শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক ফেডারেল এভিয়েশন অথরিটির (এফএএ) মাণদণ্ডে ক্যাটাগরি-২ থেকে ক্যাটাগরি-১ এ উন্নীত হতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে বাংলাদেশকে। আর এ কারণে সরকারের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি থাকলেও ঢাকা-নিউ ইয়র্ক রুটে সহসা বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমানের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক কাইল হেইউড সাংবাদিকদের বলেন, নিউ ইয়র্কে ফ্লাইট চালুর বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এবং ফেডারেল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে এবছর পেরিয়ে যাবে।
শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বিমানের সরাসরি ফ্লাইট চালু হলেও তা লাভজনক হবে কিনা- সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে কাইল হেইউডের। তিনি বলেন, রুটটি চালুর জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত রয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীক দৃষ্টি থেকে দেখলে এটি বিমানের লোকসানের বোঝা বাড়াবে।
তিনি জানান, বর্তমানে বিমান বহরে ডজনখানেক উড়োজাহাজের মধ্যে লম্বা পথে চলাচলের উপযোগী বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ রয়েছে ছয়টি। এসব উড়োজাহাজ এখন মধ্যপ্রাচ্যে ফ্লাইট চালাতে ব্যবহার করা হয়, যেসব রুট বিমানের জন্য লাভজনক গন্তব্য হিসাবে বিবেচিত।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম সানাউল হক বলেন, আমরা এ বছরই এফএএ’র অডিট করার চেষ্টা করছি। এটা হয়ে গেলে বাংলাদেশের উড়োজাহাজ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে কোনো সমস্যা থাকবে না। আর এজন্য ২০১১ সালের এফএএ টেকনিক্যাল রিভিউ অনুসারে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ‘অর্গানোগ্রাম’ ও আইন সংশোধনের প্রস্তাব সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
সানাউল হক বলেন, সিভিল এভিয়েশন অর্ডিন্যান্স ১৯৬০ ও ১৯৮৫ কে যুগোপযোগী করা হয়েছে। ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড রেগুলেশনস-এর রিভিউ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করা যায় জুন-জুলাইয়ে নতুন এয়ার নেভিগেশন অর্ডারগুলো প্রকাশিত হবে।
১৯৯৬ সালে এফএএ এর নিষেধাজ্ঞার কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া নিউ ইয়র্ক রুটে পুনরায় ফ্লাইট চালু করতে ২০১৩ সালের ১৭ অগাস্ট যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকে সই করে বাংলাদেশ। ওই চুক্তিতে বাংলাদেশকে ‘ফিফথ ফ্রিডম’ দেয়া হয়। এভিয়েশনের পরিভাষায়, কোনো একটি নির্দিষ্ট দেশে ফ্লাইট পরিচালনা করার ক্ষেত্রে অন্য আরেকটি দেশে বিরতি নেওয়াকে ফিফথ ফ্রিডম বলে। ফিরতি পথেও অন্য কোনো দেশে বিরতি নিলে তাকে বলা হয় সিক্সথ ফ্রিডম।
তবে চুক্তি কার্যকর করতে হলে বাংলাদেশকে এফএএ’র ক্যাটাগরি-২ থেকে ক্যাটাগরি-১ এ উন্নীত হতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রে কোনো দেশ ফ্লাইট চালাতে চাইলে তাকে এফএএ এর ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পেতে হয়। সাধারণভাবে এতে নিরাপত্তার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। মূলত ওই ছাড়পত্রের জন্যই বাংলাদেশকে এতদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ক্যাটাগরি-১ এ উন্নীত হওয়ার জন্য গত ৮ মার্চ থেকে ৫ মে পর্যন্ত এফএএ’র অকলোহামা এভিয়েশন একাডেমিতে চারটি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেন বাংলাদেশের ১৩৬ জন পরিদর্শক। যে কোনো ধরনের আন্তর্জাতিক অডিটের ক্ষেত্রে বেসামরিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে আটটি ভাগে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক মানের পরিদর্শন, যুগোপযোগী আইন ও প্রযুক্তির ব্যবহার অন্যতম।