বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:২৪

সাজানো নির্বাচনেও যেভাবে পরাজয় ঘটে

সাজানো নির্বাচনেও যেভাবে পরাজয় ঘটে

শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষেগত মাসে যখন সতর্কবাণীটি পড়ি, তখন বিশ্বাস করিনি। বরং মনে হয়েছিল পাশ্চাত্যের বিশেষজ্ঞদের বিরুদ্ধে তৃতীয় বিশ্বের রাজনীতিকদের অযথা সন্দেহ করার যে অভিযোগ ওঠে, এই সতর্কবাণীও বোধ হয় সে রকমই কিছু। সংঘাত প্রতিকার বা নিরসনের উদ্দেশ্যে তৎপর বেসরকারি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের গত ৯ ডিসেম্বরের প্রকাশনায় শ্রীলঙ্কার নির্বাচন সম্পর্কে ওই হুঁশিয়ারিটি দেওয়া হয়েছিল।

নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে কী কী করছেন এবং করতে পারেন, তার একটা বিবরণ তুলে ধরে আইসিজে বলেছিল যে বিরোধী প্রার্থী সিরিসেনা বিজয়ী হলেও ক্ষমতার পালাবদল ঘটবে, এমনটি না-ও হতে পারে। প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে ও তাঁর অন্য দুই ভাই ক্ষমতা ধরে রাখতে বিকল্প নানা ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারেন। এর মধ্যে একটি হচ্ছে রাজনৈতিকভাবে তাঁর অনুগত সুপ্রিম কোর্টকে দিয়ে নির্বাচনটি বাতিল করাতে পারেন অথবা শেষ উপায় হিসেবে সেনাবাহিনীকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা।

নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর এক দিন না পেরোতেই গত শনিবার সন্ধ্যায় কলম্বো মিরর খবর দিল যে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের এক মুখপাত্র রাজিথা সেনারত্নে জানিয়েছেন যে প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে ঠিক সেই চেষ্টাটাই করেছিলেন। ভোটে তিনি হেরে যাচ্ছেন এমন আলামত দেখে তিনি সেনাপ্রধান দয়া রত্নায়েকেকে প্রেসিডেন্ট ভবনে ডেকে আনেন। মুখপাত্রের ভাষ্য অনুযায়ী সেনাপ্রধান সেখানে উপস্থিত হয়ে দেখেন যে প্রধান বিচারপতি তাঁর আগেই সেখানে উপস্থিত হয়েছেন।

মুখপাত্র জানান যে প্রেসিডেন্ট তাঁর পরিবারের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সেনা মোতায়েনের কথা বললে সেনাপ্রধান তাতে রাজি হননি। ফলে নিরুপায় রাজাপক্ষে পরাজয় মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেন, যা তাঁর সমর্থকদের তো বটেই, এমনকি বিদেশি পর্যবেক্ষকদেরও বিস্মিত করে। পরদিন রোববার নতুন সরকারের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার মুখপাত্র মঙ্গলা সামারাভিরা জানান যে সাবেক প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষের অভ্যুত্থানচেষ্টার বিষয়ে তদন্ত করা হবে।

কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক জয়াদেভা ইয়ানগোদা লিখেছেন যে সুশাসনের জন্য শাসক বদলের প্রতিশ্রুতির কারণেই ভোটাররা সিরিসেনাকে বেছে নিয়েছেন। পারিবারিক শাসন ও তোষণকারীদের কর্তৃত্বের অবসান ঘটিয়ে সিরিসেনা গণতান্ত্রিক ও দুর্নীতিমুক্ত শাসনব্যবস্থা পুনর্জীবনের অঙ্গীকার করেছেন, যার মধ্যে ছিল আইনসভা ও আদালতের মতো মৌলিক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের স্বাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া (দ্য হিন্দু, ১০ জানুয়ারি, ২০১৫)।

সিরিসেনা ১০০ দিনের একটি সংস্কার কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন, যার কেন্দ্রে রয়েছে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা কমিয়ে পার্লামেন্টকে শক্তিশালী করা। কিন্তু এ রকম প্রতিশ্রুতি তো রাজনীতিকেরা সব সময়েই দিয়ে থাকেন। সিরিসেনার এসব প্রতিশ্রুতি ভোটারদের আকৃষ্ট করার কারণ কী? এর প্রধান কারণ মূলত রাজাপক্ষের কর্তৃত্বপরায়ণ শাসন ও ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার ধারাবাহিক চেষ্টা।

ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে অবশ্য পাশ্চাত্যের সঙ্গে রাজাপক্ষের দূরত্ব সৃষ্টি, চীনের ওপর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি এবং ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক শীতল হওয়ার বিষয়গুলোর পরোক্ষ প্রভাবের কথা বলেছেন। অনেকে বলেছেন যে যুদ্ধোত্তর দেশটিতে সংখ্যালঘুদের আস্থা অর্জনের কোনো কার্যকর উদ্যোগ না নিয়ে রাজাপক্ষে বরং তাদের আরও কোণঠাসা করে অসহায়ত্বের মুখে ঠেলে দিয়েছেন। ফলে অবিচারের বিচার না পাওয়ার ক্ষোভ সংখ্যালঘুদের বিরোধী প্রার্থীর পক্ষে আকৃষ্ট করেছে। ভোটের হিসাবেও তামিল, মুসলিম ও খ্রিষ্টানপ্রধান এলাকাগুলোয় সিরিসেনাকে এগিয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে।

তবে বিবিসির সাবেক কলম্বো সংবাদদাতা শ্রীলঙ্কা বিশেষজ্ঞ এবং স্টিল কাউন্টিং দ্য ডেড গ্রন্থের রচয়িতা ফ্রান্সিস হ্যারিসন ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় আমাকে বলেছেন যে গৃহযুদ্ধকালীন অবিচারের তদন্ত এবং বিচারের বিষয়ে নতুন সরকার বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রত্যাশা পূরণে এগিয়ে আসবে বলে তিনি মনে করেন না। তাঁর কথায় শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনী তখনকার সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের যে অভিযোগ জাতিসংঘ তদন্ত করছে, সেটা প্রেসিডেন্ট হিসেবে সিরিসেনার পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব হবে না।

কারণ, তিনি নিজেও তৎকালীন সরকারের অংশ ছিলেন। তামিল অঞ্চলের স্বায়ত্তশাসনের কোনো কথা তাঁর নির্বাচনী ঘোষণাতেও ছিল না। উপরন্তু, উগ্রপন্থী একটি সিংহলি জাতীয়তাবাদী দল তাঁর জোটের অংশীদার হওয়ায় মুসলিম জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ যেকোনো উদ্যোগ জোটের মধ্যেই বিরোধিতার মুখে পড়বে।

প্রায় তিন দশক ধরে চলা বিচ্ছিন্নতাবাদী তামিল বিদ্রোহ মোকাবিলায় রাজাপক্ষে যে কঠোর নীতি অনুসরণ করে সফল হয়েছিলেন, তা দেশটির সংখ্যালঘু সিংহলি জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে জাতীয়তাবাদী চেতনার উজ্জীবন ঘটায়, তাকে কাজে লাগিয়ে তিনি তাঁর নেতৃত্বকে আরও সংহত করতে সমর্থ হন। আর জনপ্রিয়তার সেই ঢেউয়ে ভেসে বিদ্রোহ দমনের সামরিক কৃতিত্ব ছিল যাঁর, সেই সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল ফনসেকাকে তিনি আগের নির্বাচনে সহজেই হারিয়ে দিতে সক্ষম হন। কিন্তু সেই নির্বাচনী সাফল্য তাঁকে ভিন্নমত সহ্য করার মতো উদার করেনি, বরং তিনি আরও কর্তৃত্ববাদী এবং ক্ষমতালিপ্সু হয়েছেন।

ক্ষমতা ধরে রাখার বাসনায় প্রেসিডেন্ট পদে দুবারের বেশি নির্বাচন করার বিধান না থাকলেও সংবিধান সংশোধন করে সেই বাধা অপসারণ করেছেন। আদালতের সঙ্গে ক্ষমতার দ্বন্দ্বের জের ধরে প্রধান বিচারপতিকে অপসারণ করেছেন। সুপ্রিম কোর্ট সেই অপসারণকে অবৈধ ঘোষণার পরও তিনি সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সফল হন এবং তাঁর পছন্দমতো সুপ্রিম কোর্টের পুনর্গঠন করেন। ক্ষমতাকে পরিবারের মধ্যে কুক্ষিগত রাখার ক্ষেত্রেও তিনি নতুন নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। দেশের মধ্যে দ্বিতীয় সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হয়ে ওঠেন তাঁর ভাই প্রতিরক্ষাসচিব গোটাবায়া রাজাপক্ষে। তাঁর ভাইদের মধ্যে একজন উন্নয়নমন্ত্রী ও আরেকজন স্পিকার। এত কিছুর পরও ক্ষমতার দম্ভে মত্ত মাহিন্দা রাজাপক্ষে রাজনৈতিক হিসাব কষে বিরোধীদের অনৈক্য ও দৈন্যদশার সুযোগ নিতে জ্যোতিষীর পরামর্শে মেয়াদের দুই বছর বাকি থাকতেই আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন।

রাষ্ট্রক্ষমতায় রাজাপক্ষের কর্তৃত্ব বা নিয়ন্ত্রণ এতটাই ব্যাপকভিত্তিক ও কঠোর রূপ নিয়েছিল যে দেশ-বিদেশে সবাই তাঁকে শ্রীলঙ্কার নতুন রাজা হিসেবে অভিহিত করতে শুরু করেছিলেন। তাঁর দল ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের তাঁর প্রতি আনুগত্য কোন পর্যায়ে পৌঁছেছিল, তার একটি ছোট উদাহরণ উল্লেখ না করলেই নয়। উদাহরণটি একটি সামান্য ছবি, কিন্তু তাতে রাজার কর্তৃত্বের চমকপ্রদ প্রতিফলন আছে। শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যমে বহুলভাবে প্রচারিত ওই ছবিতে দেখা যায় যে তাঁর এককালীন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মারভিন সিলভা আক্ষরিক অর্থেই প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষের চরণসেবা করছেন (কদমবুচি নয়)।

রাজা যাঁর প্রতি তুষ্ট থাকেন, তার তো কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয় এবং তিনি তো বেপরোয়া হতেই পারেন। বছর খানেক আগে তাই দেখা গেল জাতিসংঘের সাবেক মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার নাভি পিল্লাই শ্রীলঙ্কা সফরে গেলে ওই মন্ত্রী বিদেশি অতিথিকে উদ্দেশ করে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিলেন। এক জনসভায় তিনি বললেন যে তিনি মিস পিল্লাইকে বিয়ে করতে চান এটা শেখানোর জন্য যে সিংহলিরা হচ্ছে বীরের জাতি। গৃহযুদ্ধ দমনে মাত্রাতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ ও নৃশংসতার পটভূমিতে তাঁর সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ সম্পর্কে আলোচনাই ছিল মিস পিল্লাইয়ের সফরের উদ্দেশ্য।

যে নির্বাচনে রাজাপক্ষে রাজ্যহারা হলেন, সেই নির্বাচনও তিনি যে সুষ্ঠুভাবে হতে দিয়েছেন, তা নয়। স্বাভাবিক ভিন্নমত প্রকাশের সব পথ বন্ধ হতে থাকলে অস্বাভাবিক ও অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটে যাওয়া যে অসম্ভব নয়, আবারও তার প্রমাণ মেলে শ্রীলঙ্কায়। বাংলা বাগ্বিধি তোমারে বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সে বাস্তবে রূপ নেয়। নির্বাচনের দিন-তারিখ ঘোষিত হওয়ার পর তাঁরই স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাইথ্রিপালা সিরিসেনা বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। দলাদলিতে বিভক্ত বিরোধীদের সামনে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে সিরিসেনার আবির্ভাব রাজাপক্ষের ছক ওলট-পালট করে দেয়।

এরপর তিনি নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য কী কী করেছেন, তার এক বিশাল তালিকা প্রকাশ করেছে কমনওয়েলথের নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল সোমবার ১২ জানুয়ারি, ২০১৫। গণতন্ত্রের প্রসার ও লালনকাজে কমনওয়েলথের ব্যর্থতার তালিকা অনেক দীর্ঘ হলেও এ ক্ষেত্রে তাদের প্রশংসা না করে পারছি না।

কমনওয়েলথের পর্যবেক্ষক দল বলেছে, প্রচারণার সময় ক্ষমতাসীনের পক্ষে অসম প্রতিযোগিতা ছিল লক্ষণীয়, যাতে ব্যাপকভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার করা হয়েছে; রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যম পুরোপুরিভাবে বিরোধীদের বিরুদ্ধে পক্ষপাত করে এসেছে; প্রেসিডেন্টের প্রচারকাজে সেনাবাহিনী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবহার করা হয়েছে; সরকারি টাকা ও উপহারের লোভ দেখানো হয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পরিবহন ব্যাপকভাবে অপব্যবহার করা হয়েছে।

তারা আরও বলেছে, সহিংসতার সঙ্গে রাজনৈতিক দলের কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গিয়েছে, যার উদ্দেশ্য ছিল ভীতি ছড়ানো। নির্বাচনী আইনে প্রচার কার্যালয় ছাড়া অন্য কোনো প্রকাশ্য স্থান ও সরকারি স্থাপনায় পোস্টার-ফেস্টুন লাগানো নিষিদ্ধ হলেও সরকারি দল তা লঙ্ঘন করেছে, অন্যদিকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষগুলো বিরোধী প্রার্থীদের এ ধরনের প্রচারণার কোনো সুযোগই দেয়নি।

কমনওয়েলথের পর্যবেক্ষক দল আরও জানিয়েছে যে নির্বাচনের আগেই স্থানীয় পর্যবেক্ষক, সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে তারা যেসব উদ্বেগের কথা জেনেছিল, তার মধ্যে ছিল সেনাবাহিনী ও তামিলবিরোধী লড়াইয়ের সময় ব্যবহৃত বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের ভূমিকা নির্বাচনের জন্য সহায়ক না-ও হতে পারে। প্রতিষ্ঠিত নির্বাচন কমিশনের অনুপস্থিতি ও নির্বাচনী আইন প্রয়োগে কমিশনারের কোনো ক্ষমতা না থাকার বিষয়টিও ছিল আরেকটি চিন্তার বিষয়।

কমনওয়েলথ পর্যবেক্ষকেরা তাই নির্বাচনের আগে কিছু বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন। তাঁদের আশ্বাসও দেওয়া হয় যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকবে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে এবং পুলিশকে রাজনৈতিক ও সামরিক বাহিনীর প্রভাবমুক্ত রাখা হবে। নির্বাচন কমিশনারও আশ্বস্ত করেন যে নির্বাচনী আইন ভঙ্গ হলে তিনি সরাসরি সেখানে হস্তক্ষেপ করবেন এবং প্রয়োজনে আবার ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করবেন।

বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও (কোরামিন প্রয়োগে সাময়িকভাবে পুনর্জীবিত সামরিক স্বৈরাচারী এরশাদের) জাতীয় পার্টির ইতিহাস; ব্যক্তিপূজা ও পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি; নানা ধরনের হিসাব কষে ও সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন সাজানো; ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে প্রচারণায় রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার; রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যমে পক্ষপাত; পছন্দের নির্বাচন কমিশন গঠন এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে কলুষিত করা; এমনকি বিদেশিদের প্রতি কূটনীতিবিবর্জিত অশোভন আচরণে পাঠক কোনো মিল খুঁজে পেলেও পেতে পারেন।

উপসর্গের এসব মিল অবশ্য যতটা তাৎপর্যপূর্ণ, তার চেয়েও বেশি গুরুত্ববহ হচ্ছে সুশাসন ও গণতন্ত্রায়ণের জন্য আবশ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংকট বা অভাব। কেউ কেউ অবশ্য একটা রসাত্মক ব্যাখ্যাও দাঁড় করাতে পারেন যে বাংলাদেশে কোনো সিরিসেনা নেই। দুই নেত্রীর সভাসদেরা কেউ কেউ অতীতে চেষ্টা করে যে চরম শিক্ষা পেয়েছেন, তাতে অদূর ভবিষ্যতে আর কেউ কি সেই পথ মাড়াবেন? যদি না শ্রীলঙ্কার সিরিসেনা কাউকে সাহস জোগান!

কামাল আহমেদ: সাংবাদিক।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024