ষায় বলা হলেও নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই আঞ্চলিক দলগুলোর ভোট কমছে বলে সমীক্ষায় ধরা পড়েছে। গত জানুয়ারিতে প্রথম সমীক্ষায় বলা হয়েছিল, বিজেপি, কংগ্রেস, বাম, তৃণমূল বাদে অন্য দলগুলো মোট ১৬০টি আসন পেতে পারে। গত মাসে সেই সংখ্যা কমে হয় ১৫৭। এবার তা আরও বেশ খানিকটা কমে হয়েছে ১৪০।
সমীক্ষার মতে, তৃণমূল কংগ্রেস ২৮টি আসন পেয়ে ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম দল হবে। তবে এই ২৮টি আসনের সবক’টিই তারা পাবে পশ্চিমবঙ্গ থেকে। অন্য ১৮টি রাজ্যে ১০৯ জন প্রার্থী দিলেও তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে একটি আসন আসারও সম্ভাবনা নেই বলে জানানো হয়েছে। বামপন্থিরা গত সমীক্ষায় ২৯টি আসন পাবে বলে অনুমান করা হলেও এখন বলা হয়েছে বামপন্থিরা ২৩টি আসন পাবে। দক্ষিণে জয়ললিতার এআইডিএমকে ২১টি আসন পাবে, সেখানে ডিএমকে পাবে ১০টি আসন। অন্যদিকে উত্তর ভারতে বহুজন সমাজ পার্টি ১৮টি এবং সমাজবাদী পাটিরও ভাগ্যে জুটতে পারে ১৮ ও ১২টি আসন।
তবে ওড়িশায় বিজু জনতা দল ১৭টি আসন পেয়ে জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাবশালী দলে পরিণত হতে পারে। অবশ্য রাহুল গান্ধীর মতো কংগ্রেস নেতা মনে করেন, বিজেপি যে গ্যাস বেলুন ফোলাচ্ছে, ফলাফল প্রকাশ হলেই তা ফেটে যাবে। বিজেপি নেতারা অবশ্য ভোট কমাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। তাদের মতে, দু’একটি আসন কমা-বাড়াটা কোন ব্যাপার নয়। গোটা দেশে সামগ্রিক ভাবে যে মোদি হাওয়া বইছে, সমীক্ষার ফল থেকেই সেটা স্পষ্ট। বিজেপি’র আশা, এনডিএ ২৩৩টি আসন পেয়ে গেলে সরকার গড়তে মাত্র ৩৯ জন সংসদ সদস্যের সমর্থন জোটাতে বেশি কাঠখড় পোড়াতে হবে না নরেন্দ্র মোদিকে।