সরকারে হঠাৎ অস্থিরতা। নেপথ্যে শনিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেয়া একটি সিদ্ধান্ত। বিরোধী নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নির্বাচনমুখী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। একই সঙ্গে এখনই কঠোর আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে না পড়ে আন্দোলনের প্রস্তুতির ব্যাপারে একমত হন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। নিজস্ব দূত মারফত খুব দ্রুতই এ সিদ্ধান্তের কথা চলে যায় সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে। এরপর দেখা দেয় টেনশন।
বলাবলি আছে, সরকার চায় না বিএনপি নির্বাচনমুখী হোক। এমনকি দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনও। গতকাল দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির বিদেশী কূটনীতিকদের ব্রিফ করার কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়। খুব দ্রুত গণভবনে আহ্বান করা হয় জরুরি সংবাদ সম্মেলনের- যে সংবাদ সম্মেলনে দেশী পাটের জীবন রহস্য উন্মোচনের কথা সাংবাদিকদের অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সুখবর দেয়ার পাশাপাশি সরকারের উন্নয়নমূলক কাজেরও বিস্তারিত বিবরণ দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই যে প্রতিদিন দুই বার লোডশেডিং হচ্ছে তা-ও নিশ্চিত করেন। দেশের মানুষের সবচেয়ে বড় আশঙ্কা আর আকাঙক্ষা নিয়েও কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন তিনি সংবিধানের বাইরে এক চুলও নড়বেন না।
অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না। সরকার যা চেয়েছিল তাই আসে সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত ফখরুলের বক্তব্য থেকে এবং খুব দ্রুত। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপি এখন পর্যন্ত কোন সমঝোতায় পৌঁছতে না পারায় দশম সংসদ নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই গেছে। সমঝোতার কোন সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বরাবরই সংলাপের পক্ষে ছিলেন। সংলাপ নিয়ে প্রায়ই ইতিবাচক কথা বলতেন তিনি। তবে শীর্ষ নেতৃত্বের মনোভাব বুঝেই হয়তো তিনিও এখন বদলে গেছেন। সর্বশেষ তিনি বলেছেন, জাতীয় শোক দিবসে যারা ফুর্তি করে তাদের সঙ্গে কোন ধরনের সংলাপ হবে না।
যদিও এটাও সত্য, ১৫ই আগস্টের আগেও কোন সংলাপ হয়নি। সংলাপের কোন সম্ভাবনাও দেখা যায়নি। দৃশ্যত একদলীয় অথবা বিএনপিকে বাইরে রেখে বহুদলীয় নির্বাচনের দিকেই এগোচ্ছে সরকার। এ অবস্থায় বিএনপির একটি অংশ যে কোন পরিস্থিতিতে নির্বাচনে অংশ নেয়ার পক্ষে। অন্য অংশ, শেখ হাসিনার অধীনে যে কোন নির্বাচনে অংশ নেয়ারই বিপক্ষে। তবে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, কূটনৈতিক চাপে হলেও সরকার শেষ পর্যন্ত কোন এক ধরনের সমঝোতায় বাধ্য হবে। এ কারণে নির্বাচনের সর্বাত্মক প্রস্তুতির ব্যাপারে একমত হয়েছেন দলটির শীর্ষ নেতারা।
Leave a Reply